“তাদের বশংবদরা এখনো আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি জামাতের আশ্রয় প্রশ্রয় পাচ্ছে,” বলেন রেজাউল।
Published : 14 Dec 2023, 09:03 PM
পাঁচ দশকেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করতে না পারাকে ‘ক্ষমাহীন অপারগতা’ বলে বর্ণনা করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পাহাড়তলী ফয়’স লেক এলাকায় বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ও স্মরণানু্ষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাছির বলেন, “রাজারবাগে বধ্যভূমিতে যেসব শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মরদেহ পাওয়া গেছে এবং অপারেশন সার্চলাইট শুরুর পর ঢাকায় যে সকল বুদ্ধিজীবী শহীদ হয়েছেন, উনাদের একটি নামের তালিকা করা হলেও সমগ্র বাংলাদেশে যেসকল বুদ্ধিজীবী শহীদ হয়েছেন আজ পর্যন্ত তার একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হয়নি।
“আমাদের এই অপারগতা ক্ষমাহীন। এই কাজটি করতে পারলেই আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়মুক্ত হবো।”
নাছির বলেন, “পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পরাজয় নিশ্চিত হবে বলে জেনেই স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তাকে জ্ঞান ও মেধায় চিরতরে পঙ্গু করে দিতে বাঙালি সাহিত্যিক, লেখক, কবি, ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার পণ্ডিত-মনীষীদের হত্যা করার দায়িত্ব একটি বাহিনীর প্রধানদের দিয়েছিল এবং তারা তা বাস্তবায়ন করেছে।
“সেই ধিকৃত অপরাধী মতিউর রহমান নিজামী, আলী হাসান মুজাহিদী, মাওলানা মান্নান, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, কাদের মোল্লা, কামরুজ্জামান, মীর কাশেম আলীসহ যারা বুদ্ধিজীবী হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিল তাদেরকে জিয়াউর রহমান-এরশাদ-খালেদা জিয়া মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত বানিয়েছিলেন।”
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “যারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, তারা প্রকৃত অর্থে চরম মানবতাবিরোধী। তাদের বশংবদরা এখনো আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি জামাতের আশ্রয় প্রশ্রয় পাচ্ছে।
“তাই সামগ্রিকভাবেই জাতি বিপজ্জনক পরিস্থিতি ও পরিবেশের মধ্যদিয়ে একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রাণিত হয়ে চূড়ান্ত লড়াইয়ের শরিক হয়ে জাতিকে বিপদমুক্ত করতে হবে।”
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নজিরবিহীন গণহত্যা ও পোড়া মাটি নীতি গ্রহণ সত্ত্বেও স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় হয়েছে।
“মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ঊষালগ্নে হানাদার বাহিনী এদেশীয় এজেন্ট ও দোসর আলবদর ও আলশামস্ বাহিনীর পরিকল্পিতভাবে স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তাকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে জাতির মানবসম্পদ ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। পৃথিবীর দেশে দেশে বিভিন্ন জাতির মুক্তি সংগ্রামে সফল হলেও পরাজিত শক্তি এভাবেই বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার নজির নেই।”
এ সময় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, উপদেষ্টা সফর আলী ও শেখ মোহাম্ম ইসহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শফিকুল ইসলাম ফারুক, হাসান মাহমুদ শমসের, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজী মো. হোসেন।
সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি, সকালে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি সম্মানার্থে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।