পাঁচ দিন বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
Published : 20 Dec 2023, 02:31 PM
নিজের সংকটাপন্ন সন্তানকে হাসপাতালে রেখে অপেক্ষাকৃত সুস্থ একটি শিশুকে চুরি করে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন এক তরুণী মা, এক দিনের মাথায় ফেনী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের পুলিশ।
বুধবার ভোর রাতে ফেনীর পরশুরোমে এই অভিযানে নাসিমা আক্তার (২৩) এবং তার মা খারু আক্তারকে (৪২) গ্রেপ্তারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চুরি যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের এনআইসিইউ থেকে পাঁচ দিন বয়সী একটি শিশু চুরি হয়েছে বলে মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ করেন তার বাবা মো. নোমান।
পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ওই অভিযোগ পাওয়ার পর হাসপাতালের সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে পুলিশ। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহের পর বুধবার ভোর রাতে ফেনীর পরশুরামে অভিযান চালান তারা।
সেখানেই নাসিমাদের বাড়িতে শিশুটিকে পাওয়া যায়। পরে নাসিমা ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বিস্তারিত জানতে পারে পুলিশ।
ওসি বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর ছেলে-মেয়ে যমজ সন্তান প্রসব করেছিলেন নাসিমা। জন্মের পরপরই ছেলেটির মৃত্যু হয়, মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনআইসিইউতে।
“সে সন্তানটির অবস্থাও ছিল সংকটাপন্ন। সে কারণে মা-মেয়ে মিলে পরিকল্পনা করে অপেক্ষাকৃত সুস্থ শিশুটিকে নিয়ে তারা বাড়ি চলে যান।
পুলিশ জানায়, নাসিমার সংকটাপন্ন সন্তান ভর্তি ছিল এনআইসিইউ ওয়ার্ডের ৭৩ নম্বর বেডে। আর নোমানের শিশুটি ভর্তি ছিল ৩১ নম্বর বেডে। মঙ্গলবার সকালে নার্সদের দায়িত্বের পালা বদলের সময় নাসিমা ৩১ নম্বর বেডের শিশুটিকে কোলে করে নিয়ে চলে যান।
ওসি সন্তোষ চাকমা বলেন, শিশু চুরির অভিযোগ পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে তদন্ত করতে গিয়ে দেখতে পায়, হাসপাতালে ভর্তি থাকা সব শিশুর অভিভাবক পাওয়া গেলেও ৭৩ নম্বর বেডের শিশুটির কোনো অভিভাবক উপস্থিত নেই। ওই বেডের শিশুটির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে হাসপাতালে তার কোনো ফাইলপত্রও পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে দেওয়া অভিভাবকের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অপরপ্রান্ত থেকে সংযোগ কেটে দেওয়া হয়।
“হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দুই নারীকে দেখা গেলেও শিশু চুরির বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না। পাশাপাশি তারা যাবার সময় তাদের সংকটাপন্ন শিশুর ফাইলপত্র নিয়ে চলে যায়। পরে হাসপাতালে দেওয়া নম্বরের সূত্র ধরে ফেনীতে অভিযান চালানো হয়।”
নোমানের শিশুটিকে উদ্ধারের পর তাকে আবারও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান ওসি সন্তোষ।
পুরানো খবর: