“এটা এক ধরনের প্রণোদনা। এটা কিন্তু খুব বড় একটা আইনগত পদক্ষেপ,” বলেন তিনি।
Published : 09 Mar 2024, 09:33 PM
রিজার্ভ ও ডলারের মূল্যমান স্থিতিশীল করতে অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবার চট্টগ্রামে এসে সাংবাদিকদের নিয়ে বসেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, দেশের রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং খোলা বাজার ও ব্যাংকের দরে ডলারের দামের যে পার্থক্য তা নিরসনের কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে? প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা বাড়ানোর কোনো চিন্তা আছে কি না সেটিও জানতে চাওয়া হয়।
এর জবাবে নতুন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, “আমরা দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের শেষ দিনে একটা আইন পাস করেছি। অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট। অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট বিভিন্ন ব্যাংকে আগে থেকেই ছিল। আমি যেহেতু ১৭ বছর বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি সেখানে এ বিষয়গুলোর কাজ করার সুযোগ হয়েছে।
“অফশোর ব্যাংকিং এর আইন যেটা পাস হয়েছে সেখানে কিন্তু শুধুমাত্র কোম্পানি না ব্যক্তিরাও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে, এটা করা হয়েছে। এবং শুধুমাত্র কারেন্ট অ্যাকাউন্ট না, ডিপোজিট অ্যাকাউন্টও। সেখানে বৈদেশিক মুদ্রার ডিপোজিটে আকর্ষণীয় সুদ দেওয়া হবে। এটা করেই আইনটা পাস করা হয়েছে। কারণ আমাদের প্রবাসী ভাইবোনেরা বিভিন্ন দেশে কাজ করেন। বিদেশে কিন্তু ডিপোজিটের সুদ খুব কম।”
তিনি বলেন, “আমাদের রিজার্ভ এবং ডলারের মূল্যমান স্থিতিশীল করার জন্য অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট আইন কাজ করবে। এটা এক ধরনের প্রণোদনা। এটা কিন্তু খুব বড় একটা আইনগত পদক্ষেপ।
“বাজেট সংক্রান্ত আলাপ আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। আপনারা প্রণোদনা বাড়ানোর কথা অবশ্যই জানাব মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে।“
টাকা পাচার বন্ধ ও বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে জানতে চাইলে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “টাকা পাচারের যে কথাটা বললেন। আপনারা জাতির বিবেক। আপনারা সকলকে সচেতন করবেন হুণ্ডি দেশের জন্য কত ক্ষতিকর।
“যেটা পাচারের কথা বলছেন। সেটা কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টালিজেন্স ইউনিট) আছে। উনারা প্রায়শই এ আলাপগুলো করেন। বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক হচ্ছে। যেখানে টাকা থাকলে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। কারণ এসব বিষয়ে দুটি দেশের মধ্যে আইনগত অ্যাগ্রিমেন্ট হওয়ার পরই এটা সম্ভব। এই কাজগুলো চলমান। পাচারের বিরুদ্ধে বেশি করে কথা বলতে হবে।”
বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়ন বিস্ময় উল্লেখ করে ওয়াসিকা বলেন, “সুদক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এবারের ইশতেহারে ১১টি অগ্রাধিকার বিষয় ছিল। ইশতেহারের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো অনেক চিন্তাভাবনা করে আগানো হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের লক্ষ্যগুলো ইশতেহারের ভিত্তিতেই তৈরি করেন।
“প্রযুক্তি ও মেধা নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে কাজ চলছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির চলমান যে অবস্থা সেখানে চ্যালেঞ্জ আছে। কিন্তু বাংলাদেশ যখনই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়েছে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এগিয়েছে। কখন চ্যালেঞ্জ ছিল না? অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেল করেই আমরা কিন্তু ২০২৪ এর বাংলাদেশে পৌঁছেছি। অনেক রকম বাধা এসেছে। সেটা দেশের অভ্যন্তর থেকেও আন্তর্জাতিকভাবেও। সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের পথে নিয়ে যাচ্ছেন।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম।