“আদিবাসীদের বহিরাগত কিংবা মিয়ানমার, থাইল্যান্ড থেকে এসেছে বলে মিথ্যাচার করবেন না”, বলেন বিনিময় চাকমা।
Published : 17 Jan 2025, 07:21 PM
পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় চট্টগ্রামে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
শুক্রবার সকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিনিময় চাকমা বলেন, “স্মরণাতীতকাল থেকে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী এই ভূখণ্ডে বসবাস করছে। আদিবাসীদের বহিরাগত কিংবা মিয়ানমার, থাইল্যান্ড থেকে এসেছে বলে মিথ্যাচার করবেন না।
“এই দেশ একক কোনো ধর্মের, জাতির বা একক কোনো ভাষার দেশ নয়। সুতরাং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
সমাবেশে আদিবাসী শিক্ষার্থী রিপুল চাকমা বলেন, “যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, সেই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সংবিধানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সব জাতিগোষ্ঠীকে আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
“পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দ সম্বলিত যে জনপ্রিয় গ্রাফিতি বাদ দেয়া হয়েছে, তা পুনর্বহাল এবং পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দাবি জানাচ্ছি।”
সুনয় চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দীন ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সংসদের নেতা শুভ দেবনাথ।
নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিবাদে গত বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়। নিজ নিজ কর্মসূচি পালনে উভয়পক্ষ বুধবার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ শুর হয়। এ ঘটনায় ৩৩ জন আহত হয়েছেন বলে দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় আরিফ ও আব্বাস নামের দুইজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।