ফিলিস্তিনি সংগঠনটি ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘শত্রুতাপূর্ণ’ অভিহিত করে বলেছে, ট্রাম্পের এ মনোভাব মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি একটি হুমকি।
Published : 05 Feb 2025, 03:39 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজা থেকে বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে সরিয়ে ও ভূখণ্ডটি দখল করে সেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ‘উন্নয়নের’ যে প্রস্তাব দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
ফিলিস্তিনি সংগঠনটি ট্রাম্পের প্রস্তাবকে ‘শত্রুতাপূর্ণ’ অভিহিত করে বলেছে, ট্রাম্পের এ মনোভাব মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি একটি হুমকি।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে করা হোয়াইট হাউজে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তার এই আশ্চর্য পরিকল্পনা তুলে ধরেন; তবে এর সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা প্রস্তাব করেননি তিনি।
ট্রাম্প বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও পুনর্বাসিত করার পর যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ডের দখল নিয়ে সেটিকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করবে।
এর আগে একইদিন সকালে ট্রাম্প গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দিয়ে সবাইকে স্তম্ভিত করে দেন।
রয়টার্স লিখেছে, তার এই ঘোষণায় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলা সংঘাত নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ভঙ্গুর একটি যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব পালিত হচ্ছে। এই ছিটমহলকে ‘ধ্বংস হয়ে যাওয়া এলাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এসব মন্তব্যের প্রতিবাদে দেওয়া বিবৃতিতে হামাস বলেছে, “ফিলিস্তিনের জনগণ ও তাদের প্রতিরোধের দলগুলো কোনো বিদেশি শক্তিকে তাদের ভূমি দখল করতে বা তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে দেবে না।
হামাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এসব মন্তব্য নিয়ে আলোচনার জন্য আরব লীগ, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও জাতিসংঘকে জরুরি বৈঠক ডাকার এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সংগঠনটি ওয়াশিংটনকে আন্তর্জাতিক আইন ও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পরিপন্থি ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন বিবৃতি’ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জোরালো আহ্বান জানিয়েছে।
ট্রাম্পের মন্তব্য যুদ্ধবিরতি আলোচনায় কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, এমন প্রশ্নে হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, “আমরা চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা সফল করার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।”
হামাসের পাশাপাশি প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। পিএলও-র মহাসচিব হুসেইন শেখ বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের নিজভূমি থেকে উৎখাতের সব ধরনের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে পিএলও।
সামাজিক মাধ্যম এক্স এ পিএলও এর এই কর্মকর্তা বলেন, “ফিলিস্তিনের নেতৃবৃন্দ আন্তর্জাতিক আইন ও বৈধতা অনুযায়ী দ্বিরাষ্ট্রীক সমাধানকে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও শান্তির নিশ্চয়তা বলে মনে করে এবং এ বিষয়ে তাদের দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করছে।”
ফিলিস্তিনি জনগণের আনুষ্ঠানিক প্রতিনিধি হিসেবে পিএলও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া সংগঠন।
আরও পড়ুন:
গাজা ভূখণ্ডের দখল নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র, বলছেন ট্রাম্প
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নয়: সৌদি আরব