জেলা প্রশাসনের হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীতে ২৬টি পাহাড়ে প্রায় ৬৫৫৮টি পরিবার ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে।
Published : 25 Dec 2023, 07:03 PM
স্থানীয় ‘পাহাড় খেকোরা’ যতই শক্তিশালী হোক, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
সোমবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বায়োজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকাসহ নগরীর ২৬টি পাহাড়ে ও পাহাড়ের পাদদেশে দৃশ্যমান সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড স্থাপন কার্যক্রমের সূচনা করে তিনি এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
“সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাহাড়কাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এসব বিজ্ঞপ্তি দেখে অন্তত জনসাধারণ পাহাড় কাটার বিষয়ে সচেতন হবে। পাহাড়ে অবৈধ দখল ও কাটতে দেখলে তারা সরাসরি থানায়, পরিবেশ অদিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন। যারা পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসনের হিসেবে চট্টগ্রাম নগরীতে বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের মালিকানাধীন ১৬টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রায় ১০টি পাহাড়সহ সর্বমোট ২৬টি পাহাড়ে প্রায় ৬৫৫৮টি পরিবার অবৈধভাবে এবং ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে।
জেলা প্রশাসনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৮ অগাস্ট পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৭তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের ৭৬১৬/২১ রিট পিটিশন আদেশ অনুযায়ী পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুসারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “পাহাড় ধসের বিষয়ে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও সংবাদ ও টিভি চ্যানেল এর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন।
“ইতোমধ্যে পাহাড় কাটার দায়ে প্রায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং মনিটরিং ও নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় পাহাড় কাটা প্রতিরোধ করতে।”
এছাড়া সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা নিজ উদ্যোগে পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের যাতে সরিয়ে ফেলে সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. উমর ফারুক উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, “স্থানীয় প্রভাবশালী ও অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিরা যারা প্রভাব খাটিয়ে অনেক সময় পাহাড় কর্তন করে। তারা ওখানে স্থাপনা তৈরি করছে যেগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।”
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান নিজে উপস্থিত থেকে সোমবার পাহাড়ে সাইনবোর্ড স্থাপন করেন। তার সাথে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: