“আমরা এমন কোনো প্রকল্প চাই না, যেটি জনগণের বিপক্ষে যায়,” বলেন নূরুল ইসলাম সুজন।
Published : 04 Dec 2022, 06:34 PM
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম নগরীর ‘ফুসফুস’ খ্যাত সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের জনসভায় তিনি বলেছেন, “প্রথম দিকে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হলেও চট্টগ্রামের সকল পর্যায়ের নেতা ও মানুষ যেহেতু চায় না, তাই সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এখানে হাসপাতাল হবে না বলে আমাকে বলেছেন। সুতরাং সিআরবিতে হাসপাতাল হবে না। হাসপাতাল রেলের অন্য জায়গায় করতে হবে।”
রোববার বিকালে বন্দরনগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সুজন বক্তব্য রাখছিলেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, “আমরা এমন কোনো প্রকল্প চাই না, যেটি জনগণের বিপক্ষে যায়। চট্টগ্রামের মানুষ বলেছে, তারা সিআরবিতে হাসপাতাল চায় না। এটা চট্টগ্রামের ফুসফুস।”
পূর্ব রেলের সদর দপ্তর সিআরবিতে ইউনাইটেড গ্রুপের হাসপাতাল প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ৪৮৩ দিন ধরে চলা আন্দোলনের সমাপ্তি ঘোষণা করে ৬ নভেম্বর মহাসমাবেশ করেছিল আন্দোলনকারীরা। তারা জানিয়েছিলেন, সিআরবিতে যে হাসপাতাল হচ্ছে না, তা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। সেদিন মহাসমাবেশ থেকে সিআরবিতে বঙ্গমাতার নামে জাতীয় উদ্যান করার দাবি জানানো হয়েছিল।
এর প্রায় এক মাস পর প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থেকে রেলমন্ত্রী এই ঘোষণা দিলেন।
আগামী জুনে রেলে করে মানুষ কক্সবাজার যেতে পারবে– এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন লাইনের কাজ চলছে। আগামী জুনে কক্সবাজার যাবেন রেলে করে।”
চট্টগ্রাম নগরীর ‘ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ঐতিহ্যবাহী সিআরবিতে পিপিপি প্রকল্পের আওতায় ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ স্থাপনের জন্য ২০২০ সালের ১৮ মার্চ ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের সাথে চুক্তি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
গত বছরের জুলাই মাসে প্রকল্প এলাকার জমি হাসপাতাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়। টানা ১৫ মাস ধরে ‘নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম’ এর ব্যানারে সেই আন্দোলন চলে। এতে চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ, শিল্পী, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ যোগ দেয়।
হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করে চলমান আন্দোলনের মধ্যে বিকল্প স্থান নিয়ে চলতি বছরের মে মাসে আলোচনা হয় রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে।
পূর্ব রেলের সদর দপ্তর সিআরবির পরিবর্তে হাসপাতালটি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরায় রেলওয়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া যক্ষ্মা হাসপাতাল এলাকায় হতে পারে বলেও বৈঠকে মত আসে।
এরপর চলতি বছরের ১৬ অগাস্ট রেলমন্ত্রীকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে সিআরবিতে হাসপাতাল না করতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা।