“পান্না কায়সারের স্মৃতির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হলে তিনি যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে,” বলেন রত্না।
Published : 05 Dec 2023, 08:46 PM
লেখক, গবেষক, শিশু সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য শহীদজায়া পান্না কায়সারের স্মরণসভা হয়ে গেল চট্টগ্রামে।
মঙ্গলবার বিকালে নগরীর এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পান্না কায়সার ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের স্ত্রী। তিনি অভিনেত্রী শমী কায়সারের মা। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ছিলেন তিনি।
শিশু কিশোরদের সংগঠন খেলাঘরের সঙ্গে আজীবন সক্রিয় ছিলেন পান্না কায়সার। ১৯৭৩ সাল থেকে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য। আর ১৯৯০ সালে এ সংগঠনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসেন।
খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না সভায় বলেন, “অধ্যাপক পান্না কায়সার প্রগতিশীল বাংলাদেশ বির্নিমাণে, শিশুদের গড়ে তোলায় এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনে ভূমিকা রেখেছেন। আজ আমাদের সাংস্কৃতিক প্রভাব কতটা আছে সমাজে? সাংস্কৃতিক জাগরণ হয়েছিল বলেই মুক্তিযু্দ্ধের আগে রাজনৈতিক জাগরণ হয়েছিল।
“পান্না কায়সারের স্মৃতির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে হলে তিনি যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না বলেন, “সাম্প্রদায়িক শক্তি আবার বাংলাদেশের বুকে ছোবল দিতে চাইছে। তাই অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে জাগ্রত করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে। কারণ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হোঁচট খাচ্ছে।
“এ থেকে বাঁচতে হলে আগামীর সৈনিক চাই। নতুন প্রজন্মই সত্যিকারের যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্ক অসাম্প্রদায়িক মানুষ হবে। এজন্য শিক্ষা ও শান্তি যেন শিশুদের জীবনের প্রতিপাদ্য হয়।”
খেলাঘর চট্টগ্রাম নগর কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, “অত্যন্ত দুঃসময় আমরা আজ পার করছি। শিশুরা আজ সহিংসতার শিকার। নৃশংস পরিবেশে সমাজে বসবাস করছি। শিশু ভালো না থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে না। বিশ্ব ভালো থাকবে না। এমন সময়ে অধ্যাপক পান্না কায়সার আমাদের মাঝে নেই।
“তিনি যে নীল পতাকা আমাদের দিয়ে গেছেন, সেই পতাকা সাহসের সাথে সামনে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। আজ আমরা বিভেদ চাই না। ঐক্য চাই। যদি খেলাঘরে কোনো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হয়, সেটাকে আমরা চট্টগ্রাম থেকে স্বাগত জানাই। আমাদের পদ-পদবির দরকার নেই। শিশুরা যদি একসাথে হাসতে পারে, একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বির্নিমানে যদি কোনো শুভ কাজ হয় তাকে আমরা স্বাগত জানাই।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খেলাঘর চট্টগ্রাম নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোরশেদুল আলম চৌধুরী, খেলাঘর সংগঠক এম নাসিরুল হক, সাংবাদিক সুভাষ দে, কবি আশীষ সেন, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, অধ্যাপক কুন্তল বড়ুয়া, শিল্পী শ্রেয়সী রায় ও আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান।