চিকিৎসক হত্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কে বড় ভাই আর কে ছোট ভাই, আইনের দৃষ্টিতে আলাদা কোনো সুবিধা পাবার সুযোগ নেই।”
Published : 10 Apr 2024, 06:16 PM
ঈদ জামাতে জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে না রাখাতে মুসল্লিদের অনুরোধ করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
তিনি বলেছেন, “আমরা অনুরোধ করব, যারা ঈদ জামাতে আসবেন, তারা জায়নামাজ ছাড়া অন্যকিছু নিয়ে আসবেন না; যাতে কোনো বিপত্তির সৃষ্টি না হয় কিংবা আমাদের চেকিং কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রিতা বা বিলম্ব সৃষ্টি না হয়।”
বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের প্রধান ঈদ জামাত জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষ্ণপদ রায় বলেন, “আমরা আশা করছি, মুসল্লিদের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে আমাদের যে গৃহীত ব্যবস্থা, সেটার মধ্য দিয়ে আমরা একটি সুন্দর ঈদের দিন উদযাপন করব।”
সিএমপি কমিশনার বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে এবার ৮৫০টি ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে প্রধান ঈদ জামাত।
প্রধান ঈদ জামাতকে ঘিরে পুলিশের তরফে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে নগর পুলিশ প্রধান বলেন, “এখানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গেটগুলোতে আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়েছে। যারা এখানে আসবেন, আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে চেকিংয়ের মাধ্যমে আসবেন।”
সিএমপি জানিয়েছে, শহরের কোতোয়ালী থানা এলাকায় ৭৩টি মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বাকলিয়ায় এ সংখ্যা ৩৪, চকবাজারে ২৩, সদরঘাট এলাকায় ৪৪, চান্দগাঁও এলাকায় ১১২, খুলশীতে ৫০, বায়েজিদে ৫০ েএবংপাঁচলাইশ থানা এলাকায় ২০টি মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ডবলমুরিং এলাকায় ১৩টি, পাহাড়তলীতে ৩০টি, হালিশহরে ৭৩ ও আকবর শাহ এলাকায় ৫৪, ইপিজেড থানা এলাকায় ২৬, বন্দর থানা এলাকায় ৩৯, কর্ণফুলীতে ৭০ ও পতেঙ্গা এলাকায় ৬০টি মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এসবের মধ্যে জমিয়াতুল ফালাহ ও আন্দরকিল্লা জামে মসজিদে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, “সবগুলো ঈদ জামাতের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর থাকবে। অনেক জায়গায় আমরা ফিজিক্যালি উপস্থিত থাকব।
“অনেক জায়গায় হয়তো আমরা ফিজিক্যালি থাকব না, তবে নানাভাবে সংযুক্ত থাকব এবং ঈদ জামাতের প্রতি নজর থাকবে।”
প্রয়োজনে ৯৯৯ এ ফোন করার অনুরোধ
নগর পুলিশ প্রধান কৃষ্ণপদ রায় বলেন, বিকাল থেকে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র এবং পর্যটনের আকর্ষণ আছে, এমন স্থানগুলোতে অনেক মানুষের ভিড় হবে। এসব স্থানে সিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশও বিভিন্ন জায়গায় তাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
“দর্শনার্থীরা যেকোনো ধরনের প্রবলেম যদি কেউ ফেস করে, তাহলে নিকটস্থ পুলিশ কিংবা ট্রিপল নাইনে ফোন করে আমাদের সাহায্য নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।”
সিএমপি কমিশনার বলেন, “পুলিশতো সব জায়গায় ফিজিক্যালি উপস্থিত থাকতে পারবে না। কিন্তু পর্যটনের বিভিন্ন স্থাপনা আছে। আমরা আশা করছি, এসব স্থাপনায় ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের নিজস্ব চেকিং, নিজস্ব নিরাপত্তা এবং সার্বিকভাবে ট্রাফিক ডিসিপ্লিনের জন্য কিছু কার্যক্রমও গ্রহণ করতে হবে।
“এসব জায়গায় যাতে গাড়ি নিয়ে মানুষ পৌঁছাতে পারে, সেই সুযোগ-সুবিধা তাদের সৃষ্টি করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে।”
‘চিকিৎসক হত্যায় কাউকে ছাড় নয়’
আকবর শাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় চিকিৎসক কোরবান আলীর মৃত্যুর ঘটনায় সঠিক তদন্তের নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন কৃষ্ণপদ রায়।
“ঘটনার পর থেকেই পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। করছি। ইতোমধ্যে আমরা তিনজন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি।”
সিএমপি কমিশনার বলেন, “আমাদের কাছে ফুটেজ চলে এসেছে, বাকি আসামিদের ধরার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আমি এটা বলতে চাই, যারা এ ধরনের অপরাধজন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবেন, তিনি কিশোরই হোন কিংবা তার চেয়ে বেশি বয়সের হোন না কেন- সবাই আইনের আওতায় আসবে।
আকবরশাহ থানার ফিরোজশাহ কলোনীতে এ হামলার ঘটনায় নিহতের ছেলে আলী রেজার অভিযোগ, স্থানীয় গোলাম রসুল নিশানের অনুসারীরা এ হামলা ঘটিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি নিশানের বিরুদ্ধে আকবর শাহ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ে মদদ দেওয়ার অভিযোগ আছে।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ বলেন, “এ গ্যারান্টি আমরা দিতে চাই। তদন্তে যদি তাদের সম্পৃক্ততা আসে, অবশ্যই তারাও আইনের আওতায় আসবে। কে বড় ভাই আর কে ছোট ভাই, আইনের দৃষ্টিতে আলাদা কোনো সুবিধা পাবার সুযোগ নেই।”