৫ বছর পর টেস্ট খেলার অপেক্ষায় অ্যাগার

সিডনি টেস্টের অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন এই স্পিনার, সঙ্গে দলে ফিরেছেন ব্যাটসম্যান রেনশ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2022, 06:35 AM
Updated : 30 Dec 2022, 06:35 AM

চার বছরে চারটি টেস্ট, এরপর পাঁচ বছরের বিরতি। অ্যাশটন অ্যাগারের টেস্ট ক্যারিয়ার আপাতত এরকমই। থমকে যাওয়া সেই ক্যারিয়ারে নতুন গতির সঞ্চার হতে চলেছে। সিডনি টেস্টের অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াডে জায়গা মিলেছে তার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করার অভিযানে এই ম্যাচের একাদশে ঠাঁই পাওয়ারও প্রবল সম্ভাবনা আছে ২৯ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডারের।

অ্যাগারের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া দলে ফিরছেন ব্যাটসম্যান ম্যাট রেনশ। তার অবশ্য খেলার সম্ভাবনা সামান্যই।

আঙুলের চোটের কারণে ছিটকে গেছেন অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন ও ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্ক। পেস বোলিং অলরাউন্ডার গ্রিনের জায়গায় একাদশে আসতে পারেন অ্যাগার।

সিডনির উইকেট প্রথাগতভাবেই স্পিনারদের পক্ষে থাকে কিছুটা। চলতি মৌসুমে ঘরোয়া নানা ম্যাচে আরও বেশি স্পিন সহায়ক হয়েছে এই উইকেট, টার্ন মিলেছে যথেষ্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট যে উইকেটে হবে, সেটিও বেশ শুষ্ক। সব মিলিয়ে দুই স্পিনার নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার একাদশ সাজানোর সম্ভাবনা বেশি। ন্যাথান লায়নের সঙ্গী হতে যাচ্ছেন তাই অ্যাগার।

পাশাপাশি তার ব্যাটের হাতও মন্দ নয়। গ্রিনের বিকল্প হিসেবে ব্যাটিংও তিনি চালিয়ে নিতে পারবেন। একাদশে সত্যিই সুযোগ পেলে অ্যাগার হয়তো ব্যাট করবেন সাতে। কিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স কেয়ারি উঠে আসবেন ছয়ে।

২০১৩ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে অ্যাশেজের ম্যাচ দিয়ে অ্যাগারের টেস্ট অভিষেক। স্পিনার হিসেবে সুযোগ মিললেও ট্রেন্টব্রিজে সেই টেস্টে তিনি চমকে দিয়েছিলেন ব্যাট হাতে। ফিল হিউজের সঙ্গে শেষ উইকেটে গড়েছিলেন ১৬৩ রানের জুটি। নিজে খেলেছিলেন ৯৮ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। অভিষেকে তো বটেই, সব মিলিয়েই টেস্ট ইতিহাসে ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড সেটি।

তবে আসল কাজ বোলিংয়ে ততটা সফল হতে পারেননি। ওই অ্যাশেজে দুই টেস্টে দুই উইকেটের পর বাদ পড়ে যান। এরপর আবার সুযোগ পান ২০১৭ সালের বাংলাদেশ সফরে। সেবার মিরপুর টেস্টে ৫ উইকেট নিলেও চট্টগ্রামে পরের টেস্টে নেন ২ উইকেট। এরপর আবার বাদ। ন্যাথান লায়ন যেখানে আছেন, সেখানে অ্যাগারকে খুব বেশি প্রয়োজন পড়েনি অস্ট্রেলিয়ার।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অবশ্য তিনি বেশ নিয়মিত। রঙিন পোশাকে জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণেই মূলত গত দুই বছরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি ম্যাচ খেলেছেন স্রেফ তিনটি। তার পরও এবার সুযোগটা পেয়ে গেলেন।

রেনশ ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করে টেস্ট দলের দুয়ারে কড়া নাড়ছিলেন অনেক দিন ধরেই। তার টেস্ট ক্যারিয়ার থমকে আছে ১১ ম্যাচে। সবশেষটি খেলেছেন ২০১৮ সালে।

২০১৬-১৭ মৌসুমে টেস্ট ক্রিকেটে পা রেখেই দারুণ সম্ভাবনার ছাপ রেখেছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলেন ৭১ রানের ইনিংস, চতুর্থ টেস্টে করেন ১৮৪। এরপর টেস্ট দলের হয়ে প্রথম সফরে ভারতে গিয়ে ফিফটি করেন পিঠেপিঠি টেস্টে। তবে শুরুর সেই ধারাবাহিকতা পরে আর ধরে রাখতে না পেরে জায়গা হারান। ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান এবার আরও পরিণত হয়ে ফিরলেন দলে।

ব্যাক আপ ওপেনার হিসেবে অবশ্য আগে থেকেই স্কোয়াডে আছেন মার্কাস হ্যারিস। তবে রেনশ মূলত ওপেনার হলেও ব্যাট করতে পারেন মিডল অর্ডারেও। একাদশ বাছাইয়ে বিভিন্ন বিকল্প খোলা রাখতেই তাকে ফেরানো হয়েছে দলে।

একাদশে মিচেল স্টার্কের জায়গা নেওয়ার লড়াই অবশ্য জমজমাট। জশশ হেইজেলউডের চোটের কারণে সুযোগ পেয়ে স্কট বোল্যান্ড দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। তাকে বাদ দেওয়া কঠিন। হেইজেলউড ফিট হয়ে সিডনিতে খেলতে প্রস্তুত। স্কোয়াডে আগে থেকেই থাকা ল্যান্স মরিসের অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। তাকে মনে করা হচ্ছে এই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার দ্রুততম বোলার। স্টার্কের জায়গায় একজন গতিময় বোলার চাইবে দলও। সব মিলিয়ে কৌতূহল থাকবে, শেষ পর্যন্ত কাকে বেছে নেয় দল।

আগামী বুধবার শুরু সিডনি টেস্ট। প্রথম দুই টেস্ট জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়া দল: প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যাশটন অ্যাগার, স্কট বোল্যান্ড, অ্যালেক্স কেয়ারি, মার্কাস হ্যারিস, জশ হেইজেলইড, ট্রাভিস হেড, উসমান খাওয়াজা, মার্নাস লাবুশেন, ন্যাথান লায়ন, ল্যান্স মরিস, ম্যাট রেনশ, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার।