ইংল্যান্ডে টেস্ট খেলতে পারে বাংলাদেশ, খবর দা টেলিগ্রাফের

আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচির বাইরে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়েকে লর্ডসে টেস্ট খেলার আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে বলে খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ এই পত্রিকাটি।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2023, 05:11 AM
Updated : 7 June 2023, 05:11 AM

আইসিসির ভবিষ্যৎ সফর সূচি (এফটিপি) অনুযায়ী, ২০২৭ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের কোনো টেস্ট নেই। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যেই সেখানে খেলতে পারে বাংলাদেশ এবং সেই টেস্ট হতে পারে ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে। 

ব্রিটিশ দৈনিক দা টেলিগ্রাফের খবর, এফটিপির বাইরে বাংলাদশ ও জিম্বাবুয়েকে টেস্ট খেলার আমন্ত্রণ জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। 

২০২৪ ও ২০২৫ সালে ইংলিশ গ্রীষ্মে এফটিপিতে আছে স্রেফ ৫টি করে টেস্ট ম্যাচ। কিছুটা জায়গা তাই ফাঁকা আছে। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছে ইসিবি। যদিও ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে এই সময়েই। তবে সম্ভাব্য ফাঁকা সময় খোঁজা হচ্ছে। 

এই দুই বছরে একটি করে বাড়তি টেস্ট তারা খেলতে পারে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। টেস্ট ক্রিকেটকে সুরক্ষা দিতে, আরও জনপ্রিয় করতে ও প্রাসঙ্গিক রাখতে ইসিবি এই উদ্যোগের কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। 

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথম ১০ বছরে দুই দফায় ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ২০০৫ ও ২০১০ সালে ওই দুই সফরের পর দ্বিপাক্ষিক কোনো সিরিজে আর বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি তারা। গত ১৩ বছরের মধ্যে শুধু ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডে খেলতে পেরেছে বাংলাদেশ। 

দ্বিপাক্ষিক সিরিজে জিম্বাবুয়ে সবশেষ ইংল্যান্ডে খেলেছে সেই ২০০৩ সালে। ২০০৪ সালের পর কোনো ধরনের ক্রিকেটে সেখানে আর খেলার সুযোগ পায়নি জিম্বাবুয়ে। মূলত রাজনৈতিক কারণেই দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্কে বিরতি পড়েছিল, যা সময়ের সঙ্গে কেবল দীর্ঘই হয়েছে। 

লর্ডসে প্রতি বছর অন্তত দুটি করে টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের চুক্তি আছে। ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর তা হয়ে আসছে, স্রেফ ২০২০ সালে কোভিড মহামারীর বছর ছাড়া। সম্প্রতি এখানে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের টেস্টেও টিকিটের চাহিদা ছিল প্রবল। এটিই কর্তৃপক্ষকে আরও উৎসাহী করে তুলছে যে, প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেট শক্তির সঙ্গে খেলা না হলেও লোকের আগ্রহ আছে। 

লর্ডস স্টেডিয়াম যাদের দায়িত্বে, সেই মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রধান নির্বাহী গাই ল্যাভেন্ডার টেলিগ্রাফকে বলেন, দুটি করে টেস্ট আয়োজনের ধারা ধরে রাখতে চান তারা। 

“২০২৪ সালেও লর্ডসে দুটি টেস্ট ম্যাচ আয়োজন করতে আমরা মুখিয়ে আছি প্রবলভাবে। অসাধারণ এই ভেন্যুর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং খেলাটির সমৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট অর্থের জোগান পেতে হলেও আমরা মনে করি, সামনের সময়টাতেও বছরে দুটি করে টেস্ট এখানে আয়োজনের উল্লেখযোগ্য যৌক্তিকতা আছে।” 

বিশেষ করে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দর্শকের প্রবল আগ্রহের কথাও ইসিবির ভাবনায় আছে বলে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০১৯ বিশ্বকাপে তুমুল সমর্থনের জোয়ার সেখানে দেখা গেছে। এমনকি সম্প্রতি চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজেও গ্যালারি ছিল টইটম্বুর। ইসিবি মনে করছে, স্রেফ একটি টেস্ট ম্যাচের সফর হলেও সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে। 

ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গুল্ড সম্প্রতি ‘ফাইনাল ওয়ার্ল্ড’ পডকাস্টে তুলে ধরেছেন ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে টেস্ট ক্রিকেটকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলার প্রয়োজনীয়তা। এই পডকাস্টে তিনি বলেছেন, ক্রিকেটারদের টেস্ট খেলতে শুধু আগ্রহী করে তোলাই নয়, টেস্টে উৎসাহ বাড়িয়ে তুলতে তাদেরকে ভালো পরিমাণের পারিশ্রামিক দেওয়ার পথ খুঁজছে ইসিবি।