Published : 01 Jan 2024, 04:27 PM
সাফল্যের মুকুটে সবশেষ যোগ হয়েছে এশিয়া কাপ জয়ের পালক। বছর তিনেক আগে বিশ্বকাপ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে এই বড় দুটি সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। দুয়ারে আরেকটি বিশ্বকাপ। এশিয়া কাপ জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই বেড়েছে প্রত্যাশা। তবে দলের প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল স্পষ্ট করে বলেছেন, ফলাফলের চেয়ে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার দিকেই বেশি মনোযোগ তার।
দক্ষিণ আফ্রিকায় আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্দা উঠবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের। ব্লুমফন্টেইনে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের যাত্রা। প্রক্রিয়া ঠিক রেখে আপাতত শুধু ওই ম্যাচের দিকেই মনোযোগ দলের প্রধান কোচের।
এমনিতে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট বা বোর্ডের ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য থাকে পরবর্তী ধাপ তথা জাতীয় দলের জন্য ক্রিকেটারদের তৈরি করা। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রায় সময়ই বড় হয়ে ওঠে ফলাফল। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের যেকোনো সাফল্য উদযাপিত হয় অনেক বড় করে। আবার ব্যর্থতায় ছোড়া হয় সমালোচনার তীর।
সেসব নিয়ে ভাবার পক্ষপাতী নন ল। সোমবার বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণার দিন বললেন, নিজেদের হাতে থাকা সবকিছু ভালোভাবে করতে চান তিনি।
“প্রক্রিয়াটাই সবসময় সবার আগে। আপনি যদি অনেক বড় কিছু যেমন জয় নিয়ে চিন্তা করেন, তাহলে এই পথে কী করতে হবে, তা ভুলে যাবেন। আমি শুধু খেলা বা শেষের ফলের দিকে মনোযোগ দেই না। যা আমাদের হাতে আছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। আর আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে প্রস্তুতি, কীভাবে আমরা এগোবো, নিজেদের পরিকল্পনায় অনড় থাকা, ভিন্ন প্রতিপক্ষের জন্য কৌশল সাজানো এবং সব কাজ করে প্রতি ম্যাচে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাঠে নামা। আমার মনোযোগের কেন্দ্রে এগুলোই।”
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরের ম্যাচ। আর সেটা ২০ তারিখে, ভারতের বিপক্ষে। তো এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ওই ম্যাচের পর ওখানেই তা শেষ। এরপর আবার পরের ম্যাচটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবারে একটি করে ম্যাচ, সেই একই পুরনো কথা। তবে প্রক্রিয়া অনুসরণে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।”
কোচের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে পাওয়া যাবে জাতীয় দলে খেলার মতো সামর্থ্যবান ক্রিকেটার। এরই মধ্যে কিছুটা আভাসও মিলেছে। বিশ্বকাপ দলে থাকা আরিফুল ইসলাম, জিসান আলমরা এরই মধ্যে খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি, আশিকুর রহমান শিবলি, চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ানদেরও হয়েছে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেক।
এসব তরুণদের প্রতিভা নিয়ে আশাবাদী প্রধান কোচ। পরবর্তী ধাপে জায়গা পাওয়ার জন্য যেসব জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে, তা দেখিয়ে দিলেন ল।
“বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার সম্ভাবনার ছাপ রাখছে। তারা এখন যে সুযোগ পাচ্ছে, তাতে সবার মনোযোগের কেন্দ্রে থাকছে। এশিয়া কাপ একটি সুযোগ ছিল। তাদের জন্য বিশ্বকাপ আরেকটি মঞ্চ, নিজেদের স্কিল দেখানোর। আমার বিশ্বাস, বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার (জাতীয় দলে) খেলতে পারবে। তবে পুরোটাই তাদের ওপর নির্ভর করবে। তাড়নাটা ভেতর থেকে আসতে হবে।”
“তাদেরেই নিশ্চিত করতে হবে, যেন তারা নিজেদের প্রতিভা অপচয় না করে, সুযোগ নষ্ট না করে। একই সঙ্গে মাঠে নেমে নিজেদের খেলাটা উপভোগ করতে হবে। আমি ওদের দেখেছি, যখন ভালো খেলে, মুখে চওড়া হাসি থাকে। মাঠে তারা একে অপরের পাশে থাকে, একে অপরের সাফল্য উপভোগ করে। আমরা যদি এভাবে চালিয়ে যেতে পারি, তাহলে ফল দারুণ পাওয়া যাবে।”
এসময় তরুণ ক্রিকেটারদের প্রতিভার বাস্তবায়নের তাগিদ দেন ল।
“শুধু বাংলাদেশ নয়, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে অনেক দলেই ঢের প্রতিভা থাকে। এই পর্যায়ে কেবল প্রতিভাটাই থাকে। এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, চাপের মুহূর্তে ধারাবাহিকভাবে প্রতিভার বাস্তবায়ন করা। তা করতে পারলে, পরবর্তী ধাপের জন্য তাদের ওপর নজর পড়বে। ক্রিকেটারদের জন্য এটি (অনূর্ধ্ব-১৯) দুই বছরের যাত্রা।”