ধারামশালার আউটফিল্ড নিয়ে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার বললেন তাদের শঙ্কার কথা, কিন্তু বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথ বললেন, তাদের কোনো অভিযোগ নেই।
Published : 09 Oct 2023, 07:52 PM
ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ কিংবা সংবাদকর্মী, ম্যাচের আগের দিন মাঠে এলে সবকিছুর আগে সবার চোখ যায় উইকেটের দিকে। কিন্তু ধারামশালায় এখন চিত্র একটু ভিন্ন। ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফের সদস্যরা মাঠে ঢুকেই পা টিপে দেখছেন আউটফিল্ডের অবস্থা। সংবাদকর্মীরাও ভিড় করছেন সীমানার কাছাকাছি, আউটফিল্ডের অবস্থা যতটা সম্ভব বুঝে নিতে। আউটফিল্ডের কারণে ফিল্ডিং অনুশীলনের সময় কেউ বিপাকে পড়ছেন কি না, খেয়াল রাখতে হচ্ছে সেদিকেও।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ম্যাচের দিন থেকেই তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামের আউটফিল্ড নিয়ে। নান্দনিক স্থাপনা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মিলিয়ে যে মাঠ সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি, সেটিই এখন নেতিবাচকভাবে খবরের শিরোনামে আউটফিল্ডের বাজে অবস্থার কারণে। মূলত নতুন করে মাঠের ঘাস লাগানোর পর শীতকাল দীর্ঘায়িত হওয়ায় মাঠের এই হতশ্রী অবস্থা হয়েছে।
ভারী বালির স্তর বলের গতি কমিয়ে দিচ্ছে নিয়মিতই। তবে মূল সমস্যা, ক্রিকেটারদের চোটের শঙ্কা নিয়ে। বিশ্বকাপের ম্যাচ তো বহুদূর, এরকম আউটফিল্ড যে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্যই উপযুক্ত নয় খুব একটা। আউটফিল্ডের জন্য কোনো ক্রিকেটারকে যদি চোটে পড়তে হয়, তাহলে তা আয়োজকদের জন্য তো বটেই, আইসিসির জন্যও হওয়ার কথা বিব্রতকর। রোববার যেমন আইসিসি মাঠ বিষয়ক কর্মকর্তারা আউটফিল্ড পরিদর্শন করে গেছেন। তারা অবশ্য এই মাঠে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সবুজ সঙ্কেতই দিয়েছেন।
তবে তাতে আলোচনা থেমে নেই। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচের আগের দিন জস বাটলারের সংবাদ সম্মেলনের অনেকটা জুড়ে থাকল আউটফিল্ডের প্রসঙ্গই। ইংলিশ অধিনায়ক বলেন,
“আমার মতে, এটা (আউটফিল্ড) বেশ বাজে। এটা যদি ভাবতে হয় যে, ডাইভ দেওয়ার সময় বা ফিল্ডিংয়ের সময় সতর্ক থাকতে হবে, তাহলে তো দল হিসেবে আমরা যেরকম হতে চাই, তা সম্ভব হয়। আমাদের তো চাওয়া থাকে একটি রান বাঁচাতেও ঝাঁপিয়ে পড়া। এখানে তাই এই আউটফিল্ড, এই আঙিনা খুব আদর্শ নয়।”
“যদিও এটাকে আমরা অজুহাত হিসেবে দেখাতে চাই না। আমরা মানিয়ে নেব। তবে হ্যাঁ, যদি মাঠে নিজেকে সামলে রাখতে হয়, বিশ্বকাপের মতো ম্যাচে দল হিসেবে বা ব্যক্তিগতভাবে তা কেউই চায় না।”
চোটের ভাবনা মাথায় রেখে ক্রিকেটারদের যে একটু সাবধান থাকতে হবে, সেটিও বললেন বাটলার।
“চোট তো যে কোনো সময় যে কোনো মাঠেই হতে পারে। তবে এই মাঠে অবশ্যই একটু হলেও বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। কিন্তু এরকম তো উচিত নয়, দেশের হয়ে খেলার সময় প্রতিটি রান বাঁচাতে সবটুকু উজাড় করে দিতে হয় বা সেই বিশ্বাস রাখতে হয়। এই মাঠ তাই ভালো নয়, যতটা ভালো হওয়া উচিত।”
ইংলিশ অধিনায়ক বিপদের জায়গাগুলি বেশ খোলামেলাভাবে তুলে ধরলেও রঙ্গনা হেরাথ বেছে নিলেন নিরাপদ পথ। বিতর্ক এড়াতেই হোক বা অন্য কোনো কারণে, দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশের স্পিন কোচ বললেন, তাদের আপত্তি খুব একটা নেই।
“আইসিসি এটা নিয়ে অনেক কাজ করেছে। মানটা তারা ধরে রাখতে পেরেছে বলেই আমার মনে হয় খেলা চালানোর অনুমতি দিয়েছে। সেদিক থেকে আমি খুশি।”
“আন্তর্জাতিক মানের মাঠ যদি পাওয়াই যায়, তাহলে অভিযোগ করব কেন? আমি তাই সেসব নিয়ে ভাবছি না। মাঠ যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালানোর মতো ভালো থাকে, আমি তাহলে সিদ্ধান্ত নিয়ে খুশি।”
বাংলাদেশ দল থেকে ক্রিকেটারদের মাঠে ডাইভ দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা হবে না বলেও জানান হেরাথ।
“আমরা মাঠে কাউকে কোনো কিছু করতে সাবধান থাকতে বলব না। কারণ, সেক্ষেত্রে তারা তো শতভাগ দেবে না। আমার মনে হয়, আগের ম্যাচে তারা যেভাবে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে, কালকেও সেভাবেই দেবে, এমনকি এই আউটফিল্ডেও।”