দ. আফ্রিকায় দিশাদের অনুপ্রেরণা আকবরদের বিশ্বজয়

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপের প্রথম আসর খেলতে রোববার দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2022, 11:49 AM
Updated : 31 Dec 2022, 11:49 AM

উনিশের হাত ধরে ২০২০ সালে বিশ্ব জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে আকবর আলির দল। ওই সাফল্যের অনুপ্রেরণায় একই দেশে হতে যাওয়া মেয়েদের বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপে ভালো কিছুর সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক দিশা বিশ্বাস। 

আগামী ১৪ জানুয়ারি মাঠে গড়াবে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপের প্রথম আসর। ১৬ দলের অংশগ্রহণে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ক্যাম্প ও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে উড়াল দেবে দল। 

দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। আকবর আলি, মাহমুদুল হাসান জয়, পারভেজ হোসেন ইমনদের ওই বিজয়গাঁথা মাথায় রেখেই নিজেদের পরিকল্পনা সাজানোর কথা জানিয়েছেন দিশা।   

দেশ ছাড়ার আগের দিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজ দলকে নিয়ে আশার কথা শোনালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 

“(আকবর) ভাইয়েরা যেখান (দক্ষিণ আফ্রিকা) থেকে সাফল্য নিয়ে এসেছেন, আমাদেরও ওইভাবে পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনা আছে যে ভাইয়েরা যদি কিছু করতে পারে, আমরাও পারব। আমাদের লক্ষ্য ভালো খেলার, ‘স্ট্যান্ডার্ড’ একটা ফল নিয়ে দেশে ফেরার।” 

তবে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যের কথা বলেননি দিশা। বরং ভালো খেলার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার।  

“আমাদের দল অবশ্যই ভালো। আমার দল নিয়ে আমি খুব খুশি। যে দল পেয়েছি আমার কাছে ইতিবাচকই মনে হয়েছে। (কম্বিনেশনের ব্যাপারে) এখনই বলা সম্ভব নয়। অনেক ব্যাপার থাকে। ওখানকার সবকিছু মিলিয়ে, ভাগ্যেরও একটা সহায়তা দরকার।”  

“তবে আমি (দল) যতটুকু পেয়েছি, ভালো একটা কিছু হবে। ভালো একটা ফল আসবে। ভালো ফল মানেই যে চ্যাম্পিয়ন, অমন কিছু না। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব ভালো কিছু করার। বাকিটা ভগবান ভালো জানেন।” 

বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং আক্রমণের মূল শক্তি স্পিনাররা। তবে বয়সভিত্তিক দলের চিত্রটা ভিন্ন। অধিনায়ক দিশা জানালেন, তার দলে রয়েছে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের আধিক্য।  

“আমি মনে করি, সবকিছুই আমার (দলের) শক্তির জায়গা। আমাদের দলে পেস বোলিং অলরাউন্ডার বেশি। আমিও পেস বোলার। বাইরের উইকেটগুলো এমন হয় যে বাউন্স বেশি পাওয়া যায়। তাই পেস বোলারদের সুবিধাটা বেশি আসবে। সেটি ধরে আমরা সব দিকেই আমাদের ঘাটতি পূরণ করেছি।” 

স্পিন বিভাগে অফ স্পিনার ও লেগ স্পিনার থাকলেও, দলে নেই কোনো বাঁহাতি স্পিনার। এটিকে বড় করে দেখতে নারাজ দিশা। 

“আমাদের দলে দুইজন ভালো লেগ স্পিনার আছে। অফ স্পিনার বা অকেশনাল স্পিনারও আছে ভালো। আমার দলে বাঁহাতি স্পিনার নেই। তবে এটাকে আমি ঘাটতি মনে করছি না। আমার (দলে) যা আছে তা দিয়ে অভাব পূরণ করতে পারব আমি মনে করি।” 

বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব ক্রিকেটে যে কোনো টুর্নামেন্টে বরাবরই ফেভারিটের তালিকায় থাকে তাদের নাম। সেদিকে নজর না দিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাঠের পারফরম্যান্সে মনোযোগ দিতে চান। 

“মাঠে যারা ভালো করবে তারাই ভালো দল। আমি কাউকে বড় করে দেখছি না, কাউকে ছোটও করছি না। এখন অস্ট্রেলিয়া আছে, তারা নামে ভালো, খেলেও ভালো। তবে আমি যেটা বললাম, আমার দল নিয়ে আমি খুবই ইতিবাচক। আমরা সবাই যদি একসাথে পারফর্ম করতে পারি তাহলে শুধু অস্ট্রেলিয়া কেন, সব দলকেই হারাতে পারব।” 

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নামার আগেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আবহের সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেছে দিশার। সবশেষ নিউ জিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অংশ ছিলেন তিনি।  

ওই সফরে কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। তবে সেখান থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা এবার অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপে কাজে লাগানোর আশা তার।   

“ব্যক্তিগতভাবে এটি (অধিনায়কত্ব) অনেক বড় পাওয়া। বিসিবি আমাকে যোগ্য মনে করে দায়িত্ব দিয়েছে। আমি সত্যিই খুশি। অধিনায়কত্ব পাওয়ার আগে ‘সিনিয়র’ ক্রিকেটার হিসেবে আমার চিন্তা ছিল দলকে কীভাবে সাহায্য করা যায়। সবসময় আমার সেই চেষ্টাই থাকে এবং থাকবে।” 

উদ্বোধনী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার পর ১৬ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গ্রুপের শেষ ম্যাচটি যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১৮, জানুয়ারি। বেনোনির দুই মাঠে হবে ম্যাচগুলো।
মূল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বাংলাদেশ দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে; ৯ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ১১ জানুয়ারি ভারতের বিপক্ষে।