রোহিতের দুটি ক্যাচ ছাড়ার পরও জয়ের বিশ্বাস ছিল: মিরাজ

শেষের আগের ওভারে রোহিত শর্মার সহজ দুটি ক্যাচ ছেড়ে হারের শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদক
Published : 7 Dec 2022, 05:09 PM
Updated : 7 Dec 2022, 05:09 PM

বাংলাদেশ আর জয়ের মধ্যে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে তখন কেবল রোহিত শর্মা। ওই সময়ই কিনা চার বলের মধ্যে তার ক্যাচ পড়ল দুইবার! দুটিই সহজ ক্যাচ। মিরপুরের গ্যালারি ভরা দর্শক তখন স্তুম্ভিত। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দেখে মনে হচ্ছিল যেন, নুইয়ে পড়েছেন তারা। তবে ম্যাচ সেরা মেহেদী হাসান মিরাজ ম্যাচের পর বললেন, জয়ের বিশ্বাসটা তখনও ছিল তাদের।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের শেষের আগের ওভারের ঘটনা সেটি। দুই ওভারে ভারতের প্রয়োজন পড়ে ৪০ রানের। ৪৯তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর প্রথম বল ছক্কায় ওড়ান রোহিত। পরের বলে ওয়াইড ও বাই মিলিয়ে আসে তিন রান। এরপরের বলেই পড়ে প্রথম ক্যাচ। শর্ট ফাইন লেগে যা নিতে পারেননি ইবাদত হোসেন। উল্টো রোহিত পান দুই রান।

পরের বলে আবার ছক্কা মারেন রোহিত, চতুর্থ বলে পান তিনি আরও দুটি রান। পরের বলটি মাহমুদউল্লাহ করে বসেন ফুল টস, তবে টাইমিং করতে পারেননি রোহিত। এবার সহজ ক্যাচ যায় স্কয়ার লেগে। কিন্তু এনামুল হক তা জমাতে পারেননি হাতে। রোহিত নেন একটি রান।

শেষ বলে মোহাম্মদ সিরাজ বোল্ড হলেও ওভার থেকে আসে ২০ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের করা শেষ ওভারেও নাটকীয়তার স্রোতে ভেসে শেষ পর্যন্ত ৫ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতে নেয় বাংলাদেশ।

ম্যাচের প্রথম ভাগে আট নম্বরে নেমে অসাধারণ সেঞ্চুরি করে ও পরে বল হাতে দুই উইকেট ম্যাচ সেরা হওয়া মিরাজ পরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শেষ সময়ে দুটি ক্যাচ পড়লেও মনোবল ভেঙে পড়েনি তাদের।

“ক্রিকেট ক্যাচ মিস হবেই। যে কেউ ক্যাচ মিস করতেই পারে। তার পরও আমাদের বিশ্বাস ছিল যে ম্যাচ জিততে পারব। স্রেফ একটা উইকেটের ব্যাপার ছিল। রোহিত আউট হয়ে গেলে কেবল বোলাররা ছিল, ওরা তো অতটা মারতে পারবে না। আমাদের বিশ্বাসটা ছিল যে উইকেট একটা পড়বেই।”

মাহমুদউল্লাহর ওই ওভারের ঠিক আগে, ৪৮তম ওভারে সিরাজকে পেয়ে দারুণ বোলিং করে মেডেন নেন মুস্তাফিজুর রহমান। ম্যাচের প্রেক্ষাপটে ওই ওভারটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলছেন মিরাজ।

“মুস্তাফিজ একটা ওভার খুব ভালো বোলিং করেছে। মেডেন নিয়েছে। ওকে কৃতিত্ব দিতে হবে। ওই সময়ে ওই ওভারটা আমাদের দলের জন্য টার্নিং পয়েন্ট ছিল। খুব ভালো করেছে ওই ওভারটা।”

রোহিত ওই সময়ে অমন পাল্টা আক্রমণ না করলে অবশ্য ম্যাচে এতটা নাটকীয়তাই হতো না। আঙুলের চোটে তিনি ওপেন করতে পারেননি। একটা সময় মনে হচ্ছিল, হয়তো ব্যাটিংয়ে নামবেনই না। কিন্তু আঙুলে সেলাই নিয়ে, ব্যাথানাশক ইকজেকশন নিয়ে তিনি ব্যাটিংয়ে নেমে যান বুড়ো আঙুলের জায়গাটায় গ্লাভস কেটে। ৯ নম্বরে নেমে দুর্দান্ত খেলে দলের জয়ের আশা জিইয়ে রাখেন ভারতীয় অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৫১ রানের বীরোচিত ইনিংস খেললেও জেতাতে পারেননি দলকে।

মিরাজ ম্যাচ শেষে বললেন, রোহিতকে ব্যাটিংয়ে দেখে তারা চমকে যাননি।

“আমাদের মানসিক প্রস্তুতি ছিল যে রোহিত ব্যাটিং করতে পারে এবং সে যদি আসে, আমাদের বোলারদের পরিকল্পনা ছিল কীভাবে বল করব। দিনশেষে, আপনার তো ১০ উইকেটই নিতে হবে। সব উইকেট না নিলে তো জিততে পারব না। অবশই সে ভালো খেলেছে। যেভাবে খেলেছে সে, ওদের জন্য ইতিবাচক ছিল।”

“তবে আমার কাছে মনে হয়, আমাদের বোলাররা খুবই ভালো বল করেছেন। মাঝখানে একটা জুটি হতেই পারে। আমরাও তো জুটি গড়েছি। তার পরও ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। মুস্তাফিজ অসাধারণ বোলিং করেছে, সাকিব ভাই, ইবাদত, নাসুম ভালো করেছে। আমার কাছ থেকে যে আশা করেছিল দল, তা করতে পারিনি। কারণ আমার পায়ে ক্র্যাম্প করছিল, টান লাগছিল। তার পরও রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) খুব ভালো সমর্থন দিয়ে গেছেন।”