যে কারণে একাদশে জায়গা পাননি ইয়াসির

বিশ্বকাপের আগে ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন দেখে নেওয়ার পরিকল্পনা বাংলাদেশের প্রধান কোচের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2022, 11:24 AM
Updated : 6 Dec 2022, 11:24 AM

প্রথম ম্যাচের অবিশ্বাস্য জয়ের উচ্ছ্বাস তাৎক্ষনিকভাবে চাপা দেয় অনেক প্রশ্নই। তবে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে প্রশ্নগুলি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা যেমন একটি। প্রসঙ্গক্রমে উঠে এলো ইয়াসির আলির চৌধুরির কথাও। শান্তর একাদশে থাকা এবং ইয়াসিরের না থাকা বিস্ময়ের জন্ম দেয় যথেষ্টই।

ইয়াসির অবশ্য গত আট মাসে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে খেলেননি। তবে সবশেষ সিরিজে তার ব্যাটিংয়ে ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বিজ্ঞাপন।

গত মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের প্রথম ওয়ানডেতে ৪৪ বলে ৫০ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ইয়াসির। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ১১৫ রানের জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন তিনি। এই জুটির ইতিবাচক ব্যাটিংই ঘুরিয়ে দেয় ইনিংসের মোড়।

ওই সিরিজের পর পিঠের চোটে আর ওয়ানডে খেলা হয়নি ইয়াসিরের। টি-টোয়েন্টি দিয়ে দলে ফেরার পর গত অক্টোবরে নিউ জিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ম্যাচে খেলেন ২১ বলে ৪২ রানের ইনিংস। এরপর কুড়ি ওভারের ক্রিকেটেও তেমন রান পাননি।

তবে দেশে ফিরে বিসিএলের ওয়ানডে সংস্করণে প্রথম ম্যাচেই ৭৩ বলে ৮০ রান করেন তিনি। পরের ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৪১ রানের ইনিংস। প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে চোট থেকে ফেরার পর জায়গা ফিরে পাওয়ার কথা তার। তবে সবশেষ সিরিজের ওই ইনিংস কিংবা বিসিএলের ব্যাটিং যথেষ্ট হয়নি তাকে একাদশে রাখার জন্য।

দ্বিতীয় ওয়ানডের আগের দিন মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনাটাও জানালেন রাসেল ডমিঙ্গো। বাংলাদেশের প্রধান কোচের মতে, ব্যাটিং অর্ডারের সামগ্রিক চিত্র মিলিয়েই ইয়াসিরকে রাখা যায়নি একাদশে।

“দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর র‌্যাবস (ইয়াসির) আর ওয়ানডে খেলেনি। চোটে পড়ে যায় সে। মিরপুরে নতুন বল সামাল দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম তিন-চার ওভারে সাকিবকে আমি নতুন বল থেকে দূরে রাখতে চাই। বলটা কিছুটা পুরোনো হয়ে গেলে, আমি দেখেছি সাকিব কতটা অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে। তাই চেষ্টা থাকে তাকে নতুন বল থেকে দূরে রাখার।”  

প্রথম ম্যাচে চার নম্বরে ব্যাটিং করেছেন সাকিব। লিটন দাসের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত, তিনে এনামুল হক। ইয়াসিরকে মিডল অর্ডারে জায়গা দিলে ওপর থেকে বাদ পড়তেন বিজয় বা শান্তর একজন। সাকিবকে তখন খেলতে হতো তিন নম্বরে।

এক্ষেত্রে প্রায় ম্যাচেই নতুন বলের মোকাবিলা করতে হয় তাকে। সাকিবকে এ চ্যালেঞ্জ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা থাকে দলের, এমনটাই বললেন ডমিঙ্গো।

প্রধান কোচ তিন নম্বর থেকে সাকিবকে দূরে রাখতে চাইলেও তার কাছে এই পজিশনই বেশি আপন। অন্য যে কোনো পজিশনের চেয়ে তিন নম্বরেই বেশি উজ্জ্বল সাকিব। এখনও পর্যন্ত তিন নম্বরে ৩৫ ইনিংস ব্যাট করে ৪৯.৮৬ গড়ে ১৩ ফিফটির সঙ্গে ২ সেঞ্চুরিতে তার রান ১ হাজার ৪৯৬। চার নম্বরেও অবশ্য পারফরম্যান্স তার খুব বিবর্ণ নয়। এখানে ৩৪ ম্যাচে ৪২.৩৪ গড়ে রান ১ হাজার ১০১ রান। এই পজিশনে সেঞ্চুরি ২টি, ফিফটি ৫টি।

তবে শুধু সাকিবের পজিশনই নয়, ডমিঙ্গোর ভাবনায় আছে সামগ্রিক আরও অনেক কিছু। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন দেখে নিতে চান তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ইয়াসির ভালো করলেও শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার জন্য বাংলাদেশের প্রধান কোচের ভরসা আফিফ ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে।

“বিশ্বকাপের আগে আমাদের ১২টি ওয়ানডে আছে। ভিন্ন ভিন্ন কম্বিনেশন দেখার ও ছেলেদের সুযোগ দেওয়ার ভালো সুযোগ এটি। বিশ্বকাপে আমরা তাদেরকে ওই নির্দিষ্ট দায়িত্বে দেখতে চাই। রাব্বি দক্ষিণ আফ্রিকায় করে দেখিয়েছে, একটি ফিফটি করেছে। টি-টোয়েন্টিতে কয়েক ওভার বাকি থাকতে কঠিন পরিস্থিতিতে নামতে হয়েছে তাকে।”

“শেষ দিকে (দ্রুত রান তোলার জন্য) আফিফ রয়েছে। কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমি এখনও মাহমুদউল্লাহর সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতার ওপর বিশ্বাস রাখি।”