রান ও উইকেটের চেয়ে উপযুক্ত মানসিকতার ক্রিকেটারকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন হাথুরুসিংহে, যা তিনি খুঁজে পেয়েছেন রনি তালুকদারের মধ্যে।
Published : 17 Mar 2023, 04:31 PM
৪ চারে ২১ রানের একটি ইনিংস। স্থায়িত্ব স্রেফ ১৪ বল আর ১৬ মিনিটের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওই ছোট্ট ইনিংসেই চান্দিকা হাথুরুসিংহের মন জয় করে নিয়েছেন রনি তালুকদার। রান কিংবা উইকেটের চেয়ে ক্রিকেটারদের মধ্যে তিনি বেশি খুঁজছেন দলের দর্শনের সঙ্গে উপযুক্ত মানসিকতা। সেখানেই বাংলাদেশ কোচ মুগ্ধ রনিকে নিয়ে।
ইংলিশদের বিপক্ষে সেদিন চট্টগ্রামে ১৫৭ রান তাড়ায় বাংলাদেশের সুর বেঁধে দেন রনিই। প্রথম ওভারে স্যাম কারানের বলে বাউন্ডারি মারেন তিনি, পরের ওভারে ক্রিস ওকসকে দুটি। এরপর বাউন্ডারি মারেন জফ্রা আর্চারকেও। তাতে উবে যায় শুরুর অস্বস্তি।
পরের ওভারে আদিল রশিদের গুগলিতে তিনি বোল্ড হয়ে যান। তবে ৮ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে প্রথম ম্যাচেই যেভাবে খেলেছেন, তা মনে দাগ কেটে যায় কোচের।
টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচেই খেলেন রনি। দ্বিতীয় ম্যাচে আউট হন ৯ রানে, তৃতীয় ম্যাচে করেন ২৪। বড় ইনিংস খেলতে পারলেও কোচিং স্টাফের ভাবনায় বড় ছাপ ফেলেন তিনি ওই ইনিংসগুলোতেই।
সেটি তার জন্য দুয়ার খুলে দেয় ওয়ানডে দলে। অনুশীলনে জাকির হাসান চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পর বদলি হিসেবে নেওয়া হয় রনিকেই।
গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খুব ভালো পারফরম্যান্স ছিল না তার। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সার্বিক রেকর্ডও মোটেও জাতীয় দলে আসার মতো নয়। তবে সিরিজ শুরুর আগের দিন সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে কোচ তুলে ধরলেন, ৩২ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানকে কেন তার আলাদা মনে হয়েছে।
“আমাকে সে দারুণভাবে মুগ্ধ করেছে। প্রথম টি-টোয়েন্টির কথা যদি মনে করেন, সে যেভাবে শুরু করেছিল, সেটিই আমাদের মোমেন্টাম এনে দিয়েছিল। তার শরীরী ভাষা দেখে এবং পরে কোচিং স্টাফ ও ক্রিকেটারদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, আমাদের মানসিকতায় সবাই অবাক হয়েছে এবং শুরুটা তার মাধ্যমেই হয়েছিল।”
“রান আর উইকেটের চেয়ে আমি মানসিকতা বেশি দেখি। পারফরম্যান্সে ওঠা-নামা থাকেই, কিন্তু ক্রিকেটাররা যদি শক্তিশালী মানসিকতার ছাপ রাখে এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে যেভাবে খেলে, সেই মানসিকতা মেলে ধরতে পারে, আমরা সেটিই চাই।”
রনি ছাড়াও এই দলে ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন তৌহিদ হৃদয়। দলে ফেরানো হয়েছে ওয়ানডেতে ৫টি ইনিংস খেলা ইয়াসির আলি চৌধুরিকে। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে বিশ্বকাপে তাকিয়ে বিকল্প বাড়ানোর অভিযান চলবে এই সিরিজে তাদেরকে দিয়েই।
সিরিজ শুরুর আগে কোচ পরিষ্কার বার্তা দিয়ে রাখলেন, রনি-হৃদয়দের কাছে কোন ধরনের ক্রিকেট তিনি দেখতে চান।
“ঘরোয়া ক্রিকেটে তারা যা করছে, সেই খোলা মন ও তাড়না নিয়ে যেন তারা খেলতে পারে। কারণ, ঘরোয়া আসরে আমরা দেখেছি তারা কী করতে পারে। তাদের পারফরম্যান্স ও ব্যাটিংয়ের সুনির্দিষ্ট ধরনের কারণেই দলে নিয়েছি, পেস ও স্পিনের বিপক্ষে তাদের রেকর্ড দেখেছি।”
“আমরা এখানে শুধু তাদের সেই আত্মবিশ্বাস জোগানোর মানসিক স্বস্তি দিচ্ছি যেন তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও একইভাবে খেলতে পারে। আমরা সেই মানসিকতার ক্রিকেটারই খুঁজছি। আমরা জানি, তারা করেছে এটা। ঘরোয়াতে যারা রান করছে ও উইকেট নিচ্ছে, তাদের মধ্যে কাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো করার মানসিকতা আছে, এমন ক্রিকেটারদের খুঁজছি আমরা। কঠিন অবস্থা থেকে ম্যাচ জেতাতে পারবে, এরকম চরিত্র প্রয়োজন আমাদের।”