নভেম্বরের সেরার লড়াইয়ে বাটলার-রশিদ-আফ্রিদি

মেয়েদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় চতুর্থবার আয়ারল্যান্ডের গ্যাবি লুইস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2022, 01:39 PM
Updated : 6 Dec 2022, 01:39 PM

ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা জস বাটলার ও আদিল রশিদের সামনে আরেকটি অর্জনের হাতছানি। ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন এই দুই জন। নভেম্বরের সেরার লড়াইয়ে তাদের সঙ্গে আছেন পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদি।

মাস সেরার লড়াইয়ে থাকা পুরুষ ও নারী ক্রিকেটারদের নাম মঙ্গলবার প্রকাশ করে আইসিসি। মেয়েদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন পাকিস্তানের সিদরা আমিন, থাইল্যান্ডের নাতথাকান চান্থাম ও আয়ারল্যান্ডের গ্যাবি লুইস।

জস বাটলার

নভেম্বরে বাটলারের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে ইংল্যান্ডকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া। ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। সুপার টুয়েলভে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংসে দিয়ে মাস শুরু করেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।

সেমি-ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১০ উইকেটের জয়ে খেলেন ৪৯ বলে ৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস। আর শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে লক্ষ্য তাড়ায় ২৬ রানের ছোট তবে কার্যকর ইনিংস খেলেন তিনি। পাকিস্তানকে ১৩৮ রানে আটকে রেখে ৫ উইকেটে জিতে শিরোপা ঘরে তোলে ইংলিশরা।

গত মাসে মোট চারটি টি-টোয়েন্টি খেলে দুই ফিফটিতে ২০৭ রান করেন বাটলার। পরে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দুটি ওয়ানডে খেললেও সেখানে তেমন কিছু করতে পারেননি তিনি।

আদিল রশিদ

বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে প্রথম তিন ম্যাচে উইকেটশূন্য ছিলেন রশিদ। এই লেগ স্পিনার পরে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান। নিজেকে মেলে ধরে ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ে রাখেন বড় অবদান।

সুপার টুয়েলভে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ‘বাঁচা-মারার’ লড়াইয়ে স্রেফ ১৬ রানে ১ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন রশিদ। ভারতের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে বিধ্বংসী সূর্যকুমার যাদবকে ফেরান তিনি। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে দেন স্রেফ ২০ রান।

ফাইনালে মোহাম্মদ হারিস ও বাবর আজমকে দ্রুত ফিরিয়ে পাকিস্তানকে চেপে ধরার পথ করে দেন রশিদ। শিরোপা লড়াইয়ের ওই ম্যাচে একটি মেডেন নিয়ে রান দেন কেবল ২২।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে একটি ম্যাচ খেলে সেখানেও ছড়ান আলো। ৫৭ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।

শাহিন শাহ আফ্রিদি

চোট কাটিয়ে বিশ্বকাপ দিয়ে মাঠে ফেরেন আফ্রিদি। শুরুতে ধুঁকলেও সময়ের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরেন তিনি। আসরে পাকিস্তানের হয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট নেন বাঁহাতি এই পেসার।

আফ্রিদির সেরা পারফরম্যান্স ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে ‘বাঁচা-মরার’ সুপার টুয়েলভ ম্যাচে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।

সেমি-ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেও অসাধারণ ছিলেন আফ্রিদি। স্রেফ ২৪ রান দিয়ে নেন ফিন অ্যালেন ও কেন উইলিয়ামসনের উইকেট। ইংলিশদের বিপক্ষে ফাইনালে প্রথম ওভারেই অ্যালেক্স হেলসকে বোল্ড করে দেন এই পেসার। ম্যাচের শেষ দিকে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।

নারী ক্রিকেটের তিন মনোনিত:

সিদরা আমিন 

নভেম্বরে ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত খেলেন সিদরা। তিন ম্যাচে একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে ২৭৭ রান করেন পাকিস্তানের এই ওপেনার।

প্রথম ওয়ানডেতে খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৭৬ রানের অপরাজিত ইনিংস। দ্বিতীয় ম্যাচে করেন অপরাজিত ৯১। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের সিরিজটি প্রতিপক্ষকে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করে পাকিস্তান।

নাতথাকান চান্থাম

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থাইল্যান্ডের ক্রমবর্ধমান উন্নতির পথে মূল খেলোয়াড়দের একজন চান্থাম। গত মাসে নেদারল্যান্ডসকে ৪-০ তে হোয়াইটওয়াশ করা ওয়ানডে সিরিজে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। এক সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটিতে রান করেন ২৬৭।

ওয়ানডে অভিষেকেই সেঞ্চুরি উপহার দেন এই ওপেনার। খেলেন ১৩৫ বলে ১০২ রানের ইনিংস।

গ্যাবি লুইস

চতুর্থবারের মতো ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’-এর সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেলেন লুইস। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় পায় আয়ারল্যান্ডের মেয়েরা।

তিন ম্যাচের সিরিজ জয়ে বড় অবদান রাখেন লুইস। প্রথম ও শেষ ম্যাচে ফিফটি উপহার দেন এই ওপেনার। ৭২ গড় ও ১৩০.৯০ স্ট্রাইক রেটে সিরিজে সর্বোচ্চ ১৪৪ রান করেন তিনি।

আইসিসির ভোটিং একাডেমি ও ক্রিকেট সমর্থকদের যৌথ ভোটে নির্বাচন করা হয় মাসের সেরা দুই ক্রিকেটার। ভোটিং একাডেমিতে আছেন জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া সাংবাদিক, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকাররা। তারা ভোট দেন ই-মেইলে, আইসিসির নিবন্ধিত সমর্থকদের ভোট দিতে হয় আইসিসির ওয়েবসাইটে।

সেরার রায়ে ভোটিং একাডেমির ভোট বিবেচনায় নেওয়া হয় শতকরা ৯০ ভাগ, সমর্থকদের ভোট বাকি ১০ ভাগ।