ওভারে ৩১ রান, ম্যাচ জিতিয়ে পুরান বললেন, ‘অপেক্ষায় ছিলাম এমন কিছুর’

অভিশেক শর্মার করা ষোড়শ ওভারে পাঁচ ছক্কায় ৩১ রান নিয়ে লক্ষ্ণৌর জয়ের ভিত গড়ে দেন মার্কাস স্টয়নিস ও নিকোলাস পুরান।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2023, 05:48 PM
Updated : 13 May 2023, 05:48 PM

শেষ ৩০ বলে প্রয়োজন ৬৯ রান। ষোড়শ ওভারে অভিশেক শর্মার ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দিলেন মার্কাস স্টয়নিস ও নিকোলাস পুরান। বাঁহাতি স্পিনারের ওই ওভার থেকে এলো ৩১ রান। এতেই ঘুরে গেল ম্যাচের মোড়। জয়ের ভিত পেয়ে গেল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। দলকে জিতিয়ে ফেরা পুরান বলেন, ওই একটি ওভারের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। 

সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে পার্ট-টাইম স্পিনার হিসেবে মাঝেমধ্যে হাত ঘোরান অভিশেক। ঘরের মাঠে এদিন প্রথম দুই ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেন তিনি, রান দেন কেবল ১১। কিন্তু তৃতীয় ওভারে দেখেন মুদ্রার উল্টো পিঠ। তাকে তুলাধুনা করে ছাড়েন স্টয়নিস ও পুরান। 

ওভারের প্রথম বলে ফুলটস পেয়ে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে ১০০ মিটার লম্বা ছক্কা মারেন স্টয়নিস। পরের বল লেগসাইড দিয়ে ওয়াইড। বৈধ দ্বিতীয় বলে আরেকটি বিশাল ছক্কায় ওড়ান স্টয়নিস। আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় লগ-অফে ধরা পড়েন তিনি। 

স্টয়নিস যেখানে শেষ করেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করেন পুরান। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে গিয়ে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই অভিশেককে ছক্কা হাঁকান তিনি। পরের দুই বলে মারেন আরও দুটি। 

আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে মুখোমুখি হওয়া প্রথম তিন বলেই ছক্কা মারার কীর্তি গড়লেন ক্যারিবিয়ান এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। ম্যাচ শেষে সম্প্রচারক টিভিতে পুরান বলেন, ম্যাচ-আপ বোলার পেয়ে খুশিই ছিলেন তিনি। 

“আমরা বিরতির (দ্বিতীয় স্ট্র্যাটেজিক টাইমআউট) সময় কথা বলছিলাম, মনে হয়েছে ম্যাচ জিততে কিছু ছক্কার প্রয়োজন। ওই মুহূর্তে আমরা জানতাম, তাদের একজন স্পিনার বল করবে, যখনই সে আক্রমণে আসবে অবশ্যই তাকে চেপে ধরতে হবে।” 

“স্টয়নিস তাকে (অভিশেক) প্রথম দুই বলে ছক্কা মারে, কিন্তু তৃতীয় বলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে যায়। বাঁহাতি স্পিনার আমার ম্যাচ-আপ, ক্রিজে যেতে ও বাকি তিন বল খেলতে আমি খুশি ছিলাম। এটাই আমার ইনিংসকে এগিয়ে নেয়, তাই সানরাইজার্সকে এর জন্য ধন্যবাদ। তবে আমিও সত্যি উপভোগ করেছি।”

এক ওভারে ৩১ রানের সুবাদে সমীকরণ সহজ হয়ে যায় লক্ষ্ণৌয়ের। ১৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় পুরানের তাণ্ডবে শেষ ৪ ওভারে প্রয়োজনীয় ৩৮ রান তারা তুলে ফেলে ৪ বল বাকি থাকতেই। ৪ ছক্কা ও ৩ চারে ১৩ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা এই কিপার-ব্যাটসম্যান বলেন, অভিশেকের ওভারটি কাজে লাগাতেই হতো তাদের। 

“এই খেলা ঝুঁকি নেওয়ার। ঝুঁকি না নিলে পুরস্কার পাওয়া যায় না। আমি মনে করি, এই ম্যাচে ঝুঁকি নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর এটা ম্যাচ-আপ হয়ে গেলে তো কাজে লাগাতেই হবে।” 

২ ছক্কা ও ৭ চারে ৪৫ বলে ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন প্রেরাক মানকড়। মন্থর শুরুর পর ২৫ বলে ৪০ রান করে স্টয়নিস। এরপর তো পুরান ঝড়। লক্ষ্ণৌ অধিনায়ক ক্রুনাল পান্ডিয়া বললেন, স্টয়নিস ও পুরানের ওপর অগাধ বিশ্বাস ছিল তাদের। 

“দল ও ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি দরকার, তা হলো বিশ্বাস। নিজেদের ওপর আমাদের ওই আস্থা ছিল। সঙ্গে পুরান, স্টয়নিস, তারা বিশেষ কিছু করতে সক্ষম।”

“পুরান অসাধারণ কিছু করতে পারে, সে বিশেষ প্রতিভার এক ক্রিকেটার। আমি যখনই তাকে ব্যাটিং করতে দেখি, তার নিজের প্রতি যে আত্মবিশ্বাস এবং আস্থা আছে, তা অসাধারণ। আমাদের বিশ্বাস ছিল, এই রান তাড়া করতে পারি।” 

স্ট্র্যাটেজিক টাইমআউটে কোনো বিশেষ বার্তা ছিল কিনা ব্যাটসম্যানদের জন্য, এমন প্রশ্নের জবাবে ক্রুনাল বলেন, কথাবার্তা ছিল খুবই সাধারণ। 

“আমরা জানতাম যে, আমাদের আগ্রাসী হতেই হবে। শেষ ৬ ওভারে প্রায় ৮০-৯০ (৮০) রান প্রয়োজন ছিল। ওই ওভারে আক্রমণ করতেই হতো। ভাগ্যক্রমে, অভিশেক ওই ওভারটি করায় আমাদের কাজে দিয়েছে। সে পাঁচটি ছক্কা হজম করেছে এবং এটাই ম্যাচের মোমেন্টাম ঘুরিয়ে দিয়েছে।”