মুশফিকুর রহিমের অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড আউট নিয়ে বেশি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের চেষ্টা করলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ।
Published : 06 Dec 2023, 07:13 PM
মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন ১৫ উইকেটের ১৩টি নিয়েছেন স্পিনাররা, একটি নিউ জিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি। বাকি উইকেটটি দিনের সবচেয়ে আলোচিত আউট। ক্রিকেটের অদ্ভুত আউটগুলোর একটি ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ এর মঞ্চায়ন করেছেন মুশফিকুর রহিম। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের এই কাণ্ডে কোনো রকম ব্যাখ্যায় না গিয়ে নির্দিষ্ট মুহূর্তের কথা বলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বাংলাদেশের ইনিংসের ৪১তম ওভারের ঘটনা। কাইল জেমিসনের স্টাম্পের ওপর করা ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন মুশফিক। বল তার ব্যাটে লাগার পর পপিং ক্রিজে ড্রপ করে আরও ডান দিকে সরে যাচ্ছিল। তখন ব্যাখ্যাতীতভাবে ডান হাত দিয়ে বলটি আরও ঠেলে দেন মুশফিক।
সঙ্গে সঙ্গে ‘অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড’ আউটের আবেদন করেন জেমিসন। অধিনায়ক টিম সাউদিসহ বাকিরাও যোগ দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জেমিসনকে কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করেন মুশফিক। তবে সর্বনাশ যা হওয়ার হয়ে যায় আগেই। টিভি রিপ্লে দেখে মুশফিককে আউটের সিদ্ধান্ত জানান থার্ড আম্পায়ার।
ফেরার আগে ৮৩ বলে এক ছক্কা ও তিন চারে ৩৫ রান করেন মুশফিক। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এভাবে আউট হলেন তিনি। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তার অমন কাণ্ডের পেছনের কারণ বোঝানোর চেষ্টা করেন মিরাজ।
“এটা তো ইচ্ছাকৃতভাবে হয় না। খেলার ফ্লোতে হয়ে গেছে। জিনিসটা হয় কী, তিনি তো ইচ্ছাকৃত করেননি। জেনেশুনে কেউ কখনও আউট হতে চায় না।”
“খেলার পরিস্থিতিতে অনেক সময় অনেকের মাথায় অনেক কিছু থাকে। আমার মনে হয়, মুশফিক ভাই যেভাবে আউট হয়েছেন, এটা খেলার তখনকার ফ্লোতে (বলের কাছে হাত) চলে গেছে।”
গত মাসেই বিশ্বকাপে আরেকটি অদ্ভুত আউট দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ’টাইমড আউট’ করে বাংলাদেশ। মাসখানেকের ব্যবধানে আরেকটি অদ্ভুত আউটে নিজেরাই ভুক্তভোগী হয়ে, ওই ম্যাচের উদাহরণ টানলেন মিরাজ।
“আমরা বিশ্বকাপে একটা টাইমড আউট পেয়েছি। ওখানে টাইমড আউট হয়েছিল শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান। আজকে মুশফিক ভাই যে আউটটা হলো, এটা দেখেন তখনের ওই প্রবাহে (ফ্লোতে) হয়ে গেছে।”
“আমি যখন ব্যাটিং করি, তখন একটা শট খেলার পর উইকেটে যখন বলটা আসে, তখন কিন্তু অনেক সময় খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয় কী করতে হবে, না করতে হবে। মুশফিক ভাই যেটা করেছে, এটা তখনের ফ্লোতে হয়ে গেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে হয়নি। তা (ইচ্ছাকৃতভাবে) করা হলে তো ব্যাটসম্যানের জন্য কঠিন, আউট হয়ে যাবে।”
স্রেফ ৪৭ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে জুটি গড়েন মুশফিক, তার বিদায়েই ভাঙে ৫৭ রানের ওই জুটি। সারা দিনে দুই দল মিলিয়ে সেটিই একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। যা ভাঙতে কিনা নিজ থেকে কিছুই করতে হয়নি নিউ জিল্যান্ডকে।
সফরকারীদের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মিচেল স্যান্টনার তাই খানিক মজাই করলেন মুশফিকের অবস্ট্রাক্টিং দা ফিল্ড আউট নিয়ে।
“সম্ভবত তার (মুশফিক) জন্য ভালো কিছু ছিল না (হাসি)। কারণ সে খুব ভালো খেলছিল। তখনকার প্রেক্ষাপটে সেটা আমাদের জন্য খুব কার্যকর ছিল। যেহেতু সে ও (শাহাদাত হোসেন) দীপু ভালো খেলছিল এবং তাদের জন্য ভালো জুটি ছিল।”
মুশফিক-শাহাদাতের জুটিতে ম্যাচে নিজেদের করণীয় সম্পর্কেও যেন ধারণা পেয়েছেন স্যান্টনার।
“আমার মতে, আগামীকাল আমরা যদি এমন ছোট কিছু জুটিও পাই... পুরো ম্যাচেই আসলে ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো কিছু হবে না। তাই আমার মনে হয়, সামনের দিকে এসব ছোট ছোট জুটি গুরুত্বপূর্ণ হবে।”