থার্ডম্যান সীমানায় করিম জানাতের হাতের ফাঁক গলে যখন বেরিয়ে গেল বল, বোলার সৈয়দ খালেদ আহমেদ তখন হতাশায় বসে পড়লেন মাথায় হাত দিয়ে। যে শটে আউট হওয়ার কথা নাজমুল হোসেন শান্ত, সেটিই হয়ে গেল ছক্কা। পরে ওভারেই আরেক প্রান্তে উধাও তিন উইকেট! কিন্তু সেই শান্তকে আর ফেরানো গেলই না। গোটা ২০ ওভার ক্রিজে কাটিয়ে দারুণ ব্যাটিংয়ে সিলেটকে তিনি এনে দিলেন লড়ার মতো রান।
ইনিংসের প্রথম থেকে শেষ বলটি পর্যন্ত খেলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় শান্ত রান ৬৬ বলে অপরাজিত ৮৯। এবারের বিপিএলে তার দ্বিতীয় ফিফটি এটি।
শান্তর ইনিংসের ভেলা চেপে বিপিএলে মঙ্গলবার ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে সিলেট স্ট্রাইকার্সের রান ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩।
টস জিতে বোলিং নেওয়া বরিশাল প্রথম ওভারেই ফেরাতে পারত শান্তকে। ম্যাচের চতুর্থ বলে খালেদের অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বলে স্ল্যাশ করেন তিনি। থার্ডম্যান সীমানায় জানাতের উঁচিয়ে ধরা হাত ছুঁয়ে বল পার করে সীমানা। পরের বলে ফুল টস পেয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান শান্ত।
১০ রানের প্রথম ওভারের পর দ্বিতীয় ওভারে তিন উইকেট নিয়ে সিলেটকে স্তম্ভিত করে দেন ওয়াসিম। ‘গোল্ডেন ডাক’ পেয়ে বিদায় নেন জাকির হাসান ও মুশফিকুর রহিম। মাঝে একটি চার মেরে আউট হয়ে যান আঙুলের চোট কাটিয়ে ফেরা তৌহিদ হৃদয়ও।
সিলেটের ব্যাটিং লাইন আপের যে বাস্তবতা, তাতে ওই তিন উইকেটের ওভারের পর শান্তর কাছে দলের চাওয়া ছিল লম্বা সময় ক্রিজে থেকে। ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান সেই দাবি মেটান পুরোপুরি। ঘুরে দাঁড়ানোর জুটিতে সঙ্গী হিসেবে পান তিনি টম মুরসকে।
শান্ত মনোযোগ দেন ইনিংস লম্বা করায়। ইংলিশ ব্যাটসম্যান মুরস চেষ্টা করেন রান বাড়াতে। ষষ্ঠ ওভারের পর শান্ত আরেকটি বাউন্ডারি মারেন পঞ্চদশ ওভারে। তবে এক-দুই করে রান বাড়ান তিনি। মুরস সুযোগ পেলেই সাজা দেন বাজে বলকে।
৮১ রানের জুটি শেষ হয় মুরসের বিদায়ে। বিপিএল অভিষেকে ৩০ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন ২৬ বছর বয়সী বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
শান্ত তখন ফিফটির দুয়ারে। ওয়াসিমের বলে দুর্দান্ত পুল শটে বাউন্ডারিতে তার পঞ্চাশ হয় ৪৮ বলে।
এরপর শেষ সময়ের দাবিও তিনি মেটান দারুণ ব্যাটিংয়ে। পুল, ড্রাইভ, স্কুপ, ফ্লিক, কাট, মাঠের চারপাশে শট খেলে বাড়াতে থাকেন রান। অষ্টাদশ ওভারে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে চার মানে তিনি তিনটি। ইনিংসের শেষ বলেও কামরুলকে বাউন্ডারি মেরে মাঠ ছাড়েন তিনি অপরাজিত থেকে।
ফিফটি করার পর ১৮ বলে শান্ত করেন ৩৫ রান। শেষ ৬ ওভারে সিলেট তোলে ৭৬ রান।