রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম বলেই দিলারা আক্তারকে ফেরালেন নাহিদা আক্তার। এরপর জাতীয় দলের বাঁহাতি স্পিনার একে একে নিলেন আরও ৪টি উইকেট। তার দারুণ বোলিংয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রইল রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদের।
ঢাকা প্রিমিয়ার নারী ক্রিকেট লিগের চলতি আসরে প্রথম বোলার হিসেবে ৫ উইকেট পেয়েছেন নাহিদা। যার সৌজন্য বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘকে ৪৫ রানে হারিয়েছে রূপালী ব্যাংক। ২৬৪ রান তাড়ায় খেলাঘর গুটিয়ে গেছে ২১৯ রানে।
৫ ম্যাচে এটি রূপালী ব্যাংকের পঞ্চম জয়, তাদের একটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে।
৯.৪ ওভারে স্রেফ ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন নাহিদা। চলতি লিগে এখন পর্যন্ত এটিই সেরা বোলিং। পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে ১০ বলে ২১ রানের ইনিংসের সৌজন্যে তার হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড়ো শুরু করেন রূপালী ব্যাংকের ওপেনার সাথি রানি বর্মণ। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি। ২টি করে চার-ছয়ে ১৩ বলে ২২ রান করেন ফেরেন তিনি। আরেক ওপেনার ফারজানা আক্তার করেন ৪৮ বলে ৩০ রান।
তৃতীয় উইকেটে ৭৩ রান যোগ করেন ফারজানা হক ও নিগার সুলতানা। ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৪১ রানে থামেন অধিনায়ক নিগার। চলতি লিগে নিজের দ্বিতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ফারজানা হক করেন ৫৪ রান।
এরপর দলকে এগিয়ে নেন ভারতীয় অলরাউন্ডার মুক্তা রবিন্দ্র মাগ্রে। ৫ চার ও ১ ছয়ে ৫৭ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ দিকে ক্যামিও ইনিংসে আড়াইশ পার করান নাহিদা।
রান তাড়ায় শুরুতে দিলারাকে হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে ধাক্কা সামাল দেন মোসাম্মত সানজিদা ও লতা মণ্ডল। অধিনায়ক লতা ৩৩ রানে ফিরলে ভাঙে ৭৫ রানের জুটি।
পঞ্চাশ ছুঁয়ে দলের আশা বাঁচিয়ে রেখে খেলতে থাকেন সানজিদা। তাকে থামান আশরাফি ইয়াসমিন। ৯৯ বলের ইনিংসে ১১ চার ও ১ ছয়ে ৭০ রান করেন খেলাঘরের ওপেনার।
এরপর স্বর্ণা আক্তার (২৫ বলে ৩৩), সুলতানা খাতুন (১৭ বলে ১৪), ফাহিমা খাতুনরা (২২ বলে ১৯) চেষ্টা করলেও লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ: ৫০ ওভারে ২৬৪/৭ (সাথি ২২, ফারজানা আক্তার ৩০, ফারজানা হক ৫৪, নিগার ৪১, মুক্তা ৫৭, রিতু ২২, শরিফা ২, নাহিদা ২১*, তাজিয়া ৭*; পূজা ৪-০-১৯-০, সানজিদা মেঘলা ৯-০-৫৪-০, সুলতানা ১০-০-৪৭-২, তাজ ২-০-১১-১, বৃষ্টি ৫-০-১৬-১, ফাহিমা ১০-০-৬৭-২, স্বর্ণা ১০-০-৪৯-১)
খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘ: ৪৬.৪ ওভারে ২১৯ (দিলারা ০, মোসাম্মত সানজিদা ৭০, লতা ৩৩, তাজ ১২, স্বর্ণা ৩৩, সুলতানা ১৪, ফাহিমা ১৯, সানজিদা মেঘলা ৫, জান্নাতুল ২৪, পূজা ১, বৃষ্টি ১*; নাহিদা ৯.৪-১-২২-৫, রিতু ১০-০-৪৪-২, আশরাফি ৭-১-৪২-১, মুক্তা ৯-০-৬০-১, দিপা ৯-১-৩১-১, শরিফা ২-০-১৬-০)
ফল: রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ ৪৫ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: নাহিদা আক্তার
রুমানা-সানজিদা ফিফটি, মোহামেডানের ২১৫ রানের জয়
শুরুর বিপর্যয় সামলে বড় জুটি গড়লেন রুমানা আহমেদ ও সানজিদা ইসলাম। দুজনই ফিফটি ছুঁয়ে মোহামেডানকে স্পোর্টিং ক্লাবকে এনে দিলেন আড়াইশ ছুঁইছুঁই স্কোর। যার ধারেকাছেও যেতে পারেনি কেরানিগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমি।
বিকেএসপির এক নম্বর মাঠে মোহামেডান জিতেছে ২১৫ রানে! ২৪৭ রানের লক্ষ্যে স্রেফ ৩১ রানেই গুটিয়ে গেছে কেরানিগঞ্জ।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৭৪ রানের ইনিংসের পর বল হাতেও ২ উইকেট নেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার রুমানা। তিনিই পান ম্যাচ সেরার পুরস্কার। সানজিদা খেলেন ৭৫ রানের ইনিংস।
স্রেফ ১১ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর দুজনের জুটিতে আসে ১৪৭ রান। ১২৩ বলের ইনিংসে ৫ চারের সঙ্গে ২ ছয় মারেন রুমানা। সানজিদা ১০২ বলে মারেন ৫টি চার।
সোবহানা মোস্তারি খেলেন ২টি করে চার-ছয়ে ২৫ বলে ৩৪ রানের ইনিংস।
কেরানিগঞ্জের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন কনা আক্তার। শাহানাজ পারভিনের শিকার ৩টি।
রান তাড়ায় রচনা আক্তার তৃপ্তি (২২ বলে ১০) ছাড়া কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। পাঁচ ব্যাটার আউট হন শূন্য রানে।
ইসমত জাহান নেন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৪৬/৮ (জাসিয়া ১, শারমিন ১, আয়েশা ১, রুমানা ৭৪, সানজিদা ৭৫, সোবহানা ৩৪, সালমা ৭, ইসমত ১, ফাল্গুনি ১৮*, ফারজানা ৫*; কনা ১০-০-৫৪-৪, শাহানাজ ১০-০-৩১-৩, ফারিয়া ১০-১-৩৯-০, মাকতুবা ৮-০-৫৪-১, শারমিন ১০-০-৫২-০, শ্রাবণী ২-০-১৩-০)
কেরানিগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমি: ২৯.১ ওভারে ৩১ (জামিলা ১, রচনা ১০, সুমাইয়া ০, শাহানাজ ৩, শোভা ২, মাকতুবা ০, শারমিন ১, কনা ০, মুন্নি ০, শ্রাবণী ২*, ফারিয়া ০; সোবহানা ৪-১-৯-১, সালমা ৫-১-৬-১, রুমানা ৪.১-২-৪-২, আয়েশা ৬-৩-৩-১, শানু ৫-১-৫-১, ইসমত ৫-৩-৩-৩)
ফল: মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ২১৫ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: রুমানা আহমেদ
শামিমার ফিফটিতে জিতল আবাহনী
দারুণ বোলিংয়ে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিকেএসপিকে নাগালের মধ্যে রাখলেন সাবিকুন নাহার, ইশমা তানজিমরা। পরে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আবাহনী লিমিটেডকে জয় এনে দিলেন শামিমা সুলতানা, মুর্শিদা আক্তাররা।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে ৩ উইকেটে জিতেছে আবাহনী। ১৮৭ রানের লক্ষ্য ৭ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলেছে তারা।
৭৪ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন আবাহনীর অভিজ্ঞ কিপার-ব্যাটার শামিমা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বিকেএসপির হয়ে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন সুমাইয়া আক্তার। চলতি লিগে এটি চার তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। ২৬৬ রান নিয়ে লিগে তিনিই এখন সবার ওপরে।
৯ ওভারে এক মেডেনসহ ৩০ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন সাবিকুন। ইশমার ৩ উইকেটের জন্য খরচ ৩১ রান।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৮২ রান যোগ করেন মুর্শিদা ও শামিমা। ৪১ রান করে আউট হন মুর্শিদা। দলকে দেড়শ পার করিয়ে ফেরেন শামিমা। ১১৭ বলের ইনিংসে ৫ চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মারেন তিনি।
জাহানারা আলম (১৫) ও ভারতীয় শিভানি সিংয়ের (১৭) ছোট তবে গুরুত্বপূর্ণ দুইটি ইনিংসে জয় নিশ্চিত হয় আবাহনীর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: ৪৫.৪ ওভারে ১৮৬ (ছোঁয়া ২৬, ইভা ০, উন্নতি ২২, সুমাইয়া ৫৭, মিষ্টি ১, রাবেয়া ১৭, জান্নাতুল ফেরদৌস ২, মারুফা ১৮, মাইমুনা ২, ফারজানা ১৬*, নিশিতা ৮; জাহানারা ৯-১-৩৪-১, হ্যাপি ৩-০-২০-০, ইশমা ৮.৪-১-৩১-৩, সাবিকুন ৯-১-৩০-৩, ফাতেমা জাহান ৮-০-৩৪-১)
আবাহনী লিমিটেড: ৪৮.৫ ওভারে ১৮৮/৭ (মুর্শিদা ৪১, শামিমা ৭৪, ইশমা ৩, আফিয়া ৭, শম্পা ৮, জাহানারা ১৫, শিভানি ১৭*, ফাতেমা আক্তার ৮, ফাতেমা জাহান ৫*; মারুফা ৯-২-৩২-১, ছোঁয়া ১০-০-৩৫-০, নিশিতা ১০-০-৫১-৩, ফারজানা ৪-০-১৪-০, রাবেয়া ৯.৫-০-৩৪-২, মাইমুনা ৬-১-১৭-১)
ফল: আবাহনী লিমিটেড ৩ উইকেটে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: শামিমা সুলতানা