চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৫৫ রানে এগিয়ে শ্রীলঙ্কা।
Published : 01 Apr 2024, 09:58 AM
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ২৫ ওভারে ১০২/৬
চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বড় সংগ্রহের পর এবার ব্যাটিংয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ। শুরুটা অবশ্য খারাপ করেনি তারা। দ্বিতীয় দিন শেষ বিকালে হারিয়েছে একটি উইকেট।
১ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে সোমবার ব্যাটিংয়ে নামবে বাংলাদেশ। জাকির হাসান ৩৯ বলে ২৮ ও নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম ৯ বলে ০ রানে অপরাজিত। আউট হওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান জয় করেন ৪২ বলে ২১ রান।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ৫৩১ রানে। ফলোঅন এড়াতে তাই আরও ২৭৭ রান করতে হবে বাংলাদেশকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে):
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫ ওভারে ৫৫/১ (জয় ২১, জাকির ২৮*, তাইজুল ০*; ভিশ্ব ৩-১-১২-০, আসিথা ৪-০-২১-০, কুমারা ৪-৩-৪-১, জায়াসুরিয়া ৪-১-১৩-০)
তৃতীয় দিনের শুরুতে স্পিনার ব্যবহার করল শ্রীলঙ্কা। ক্রিজে দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জাকির হাসান ও তাইজুল ইসলাম থাকাতেই হয়তো প্রথম ওভারে বোলিংয়ে এলেন ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা। লঙ্কান অধিনায়কের অফ স্পিনে একটি বাউন্ডারিসহ ৫ রান নিলেন জাকির।
নিজের পরের ওভারটি মেডেন নেন ধানাঞ্জয়া। মাঝে লাহিরু কুমারার ওভারে একটি বাউন্ডারি মারেন জাকির।
দিনের ষষ্ঠ ওভারে প্রথমবার কঠিন পরীক্ষায় পড়লেন জাকির হাসান। লাহিরু কুমারার অফ-মিডল স্টাম্পে করা লেংথ ডেলিভারি তীক্ষ্ণভাবে এঙ্গেলে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে ছুঁয়ে যায় জাকিরের ব্যাটের বাইরের কানা।
দ্বিতীয় স্লিপে সামনে হাত এগিয়ে বল ধরেন কামিন্দু মেন্ডিস। তবে অল্পের জন্য বিপদ ঘটেনি জাকিরের। অনিশ্চয়তা থাকায় টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠানো হয় সিদ্ধান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায়, কামিন্দুর হাতে জমা পড়ার আগেই মাটি স্পর্শ করেছে বল।
তখন ৩৯ রানে ছিলেন জাকির।
২২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৭২ রান। জাকির ৭০ বলে ৪২ ও তাইজুল ইসলাম ২০ বলে ৩ রানে খেলছেন।
শ্রীলঙ্কার দুই পেসার লাহিরু কুমারা ও ভিশ্ব ফার্নান্দোর চ্যালেঞ্জ সামলে প্রতিরোধ গড়েছেন জাকির হাসান ও তাইজুল ইসলাম। সকালের প্রথম ১২ ওভারে কোনো বিপদ ঘটতে দেননি তারা। সাবধানী ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ২৫ রান।
পিচের ফাটল কাজে লাগাতে টানা লেংথ ও ব্যাক অব লেংথে বোলিং করছেন কুমারা। এরই মধ্যে দুইবার জাকিরের ব্যাটের বাইরের কানাও ছুঁয়ে গেছে বল। তবে স্লিপের ফিল্ডার পর্যন্ত পৌঁছায়নি সেগুলো। তাই বিপদ ঘটেনি।
এর বাইরে খুব একটা অস্বস্তিতে পড়তে দেখা যায়নি দুই ব্যাটসম্যানকে। দ্বিতীয় দিনের শেষ দিকে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাইজুলও বেশ আস্থার সঙ্গে খেলছেন।
২৭ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৮০ রান। জাকির ৮৬ বলে ৪৭ ও তাইজুল ৩৪ বলে ৫ রানে অপরাজিত।
জুটি ভাঙতে মরিয়া শ্রীলঙ্কা হারাল তাদের প্রথম রিভিউ। জাকির হাসানের বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের আবেদন টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠালেও কোনো লাভ হয়নি সফরকারীদের।
ভিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন জাকির। বল উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে জমা পড়তেই জোরাল আবেদন। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার।
লঙ্কানরা রিভিউ নিলে রিপ্লেতে দেখা যায়, বল ও ব্যাটের মাঝে দূরত্ব ছিল স্পষ্ট। মূলত জাকিরের ব্যাট মাটিতে আঘাত করায় শব্দেই বিভ্রান্ত হন বোলার-ফিল্ডাররা। সে সময় ৪৮ রানে ছিলেন জাকির।
প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার পরের ওভার শেষে দেওয়া হয় পানি পানের বিরতি। দিনের প্রথম ঘণ্টায় খুব সাবধানী ব্যাটিংয়ে ১৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩০ রান করেছে বাংলাদেশ।
৩০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৮৫ রান। জাকির ৯৫ বলে ৪৯ ও তাইজুল ৪৩ বলে ৮ রানে খেলছেন।
প্রথম টেস্টের ব্যর্থতা ঝেড়ে চট্টগ্রামে ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ করলেন জাকির হাসান। ৯৭ বলে ৮ চারে মাইলফলক স্পর্শ করলেন বাঁহাতি ওপেনার।
এই সংস্করণে ১৩ বার ব্যাটিংয়ে নেমে জাকিরের পঞ্চম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস এটি।
দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে ইতিবাচক শুরু করেন জাকির। বাজে বল পেলে যেমন বাউন্ডারি মেরেছেন তেমনি সাবধানে খেলেছেন ভালো লাইন-লেংথের ডেলিভারি।
সোমবারও ধরে রাখেন একই ছন্দ। লাহিরু কুমারা ও ভিশ্ব ফার্নান্দোর কয়েকটি ডেলিভারিতে অস্বস্তিতে পড়লেও বিপদ ঘটেনি তারা। শেষ পর্যন্ত তিনি পৌঁছালেন পঞ্চাশের ঠিকানায়।
অন্য প্রান্তে তাইজুল ইসলামও ব্যাটিং করছেন পরম আস্থার সঙ্গে। এরই মধ্যে দুজন মিলে কাটিয়ে দিয়েছেন দিনের প্রথম এক ঘণ্টার বেশি। দুজনের জুটিতে এরই মধ্যে এসেছে ৪৮ রান।
৩২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৯৫ রান। জাকির ১০০ বলে ৫৪ ও তাইজুল ৫০ বলে ১৩ রানে অপরাজিত।
ভিশ্ব ফার্নান্দোর দারুণ ডেলিভারিতে ফিরলেন জাকির হাসান। ১০০ রানের আগে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
ওভার দা উইকেট থেকে টানা বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারি করছিলেন ভিশ্ব। হুট করেই লেংথ থেকে একটি ডেলিভারি তীক্ষ্ণভাবে ঢুকে যায় ভেতরে। এর কোনো জবাব দিতে পারেননি জাকির। ক্রিজে জমে গিয়ে এলোমেলো হতে দেখেন স্টাম্প।
৮ চারে ১০৪ বলে ৫৪ রান করে ফিরলেন জাকির। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন। আগের দিন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা তাইজুল ইসলাম রয়ে গেছেন উইকেটে।
৩৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৯৯ রান। ৫৬ বলে ১৭ রানে খেলছেন তাইজুল।
ব্যর্থতার ধারা আরেকটু দীর্ঘায়িত করে অল্পেই ড্রেসিং রুমে ফিরলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার ফুল লেংথ ডেলিভারি অন ড্রাইভ করে সোজা শর্ট মিড উইকেট ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
১১ বলে স্রেফ ১ রান করেন শান্ত। এ নিয়ে সিরিজের তিন ইনিংসেই দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে থামলেন তিনি।
জাকির হাসানের পর দ্রুতই শান্তর বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। পাঁচ নম্বরে নেমেছেন মুমিনুল হক। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রেখেছেন নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম।
৩৬ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১০১ রান। ৫৭ বলে ১৮ রানে খেলছেন তাইজুল।
দিনের প্রথম ঘণ্টায় দারুণ ব্যাটিংয়ের পর পাঁচ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। আস্থার সঙ্গে একপ্রান্ত আগলে রাখা তাইজুল ইসলামকে এবার ফেরালেন ভিশ্ব ফার্নান্দো।
অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলার চেষ্টা করেন তাইজুল। তার ব্যাটের ভেতরের কানা ছুঁয়ে বল আঘাত করে লেগ স্টাম্পে। সমাপ্তি ঘটে তাইজুলের ৬১ বলে খেলা ২২ রানের ইনিংসের।
১ উইকেটে ৯৬ থেকে ৪ উইকেটে ১০৫ রানে পরিণত হয়ে চাপে বাংলাদেশ। ক্রিজে দুই নতুন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসান।
সকালের সূর্য যেমন সবসময় সারা দিনের আভাস দেয় না, তেমনি চট্টগ্রাম টেস্টে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে শুরুর সঙ্গে মেলেনি বাংলাদেশের পরের অংশের চিত্র।
প্রথম ঘণ্টার মতো দ্বিতীয়টিতেও ৩০ রান করে স্বাগতিকরা। তবে প্রথমবারে কোনো উইকেট না হারালেও দ্বিতীয় ঘণ্টায় ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গেছে তারা।
তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত ৪১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১১৫ রান। এখনও ৪১৬ রানে পিছিয়ে তারা। ফলো-অন এড়াতে করতে হবে আরও ২১৭ রান।
অথচ গোছানো ব্যাটিংয়ে দিনের প্রথম ঘণ্টা বেশ ভালোভাবে কাটান আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকির হাসান ও তাইজুল ইসলাম।
পঞ্চাশ ছুঁয়ে ভিশ্ব ফার্নান্দোর ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে বোল্ড হন জাকির। ক্রিজে গিয়ে টিকতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। শর্ট মিড উইকেটে পেতে রাখা ফাঁদে ধরা পড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বিরতির কিছুক্ষণ বাকি থাকতে ভিশ্বর আরেকটি ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ফেরেন তাইজুল।
চাপ সামাল দেওয়ার অভিযানে এখন ক্রিজে সাকিব আল হাসান ও মুমিনুল হক।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর শুরুতেই ধাক্কা খেল বাংলাদেশ। আম্পায়ার্স কলে এলবিডব্লিউ হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরলেন সাকিব আল হাসান।
৪৫তম ওভারে প্রথম বলে আসিথা ফার্নান্দোর শর্ট ডেলিভারিতে বাউন্ডারি মারেন সাকিব। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে পরের বল ভেতরে ঢোকান আসিথা। অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হন সাকিব। বল আঘাত করে প্যাডে।
আবেদনের চেয়ে বরং উদযাপনই করতে থাকেন আসিথা। সাড়া দেন আম্পায়ারও। কিছুক্ষণ ভেবে রিভিউ নেন সাকিব।
রিপ্লেতে দেখা যায়, লেগ স্টাম্পের বাইরের অংশ হালকা ছুঁয়ে যেত বল। মাঠের আম্পায়ার 'আউট' দেওয়ায় তাই বহাল থাকে ওই সিদ্ধান্ত। অন্যথায় হয়তো বেঁচে যেতেন সাকিব।
প্রায় এক বছর পর টেস্টে ফিরে প্রথম ইনিংসে ২৩ বলে ১৫ রান করেছেন সাকিব। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস।
একই ওভারে সাকিব আল হাসানের পর লিটন কুমার দাসের উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ১৩০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফলো-অনের শঙ্কায় স্বাগতিকরা।
আসিথা ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি দারুণ কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন। পরের বলে লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা মেরে কট বিহাইন্ড হন কিপার-ব্যাটসম্যান।
৪৫ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩০ রান। এখনও শ্রীলঙ্কার চেয়ে ৪০১ রানে পিছিয়ে তারা। ফলো-অন এড়াতে করতে হবে আরও ২০২ রান।
কঠিন এই চ্যালেঞ্জে এখন ক্রিজে মুমিনুল হক ও শাহাদাত হোসেন।
উইকেটে টিকে থাকার কোনো মানসিকতাই দেখাতে পারছেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। বিশাল রানের বোঝা মাথায় নিয়ে উইকেট ছুড়ে আসার প্রতিযোগিতায়ই যেন নামতে চাইছেন না তারা। সবশেষ এর শিকার হতে পারতেন শাহাদাত হোসেন। অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন তিনি।
প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার হালকা ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি সামনের পায়ে এসে খেলার চেষ্টায় সহজ ক্যাচ তুলে দেন শাহাদাত। কিন্তু ফলো থ্রুতে সহজ ফিরতি ক্যাচটি নিতে পারেননি জায়াসুরিয়া। ফলে ৭ রানে বেঁচে যান শাহাদাত। আরও বিপদের হাত থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৪১ রান। শাহাদাত ২৬ বলে ৭ ও মুমিনুল হক ৩১ বলে ৭ রানে খেলছেন।
জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না শাহাদাত হোসেন। আর মাত্র ১ রান যোগ করে ফিরলেন ড্রেসিং রুমে। ৭ উইকেট হারিয়ে ফলো-অনের শঙ্কায় বাংলাদেশ।
লাহিরু কুমারার অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারি দূর থেকে খোঁচা মারেন শাহাদাত। বেশ নিচু হয়ে দ্বিতীয় স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন কামিন্দু মেন্ডিস।
প্রথম দেখায় নিশ্চিত হতে পারছিলেন না মাঠের দুই আম্পায়ার। তাই পাঠানো হয় টিভি আম্পায়ারের কাছে। রিপ্লে দেখে তৃতীয় আম্পায়ার নিশ্চিত হন, ক্যাচ নেওয়ার সময় বলের নিচেই ছিল কামিন্দুর আঙুল। তাই বিদায়ঘণ্টা বাজে ৮ রান করা শাহাদাতের।
৫৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৪৮ রান। ফলো-অন এড়াতে এখনও ১৮৪ রান প্রয়োজন তাদের। ক্রিজে শেষ দুই স্বীকৃতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
শাহাদাত হোসেনের পর জীবন পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। অল্পেই ফিরলেন ড্রেসিং রুমে। ১৬৫ রানে অষ্টম উইকেট হারিয়ে ফলো-অনের দুয়ারে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ।
প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা আর্ম ডেলিভারি ভুল লাইনে ডিফেন্ড করেন মিরাজ। বল আঘাত করে তার পেছনের প্যাডে। জোরাল আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি মিরাজের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে জায়াসুরিয়ার ৪০০তম শিকার তিনি।
৬২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৬৫ রান। ৬২ বলে ২৩ রানে খেলছেন মুমিনুল হক। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
ফলো-অন এড়াতে প্রয়োজন আরও ১৬৭ রান।
অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের যাওয়া-আসার মাঝে দায়িত্বশীলতা পরিচয় দিচ্ছেন মুমিনুল হক। এরই মধ্যে তিনি পূর্ণ করেছেন টেস্ট ক্রিকেটে ৪ হাজার রান।
মাইলফলক থেকে ২৫ রান দূরে থেকে ম্যাচটি শুরু করেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ভিশ্ব ফার্নান্দোর বলে কাভার ড্রাইভে ২ রান নিয়ে তা স্পর্শ করেন তিনি।
এই সংস্করণে ৪ হাজার রান করা বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান মুমিনুল। আগের তিন জন মুশফিকুর রহিম (৫৬৭৬), তামিম ইকবাল (৫১৩৪) ও সাকিব আল হাসান (৪৪৬৯)।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২টি সেঞ্চুরিও মুমিনুলের। এর সঙ্গে ১৭টি ফিফটিও রয়েছে তার।
একই ইনিংসে বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে ১ হাজার রান পূর্ণ করেছেন মুমিনুল। আগের দুজন মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিক।
দীর্ঘ সময় উইকেটে কাটানোর পর আসিথা ফার্নান্দোর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন মুমিনুল হক। ইয়র্কার লেংথ ডেলিভারি অন সাইডে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
প্যাডে লাগতেই জোরাল আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিতে দুইবার ভাবেননি মুমিনুল। রিপ্লেতে দেখা যায়, 'উইকেট' এর বেলায় এসেছে আম্পায়ার্স কল। অর্থাৎ মাঠের আম্পায়ার আউট দেওয়ায় বিদায়ঘণ্টা বাজে ৮৪ বলে ৩৩ রান করা মুমিনুলের।
তার বিদায়ে নবম উইকেটের পতন ঘটায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় সেশনের সময়।
৬৮ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৭৮ রান। ফলো-অন তো বটেই, আরও একবার দুইশ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় তারা।
আসিথা ফার্নান্দোর ইয়র্কারের জবাব দিতে পারলেন না সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ১৭৮ রানে অলআউট হয়ে গেল বাংলাদেশ। এ নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে দুইশ ছুঁতে পারল না তারা। পাঁচটিই ঘরের মাঠে।
সবশেষ ২০০৪ সালে ঘরের মাঠে টানা পাঁচ ইনিংসে দুইশ ছুঁতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। প্রায় দুই দশ পর নিউ নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ইনিংসে ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ইনিংসে দুইশর আগে অলআউট হলো তারা।
দলে ফিরে প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিলেন আসিথা। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন জাকির হাসান, ৫৪ রান। এছাড়া ত্রিশ ছুঁতে পেরেছেন শুধু মুমিনুল হক (৩৩)।
প্রথম ইনিংসে ৩৫৩ রানের লিড পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফলো-অন করানোর সুযোগ থাকলেও সে পথে হাঁটেনি তারা। আবার ব্যাটিংয়ে নামবে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৫৫/১) ৬৮.৪ ওভারে ১৭৮ (জাকির ৫৪, তাইজুল ২২, শান্ত ১, মুমিনুল ৩৩, সাকিব ১৫, লিটন ৪, শাহাদাত ৮, মিরাজ ৭, খালেদ ১, হাসান ২*; ভিশ্ব ১৬-৫-৩৮-২, আসিথা ১০.৪-১-৩৪-৪, কুমারা ১১-৫-১৯-২, জায়াসুরিয়া ২৪-৪-৬৫-২, ধানাঞ্জয়া ৭-২-১৪-০)
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে সাফল্য পেল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে দিমুথ কারুনারাত্নেকে বোল্ড করলেন হাসান মাহমুদ। প্রথম ইনিংসের মতোই ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বোল্ড হলেন অভিজ্ঞ ওপেনার।
৫ বলে ৪ রান করে ফিরলেন কারুনারাত্নে। তিন নম্বরে নামলেন কুসাল মেন্ডিস।
২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ১৪ রান। তাদের লিড এখন ৩৬৭ রানের।
বিশাল লিড নিয়ে ব্যাটিংয়ে দ্রুত ২ উইকেট হারালেও দ্রুত রান তুলছে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় উইকেটের খোঁজে প্রথম রিভিউ হারিয়েছে বাংলাদেশ।
ষষ্ঠ ওভারে হাসান মাহমুদের অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ ডেলিভারিতে পরাস্ত হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। বল তার প্যাডে আঘাত করতেই জোরাল আবেদন। তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লাগার সময় অফ স্টাম্প লাইনের বাইরে ছিলেন ম্যাথিউস। তাই বিপদ ঘটেনি তার। বিফলে যায় বাংলাদেশের রিভিউ।
পরের ওভারে সৈয়দ খালেদ আহমেদের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে দূর থেকে ড্রাইভ করেন নিশান মাদুশকা। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্লিপের মাঝ দিয়ে। বাউন্ডারি পেয়ে যান লঙ্কান ওপেনার।
৬.৩ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৪ রান। মাদুশকা ২২ বলে ২১ ও ম্যাথিউস ২০ বলে ৭ রানে খেলছেন।
প্রথম ইনিংসের ফিল্ডিংয়ের ব্যর্থতা দ্বিতীয় ইনিংসেও টেনে আনল বাংলাদেশ। অষ্টম ওভারে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ক্যাচ ছাড়লেন শাহাদাত হোসেন।
হাসান মাহমুদের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে ম্যাথিউসের ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে। প্রথম স্লিপে নেওয়ার মতো উচ্চতায়ই পান শাহাদাত। ডান দিকে নিচু হয়ে পুরোপুরি নাগাল পেলেও হাতে রাখতে পারেননি তিনি। ৭ রানে জীবন পেলেন ম্যাথিউস।
৮ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৩৫ রান।
শেষ সেশনের পানি পানের বিরতির আগে ফের আঘাত হানলেন হাসান মাহমুদ। তার দ্বিতীয় শিকার হলেন নিশান মাদুশকা। লিড চারশ পার করিয়ে ফিরলেন লঙ্কান ওপেনার।
হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট ডেলিভারি স্ল্যাশ করে সোজা কভারে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দেন মাদুশকা। ৫ চারে ৪৫ বলে ৩৪ রান করেন তিনি।
১২.৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৬০ রান। তাদের লিড এখন ৪১৩ রানের।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান দিনেশ চান্দিমাল। ২৫ বলে ১৯ রানে খেলছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না দিনেশ চান্দিমাল। অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরলেন ড্রেসিং রুমে।
শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা মারেন চান্দিমাল। প্রথম স্লিপে দুইবারের চেষ্টায় হাতে জমান শাহাদাত হোসেন। ৭ বলে ৯ রানে ফেরেন লঙ্কান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।
১৫ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৭২ রান। লিড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২৫ রান।
হাসান মাহমুদের বোলিংয়ের কোনো জবাব দিতে পারছেন না শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। ছন্দে থাকা ধানাঞ্জয়া ডি সিলভাকেও অল্পে ফেরালেন অভিষিক্ত পেসার।
অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে হালকা মুভমেন্টের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টায় কট বিহাইন্ড হলেন লঙ্কান অধিনায়ক। সিরিজে প্রথমবার পঞ্চাশ ছুঁতে ব্যর্থ হয়ে ১ রানে ফিরলেন তিনি।
দুই ইনিংস মিলে এরই মধ্যে ৬ উইকেট নিয়েছেন হাসান। বাংলাদেশের স্রেফ দ্বিতীয় পেসার হিসেবে অভিষেক টেস্টে ৬ উইকেট নিলেন তিনি। প্রথমজন সাবেক বাঁহাতি পেসার মঞ্জুরুল ইসলাম, ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮১ রানে ৬ উইকেট।
১৭ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৮২ রান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান কামিন্দু মেন্ডিস। ৩৩ বলে ২৭ রানে খেলছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
সিরিজে আগের তিনবারেই ৯০ ছোঁয়া ইনিংস খেলা কামিন্দু মেন্ডিসকে এবার দুই অঙ্কে যেতে দিলেন না সৈয়দ খালেদ আহমেদ। ৯ রানে কট বিহাইন্ড হলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
খালেদের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করার চেষ্টায় কামিন্দুর ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে। লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে বল জমা পড়তেই আবেদনের চেয়ে বরং উদযাপনই শুরু করেন খালেদ।
কিন্তু সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিছুটা সংশয়ে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্তও। তবে শতভাগ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন খালেদ। অধিনায়ককে রাজি করান রিভিউ নিতে। তাতে সফল হয়েই ষষ্ঠ উইকেট পায় বাংলাদেশ।
টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার পঞ্চাশ ছোঁয়ার আগে ফিরলেন কামিন্দু।
২০ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৮৯ রান। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান প্রাবাথ জায়াসুরিয়া। ৩৭ বলে ২৯ রানে খেলছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনে দাপট দেখালেন দুই দলের বোলাররা। প্রথম দুই দিন মিলিয়ে পড়ে স্রেফ ১১ উইকেট। তৃতীয় দিনে পড়ল ১৫টি উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো বোলিং করলেও প্রথমবারের ব্যাটিং ব্যর্থতায় বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১০২ রান। প্রথম ইনিংসের ৩৫৩ রানের লিডসহ সফরকারীরা এগিয়ে গেছে ৪৫৫ রানে। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় স্রেফ ১৭৮ রানে।
১ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে খেলতে নেমে সোমবার বাকি ৯ উইকেটে আর ১২৩ রান যোগ করতে পেরেছে স্বাগতিকরা। এ নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে দুইশর নিচে গুটিয়ে গেছে তারা। সবগুলোই ঘরের মাঠে।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটিতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন জাকির হাসান। এছাড়া ত্রিশ ছুঁতে পারেন শুধু মুমিনুল হক (৩৩)। আরও একবার হতাশ করেন নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন কুমার দাস, শাহাদাত হোসেনরা।
শেষ সেশনে বল হাতে আলো ছড়ান দুই পেসার হাসান মাহমুদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। দুজনের তোপে ৯০ এর আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা।
অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২ উইকেটের পর দ্বিতীয়বারে এরই মধ্যে ৪ উইকেট নিয়েছেন হাসান। বাকি ২টি গেছে খালেদের ঝুলিতে।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ৫০ বলে ৩৯ ও প্রাবাথ জায়াসুরিয়া ১৭ বলে ৩ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৫৩১
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৭৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ২৫ ওভারে ১০২/৬ (মাদুশকা ৩৪, কারুনারাত্নে ৪, কুসাল ২, ম্যাথিউস ৩৯*, চান্দিমাল ৯, ধানাজয়া ১, কামিন্দু ৯, জায়াসুরিয়া ৩*; খালেদ ৯-২-২৯-২, হাসান ১১-৩-৫১-৪, সাকিব ৪-০-২০-০, তাইজুল ১-০-১-০)