মন্থর উইকেটে বাংলাদেশের ‘কঠিন চ্যালেঞ্জের’ অপেক্ষায় ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ড বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেও এই কন্ডিশনে বাংলাদেশ কঠিন প্রতিপক্ষ, বলছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2023, 03:20 PM
Updated : 8 March 2023, 03:20 PM

জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের অনুশীলন ছিল বুধবার সকালে। ইংলিশরা মাঠে আসে আরও দুই ঘণ্টা পরে। ক্রিকেটাররা যখন গা গরম করে নিচ্ছিলেন, তখন ইংল্যান্ড দলের বিশ্লেষক ফ্রেডি ওয়াইল্ড এগিয়ে যান উইকেটের দিকে। কিউরেটর প্রভিন হিঙ্গানিকারের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় তাকে। বলার অপেক্ষা রাখে না, উইকেটের সম্ভাব্য আচরণ নিয়েই তাদের আলোচনা।

উইকেটের আচরণ নিয়ে অনেকটা ধারণা অবশ্য ইংলিশদের থাকারই কথা। এই উইকেট যে তাদের অচেনা নয়!

বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলনে কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে খোলাসা করেই দিয়েছেন, শেষ ওয়ানডের উইকেটেই হবে প্রথম টি-টোয়েন্টি। পরে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে পেস বোলিং অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস বললেন, সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশ কঠিন পরীক্ষা নেবে ধরে নিয়েই রণ পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তারা।

এমনিতে চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হিসেবে পরিচিত হলেও এবার এই ওয়ানডেতে উইকেট ছিল বেশ মন্থর। বল পিচ করে থমকে এসেছে ব্যাটে। বিশেষ করে, সময় যত গড়িয়েছে, স্পিন ধরেছে ততই। বাংলাদেশের ২৪৬ রানের জবাবে ইংল্যান্ড সেদিন গুটিয়ে যায় ১৯৬ রানে।

সেই উইকেটেই বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় আবার মুখোমুখি হবে দুই দল। ম্যাচের আগের দিন ওকস বললেন, উইকেট সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা তাদের আছে।

“আমার ধারণা, উইকেট তুলনামূলক মন্থর হবে। খেলা শুরুও হচ্ছে আগেভাগে। ম্যাচে তাই শিশিরের প্রভাব তেমন একটা থাকবে না। আমি নিশ্চিত, উইকেটে কিছুটা স্পিন থাকবে অথবা স্পিনার ও ধীরগতির বোলারদের বল অন্তত কিছুটা থেমে আসবে।” 

স্পিনারদের জন্য সাহায্য থাকা উইকেটে পেসারদের সাফল্যের পথটা ভালোই জানা ১৮৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ওকসের।

“ফাস্ট বোলার বা সিম বোলার হিসেবে অনেক বৈচিত্র ব্যবহার করতে হবে। আমার মনে হয়, স্টাম্পের বাইরে বল করতে চাইবে না। নিচু বাউন্স ও চিটচিটে উইকেটে স্টাম্প বরাবর বোলিং করা ভালো উপায়। আমি নিশ্চিত পেসাররা গতির পরির্তন, স্লোয়ার বল, স্লোয়ার বাউন্সার... এগুলো ব্যবহার করবে।”  

বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে কখনও দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেনি ইংল্যান্ড। দুই দল মুখোমুখি হয়েছে স্রেফ একটি বিশ ওভারের ম্যাচে। তবে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কেও ধারণা পাচ্ছেন ওকস।

“বাংলাদেশ খুব ভালো দল। যখনই তাদের বিপক্ষে খেলা হয়, বিশেষ করে তাদের ঘরের মাঠে খেলা কঠিন পরীক্ষা। ওয়ানডেতে যেমনটা দেখেছি, আমরা সবশেষ (২০১৬) এখানে আসার পর তারা আর সিরিজ হারেনি। তাদের বিপক্ষে সিরিজ সবসময়ই কঠিন। এবারও তাই। অবশ্যই আমরা প্রথম দুই ম্যাচ জিতেছি। তবু বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সিরিজ ছিল।”

টি-টোয়েন্টি সিরিজেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াই আশা করছেন তিনি। 

“টি-টোয়েন্টিতেও আমরা একইরকম আশা করছি। সত্যিই কোনো পার্থক্য নেই। অবশ্যই আমরা বিশ্বকাপ জিতে এসেছি। তবে পরিষ্কারভাবেই পুরোপুরি ভিন্ন কন্ডিশন। তো এটি আমাদের জন্য পরীক্ষা হতে চলেছে। যখনই ইংল্যান্ডের কোনো দল এখানে আসে, চ্যালেঞ্জিং হয়। আমরা খুব কঠিন সিরিজ আশা করছি।”

টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন তৌহিদ হৃদয়, তানভির ইসলাম ও রেজাউর রহমান রাজা। এছাড়া দীর্ঘ ৮ বছর পর ফিরেছেন রনি তালুকদার, ফিরেছেন শামীম হোসেনও।

নতুনের যে বিস্ময় উপহার দেওয়ার ক্ষমতা, তা নিয়েও সতর্ক ইংল্যান্ডের এই পেসার। 

“হ্যাঁ…(নতুন ক্রিকেটাররা হুমকি) হতে পারে। যখনই নতুন বা অদেখা কারও বিপক্ষে খেলতে হয়… বিশেষ করে তারা যখন স্থানীয় টুর্নামেন্ট, বিপিএলে ভালো করে, তখন অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়ে আসে। দল হিসেবে এসব ক্রিকেটারদের বিপক্ষে খেলা কখনও কখনও ‘ট্রিকি’ হতে পারে।”

“একজন বোলারের দৃষ্টিকোণ থেকে যখন প্রথমবার কারও মুখোমুখি হতে হয়, তখন সে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে। তার শক্তির জায়গা বোঝার আগেই ২০-৩০ রান করে ফেলতে পারে। এটি ‘ট্রিকি’ হতে পারে। তাই আমাদেরকে নিজেদের দিক থেকে ভাবতে হবে।”