ইমরুলের সেঞ্চুরি, নাহিদের ৫ উইকেট

শেষ রাউন্ডের প্রথম দিনে যথারীতি দাপট দেখিয়েছেন বোলাররা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Nov 2022, 01:42 PM
Updated : 14 Nov 2022, 01:42 PM

জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রথম পাঁচ রাউন্ডে রান পাননি ইমরুল কায়েস। শেষ রাউন্ডে সেই আক্ষেপ কিছুটা দূর করলেন খুলনা বিভাগের অধিনায়ক। রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকালেন বাঁহাতি এই ওপেনার। একই ম্যাচে ৫ উইকেট নিলেন রাজশাহীর তরুণ ডানহাতি পেসার নাহিদ রানা।

বিসিবি একাদশের ভারত সফর ও জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শেষে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। তাই জাতীয় লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে বেড়েছে তারকাদের উপস্থিতি। তবে প্রথম দিন তারকা খেলোয়াড়দের কেউই বড় কিছু করতে পারেননি।  

শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে রাজশাহীর বিপক্ষে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে ষষ্ঠ রাউন্ডের প্রথম দিন শেষে ২৬৩ রানে এগিয়ে রয়েছে স্বাগতিক খুলনা। ইমরুলের সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৬৬ রান করে তারা। 

জবাবে স্রেফ ৩ রানেই সাজঘরে ফিরে গেছেন রাজশাহীর ২ ওপেনার।   

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতই ফেরেন অমিত মজুমদার ও এনামুল হক। তৃতীয় উইকেটে ১১১ রানের জুটি গড়েন ইমরুল ও নাহিদুল ইসলাম। নাহিদুলের (৪৫) বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। 

ইমরুল এগিয়ে গিয়ে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। ১০ চারে ১৮৭ বলে সেঞ্চুরিতে গিয়েই অবশ্য বিদায় নেন তিনি। থিতু হয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। 

রাজশাহীর হয়ে ৬৩ রানেয় ৫ নেন নাহিদ। চলতি লিগে এটি তার তৃতীয় ৫ উইকেট। সবমিলিয়ে ৩২ উইকেট নিয়ে তালিকার শীর্ষে উঠে গেছেন ২০ বছর বয়সী এই পেসার। 

শেষ বিকেলে স্রেফ ৩ ওভারের জন্য ব্যাটিংয়ে নেমে সাজঘরে ফিরে গেছেন রাজশাহীর দুই ওপেনার জহুরুল ইসলাম ও জুনায়েদ সিদ্দিক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর 

খুলনা ১ম ইনিংস: ৮৪.৪ ওভারে ২৬৬ (অমিত ১৭, ইমরুল ১০০, এনামুল বিজয় ১৬, নাহিদুল ৪৫, সৌম্য ৩৬, শেখ মেহেদি ১৮, জিয়াউর ১৯, জাওয়াদ ০, রায়হান ৪, আশিকুর ০*, আল আমিন ০; নাহিদ ১৪.৪-২-৬৩-৫, মোহর ৯-০-৩৪-২, শান্ত ৭-১-১৯-১, শফিকুল ১০-১-৪১-০, তাইজুল ২৩-৭-৩৬-২, সানজামুল ১৭-২-৪২-০, তৌহিদ ৪-০-২১-০)

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ২.১ ওভারে ৩/২ (জহুরুল ২, জুনায়েদ ১, তাইজুল ০*; আল আমিন ১.১-০-১-১, আশিকুর ১-০-২-১)

সিলেটকে অল্পেই গুঁড়িয়ে দিল রংপুর 

বগুড়ার শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে ‘ফাইনালে’ পরিণত হওয়া ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে সিলেট ও রংপুর। দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হতে ড্র করলেই চলবে রংপুরের। প্রথম শিরোপা পেতে জয়ের বিকল্প নেই সিলেটের সামনে। সেই অভিযানে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি তাদের। 

ইবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদকে ফিরিয়ে বোলিং আক্রমণকে শক্তিশালী করেছে সিলেট। তবে হতাশ করেছেন ব্যাটসম্যানরা।  

স্রেফ ১০৭ রানেই গুটিয়ে গেছে জাকির হাসানের দল। দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০৫ রান করেছে রংপুর। 

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নিদারুণ ব্যাটিং ব্যর্থতায় মাত্র ৪৬.১ ওভার টেকে সিলেটের প্রথম ইনিংস। তৌফিক খান তুষার, অমিত হাসান, জাকির হাসান, জাকের আলি অনিক দুই অঙ্ক ছুঁলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। 

রংপুরের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সোহেল রানা। রবিউল হক, মুশফিক হাসান ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের শিকার দুটি করে উইকেট।  

পরে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের শুরুটাও ছিল নড়বড়ে। ৩৯ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান তিন ব্যাটসম্যান। চতুর্থ উইকেটে ৬৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দিয়েছেন মিম মোসাদ্দেক ও নাসির হোসেন। 

দ্বিতীয় দিন মোসাদ্দেক ২৬ ও নাসির ২৭ রান নিয়ে খেলা শুরু করবেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট ১ম ইনিংস: ৪৬.১ ওভারে ১০৭ (ইমতিয়াজ ০, তৌফিক ১৬, অমিত ১৩, জাকির ১৬, জাকের ১৪, আল আমিন ৫, তানজিম ১৪, নাসুম ৪, রাজা ৪, খালেদ ১০, ইবাদত ৫*; সোহেল ৯-২-২১-৩, মুশফিক ১৪-৪-২৭-২, রবিউল ১৪-১-৩৬-২, আরিফুল ৬-১-১১-০, মামুন ৩-০-৮-২, রিশাদ ০.১-০-০-১)

রংপুর ১ম ইনিংস: ৩২ ওভারে ১০৫/৩ (মাইশুকুর ১২, মামুন ১৩, মোসাদ্দেক ২৬*, তানবীর ৭, নাসির ২৭*; এবাদত ১২-৪-১৭-২, খালেদ ৭-১-৩২-০, রাজা ৭-২-২০-১, তানজিম ২-০-১৫-০, নাসুম ৪-০-১০-০)

ইরফানের ফিফটি, সুমন-শুভাগতর ৪ উইকেট 

আগেই প্রথম স্তর থেকে অবনমন নিশ্চিত হয়ে গেছে চট্টগ্রাম বিভাগের। জটিল সমীকরণে এখনও বেঁচে আছে ঢাকা বিভাগের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা। সেই অভিযানে শুরুটা খারাপ হয়নি তাদের।  

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে প্রথম দিনে চট্টগ্রামকে ২০৩ রানে অলআউট করে দিয়েছে ঢাকা। জবাবে দিন শেষ হওয়ার আগে ১ উইকেটে ৫৩ রান করেছে তারা। 

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামের শুরুটা খারাপ ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৫ রান যোগ করেন পিনাক ঘোষ ও মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু দুজনের কেউই ভালো শুরুকে টেনে নিতে পারেননি। পিনাক ২৩ ও জয় ৩০ রানে সাজঘরে ফেরেন। 

তিন নম্বরে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন পারভেজ হোসেন ইমন। তাকে বেশি দূর যেতে দেননি সালাউদ্দিন শাকিল। নাদিফ চৌধুরীর হাতে ক্যাচ দিয়ে পারভেজের (১৭ বলে ২৭) ক্যামিও ইনিংসের। 

এরপর হতাশ করেন মুমিনুল হক, শাহাদাত হোসেন, তাসামুল হকরা। সপ্তম উইকেট জুটিতে নাঈম হাসানকে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর। আট চারে তার ৬৬ রানের সৌজন্যে দুইশ পার করে চট্টগ্রাম। 

ঢাকার হয়ে চারটি করে উইকেট নেন পেসার সুমন খান ও অফ স্পিনার শুভাগত হোম চৌধুরী। এই ৪ উইকেটের সৌজন্যে ৩০ উইকেট নিয়ে তালিকার দুই নম্বরে উঠে গেছেন সুমন। 

দিনের শেষ ভাগে ব্যাটিংয়ে নেমে অল্পেই ফিরে যান ঢাকার ওপেনার জয়রাজ শেখ। পরে আর বিপদ ঘটতে দেননি আব্দুল মজিদ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। মজিদ ৩৪ ও মাহিদুল ৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৬৩ ওভারে ২০৩ (পিনাক ২৩, জয় ৩০, পারভেজ ২৭, মুমিনুল ২, শাহাদাত ৯, তাসামুল ৩, ইরফান ৬৬, নাঈম ২৬, মুরাদ ১, মিশু ৮*, মেহেদি ০; সুমন ২০-০-৬৮-৪, শাকিল ১৬-২-৫৯-২, রিপন ৯-২-৩২-০, শাহবাজ ৮-১-১৮-০, শুভাগত ১০-৪-২১-৪)

ঢাকা ১ম ইনিংস: ১৪ ওভারে ৫৩/১ (জয়রাজ ৩, মজিদ ৩৪*, মাহিদুল ৯*; মিশু ৭-২-২৪-১, মেহেদি ৩-০-১৬-০, মুরাদ ৪-১-৭-০) 

অলরাউট বরিশাল, স্বস্তিতে নেই মেট্রোও 

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বরিশাল বিভাগ ও ঢাকা মেট্রো। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকায় প্রথম স্তরে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি মেট্রোর। তবে শেষ রাউন্ডের ম্যাচে স্বস্তিতে নেই তারা। 

প্রথম দিন শেষে ৮ উইকেট হাতে রেখে বরিশালের চেয়ে ১৯২ রানে পিছিয়ে রয়েছে ঢাকা মেট্রো। বরিশাল অলআউট হয়েছে ২১১ রানে। জবাবে ১৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে মেট্রো।  

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশালের শুরু তেমন ভালো ছিল না। দলীয় পঞ্চাশের আগেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার আবু সায়েম চৌধুরী ও ইফতেখার হোসেন ইফতি। ধাক্কা সামাল দিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ফজলে মাহমুদ রাব্বি ও সালমান হোসেন ইমন।  

তরুণ বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল হাসানের বলে সালমান (৩৯) এলবিডব্লিউ হলে ভাঙে এই জুটি। ৫৬ রান করে ফেরেন অধিনায়ক ফজলে রাব্বি।

এরপর একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন মোহাম্মদ আশরাফুল (১০০ বলে ৩৬)। শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারায় বরিশাল। 

মেট্রোর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন রকিবুল। এছাড়া একেএস স্বাধীন ও আসাদুল্লাহ হিল গালিবের শিকার ২টি করে উইকেট। 

শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার নাঈম শেখ ও কিপার-ব্যাটসম্যান জাহিদুজামান। ১৩ রানে দুজনকেই হারায় ঢাকা মেট্রো। পরে আর বিপদ ঘটতে দেননি অধিনায়ক সাদমান ইসলাম ও নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা রকিবুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)

বরিশাল ১ম ইনিংস: ৭৫.৩ ওভারে ২১১ (আবু সায়েম ১, ইফতেখার ১৭, ফজলে রাব্বি ৫৬, সালমান ৩৯, আশরাফুল ৩৬, সোহাগ ২৬, মইন ১, ইসলামুল ৪, রাব্বি ৩, তানভির ১০, রুয়েল ০*; কাজী অনিক ১৮-৬-৩৫-১, স্বাধীন ১৩-৩-৪৩-২, গালিব ১১-২-৩৩-২, শরিফউল্লাহ ১৫-৬-৩১-১, রাকিবুল ১৮.৩-৪-৬০-৪)

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৮ ওভারে ১৯/২ (নাঈম শেখ ৫, সাদমান ৮*, জাহিদুজ্জামান ০, রাকিবুল ৩*; রাব্বি ৪-১-৭-০, রুয়েল ৪-১-৯-২)