লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও ব্যাটে-বলে আধিপত্য দেখাল ইংল্যান্ড। রান উৎসবে দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস খেললেন বেন ডাকেট। অলি পোপ উপহার দিলেন দ্বিশতক। পরে বল হাতে আলো ছড়ালেন অভিষিক্ত জশ টং।
চার দিনের এই টেস্টে ইংল্যান্ডের রান পাহাড়ের পর আয়ারল্যান্ডের সামনে এখন ইনিংস হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। শুক্রবার ৪ উইকেটে ৫২৪ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ইংলিশরা। ওভারপ্রতি ৬.৩৩ করে রান তুলে লিড নেয় তারা ৩৫২ রানের।
দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে আইরিশদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৯৭ রান। তিনটি উইকেটই টংয়ের। ইনিংস হার এড়াতে এখনও সফরকারীদের করতে হবে ২৫৫ রান।
দিনের সবচেয়ে আলোচিত নাম পোপ। ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে ২০৮ বলে ২২ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি খেলেন ২০৫ রানের ইনিংস।
এ দিন তার ২০৭ বলে দ্বিশতক ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টে দ্রুততম। ১৯৮২ সালে ওভালে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথামের ২২০ বলে দ্বিশতক ছিল আগের রেকর্ড।
পোপের চেয়ে কম বলে দ্বিশতক টেস্ট ইতিহাসেই আছে আর ৬টি; সবগুলিই দুইশর কম বলে, যার তিনটি ভারতের বিরেন্দর শেবাগের।
ডাকেট করেন ১৭৮ বলে ১৮২ রান। যেখানে ২৪ চারের পাশে ছক্কা একটি। ৫৯ বলে ৫৬ রানের ইনিংস আসে জো রুটের ব্যাট থেকে।
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় দিন শুরু করে ১ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল বেশ ভালো। আগের দিনে ৬০ রানে অপরাজিত ডাকেটের সেঞ্চুরিতে পা রাখতে এ দিন লাগে কেবল ৩৫ বল।
এটি তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। প্রথমটি ছিল গত ডিসেম্বরে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে, ৬ বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচে করেছিলেন তিনি।
২৯ রান নিয়ে দিনের ব্যাটিং শুরু করে পোপ পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৬৪ বলে। দুই ব্যাটসম্যানের তেমন পরীক্ষাই নিতে পারেননি আইরিশ বোলাররা। প্রথম সেশনে ২৯ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে আসে ১৭৩ রান।
বিরতি থেকে ফিরে পোপ পূর্ণ করেন চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি, ১২৬ বলে। ডাকেট দেড়শ স্পর্শ করেন ঠিক ১৫০ বলে, লর্ডসে যা দ্রুততম। অতীত হয়ে গেল ১৯৩০ সালে ডন ব্র্যাডম্যানের ১৬৬ বলে দেড়শ ছোঁয়ার রেকর্ড।
ডাবল সেঞ্চুরির দিকেই ছুটছিলেন ডাকেট, কিন্তু গ্রাহাম হিউমের বল স্টাম্পে টেনে এনে থমকে যান তিনি আগেই। ভাঙে ২৬১ বলে ২৫২ রানের জুটি।
পোপ এরপর এগিয়ে যান রুটকে সঙ্গী করে। চা-বিরতির আগে চার মেরে রুট ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৫ বলে। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে দ্বিতীয় ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি পা রাখেন ১১ হাজার টেস্ট রানের ঠিকানায়। প্রথমজন অ্যালিস্টার কুক।
বিরতির পর স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে একটি চার মেরে পরের বলে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হয়ে যান রুট। ম্যাকব্রাইনের পরের ওভারেই ১৯৯ থেকে ছক্কা হাঁকিয়ে দ্বিশতক পূর্ণ করেন পোপ। পরের বলে বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় তিনি স্টাম্পড হতেই ইনিংস ঘোষণা করে দেন স্টোকস।
দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে এবারও শুরুতে উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে উইকেটশূন্য টং জোড়া শিকার ধরেন ষষ্ঠ ওভারে। পিটার মুর এলবিডব্লিউ হওয়ার পর কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন অ্যান্ডু বালবার্নি।
একটু পর অ্যাঙ্কেলে আঘাত পেয়ে ক্রিজ ছেড়ে যান জেমস ম্যাককলাম। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পল স্টার্লিং। তাকে কট বিহাইন্ড করিয়ে তৃতীয় শিকার ধরেন টং।
লর্কান টাকারকে (২১*) নিয়ে দিনের বাকিটা কাটিয়ে দেন হ্যারি টেক্টর (৩৩*)। ৩৪ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৭২
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৫২/১) ৮২.৪ ওভারে ৫২৪/৪ ডিক্লে. (ডাকেট ১৮২, পোপ ২০৫, রুট ৫৬, ব্রুক ৯; অ্যাডায়ার ২০-২-১২৭-০, হিউম ১৭-০-৮৫-১, হ্যান্ড ১৯-২-১১৩-১, ক্যাম্পার ১৩-০-৮৮-০, ম্যাকব্রাইন ১৩.৪-০-৯৯-২)
আয়ারল্যান্ড ২য় ইনিংস: ২৬ ওভারে ৯৭/৩ (মুর ১১, ম্যাককলাম ১২, (রিটায়ার্ড হার্ট) বালবার্নি ২, টেক্টর ৩৩*, স্টার্লিং ১৫, টাকার ২১; ব্রড ৫-১-১৮-০, পটস ৬-১-২৮-০, টং ৮-১-২৭-৩, লিচ ৭-১-২৪-০)