দ্বিতীয় টেস্টের স্কোয়াডে মাহমুদুল হাসান জয়কে রেখে দেওয়া ও জাকির হাসানকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।
Published : 24 Apr 2025, 02:37 PM
সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনে তখন বোলিং করছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সিলি পয়েন্ট ও স্লিপে কাছাকাছিই দাঁড়িয়ে ছিলেন জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়। কিছুক্ষণ পর সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিলেন জাকির। ফিল্ডিংয়ের এই ব্যর্থতাই যেন কাল হলো বাঁহাতি ওপেনারের।
বুধবার শেষ বিকেলের ফিল্ডিং পজিশনের মতো জাতীয় দলে জয়-জাকিরের অবস্থা অবশ্য কাছাকাছি নয়। পারফর্ম না করেও টানা খেলে চলেছেন জয়। তাকে রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশ স্কোয়াডেও। ম্যাচে সুযোগ না পেয়েই বাদ পড়ে গেছেন জাকির। এই পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় ফিল্ডিংয়ের প্রসঙ্গ এনেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন।
চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের স্কোয়াডে পরিবর্তন দুটি। জাকিরের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন এনামুল হক। আর নাহিদ রানার জায়গায় প্রথমবার ডাক পেয়েছেন তানভির ইসলাম।
পারফরম্যান্স বিবেচনায় জাকিরের বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠার তেমন সুযোগ নেই। টানা ১৩ ইনিংস ধরে কোনো ফিফটি নেই তার। সবশেষ ম্যাচেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ১৫ ও শূন্য রানে আউট হন তিনি। পরে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে আর সুযোগ পাননি।
তবে টানা ব্যর্থতার পরও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের স্কোয়াডে রাখা হয় ২৭ বছর বয়সী ওপেনারকে। কিন্তু ম্যাচ না খেলিয়েই বাদ দেওয়া হলো দ্বিতীয় ম্যাচের দল থেকে। প্রশ্ন উঠেই যাচ্ছে, কেন তখন নেওয়া হয়েছিল জাকিরকে, কেন এখন না খেলিয়ে বাদ দেওয়া হলো।
প্রশ্ন থেকে যায়, দলে জয়ের জায়গা পাওয়া নিয়েও। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সিলেটের মাঠেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৬ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেন তরুণ ওপেনার। এরপর থেকে আর রান নেই তার। টানা ১৭ ইনিংস ফিফটি করতে পারেননি।
সিলেট টেস্টে দুই ইনিংসেই জয় ছিলেন নড়বড়ে। প্রথম ইনিংসে ৩৫ বলে ১৪ রান করে আউট হন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৫ বলে করেন ৩৩ রান। পুরো ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় একবারও তাকে ঠিক থিতু মনে হয়নি।
জিম্বাবুয়ের পেসারদের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে কঠিন পরীক্ষা দিয়ে দুই ইনিংসেই উইকেটের পেছনে আউট হন জয়। সবশেষ ১০ ইনিংসের ৯টিতেই স্লিপ বা কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। পারফরম্যান্স নেই, আউট হওয়ার ধরন একই রকম, দুর্বলতার জায়গায় উন্নতির ছাপ নেই। জয়ের জায়গা তাই প্রবলভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথোপকথনে জয়কে রেখে জাকিরকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যায় ম্যাচ অনুশীলনের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ের কথা বললেন প্রধান নির্বাচক।
“জয় তো ২২ গজের মধ্যে খেলেছে। সে উইকেটে অন্তত একশ বল মোকাবিলা করেছে। দ্বিতীয়ত, যখন দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে কাউকে ফিল্ডিংয়ে লাগবে, সেক্ষেত্রে স্লিপে তুলনামূলক নিরাপদ ফিল্ডার জয়। সেই জায়গায় জাকিরের ফিল্ডিংটা একটু চিন্তার জায়গা। সিলি পয়েন্টে ফিল্ডিং করতে আরেকটু চটপটে হওয়া প্রয়োজন। এরকম টুকটাক কিছু বিষয় আছে।”
তবে জাকিরকে একেবারে ছুড়ে দেওয়া হবে না বলে আশ্বাস দিলেন গাজী আশরাফ। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সামনের মাসের সিরিজে বাঁহাতি ওপেনারকে রাখা হবে।
“কালকে (বুধবার) কিন্তু একটা সুযোগ এসেছিল (ক্যাচের)। পরে ওই প্লেয়ার হয়তো দ্রুত আউট হয়ে গেছে। কিন্তু সুযোগগুলো নিতে হবে। আরেকটু সক্রিয় থাকতে হবে। পাকিস্তান সফরে গালিতে দারুণ একটি ক্যাচ নিয়েছিল জাকির। কিন্তু যাদের হাতের নাগাল বড়, তারা একটু বাড়তি সুবিধা পায়। রান আউট বা ক্যাচিংয়ে এটি প্রভাব ফেলে।”
“তবে জাকিরকে আমরা অবশ্যই সুযোগ দেব। তাকে বলব প্রস্তুত হওয়ার জন্য। নিউ জিল্যান্ড 'এ' দলের বিপক্ষে সে সুযোগ পাবে।”
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শহীদ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে (আগের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়াম) আগামী সোমবার শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট।