নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা চারে ওঠার কঠিন চ্যালেঞ্জ জিততে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করতে প্রত্যয়ী সোবহানা মোস্তারি, রিতু মনিরা।
Published : 04 Oct 2024, 08:49 PM
স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে প্রাথমিক লক্ষ্য ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। দৃষ্টি এখন আরও প্রসারিত। কঠিন হলেও সেমি-ফাইনালের খোঁজে ছুটতে চায় নিগার সুলতানার দল। সেই অভিযানে প্রথম বড় প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ দেওয়ার প্রত্যয় জানালেন সোবহানা মোস্তারি, রিতু মনিরা।
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবেন সোবহানা, রিতুরা। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ৮টায় শুরু হবে খেলা।
টুর্নামেন্ট খেলতে দেশ ছাড়ার আগে প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে জয়খরা কাটানোর কথা বলেন নিগার। প্রথম ম্যাচে স্কটিশদের ১৬ রানের হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রায় ১০ বছর পর জয়ের দেখা পায় তারা।
প্রথম ম্যাচ থেকে ছন্দ পেলে পরেরগুলোতে ভালো খেলে সেমি-ফাইনালেও চোখ রাখার কথা বলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে সেই কাজটি সহজ নয় মোটেও। কারণ ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অন্য তিন প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত ৮ আসরে অস্ট্রেলিয়া ছাড়া শিরোপার স্বাদ পেয়েছে শুধু ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাও জানান দিয়েছে নিজেদের সামর্থ্য।
তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। সেই অভিযানে প্রথমেই তাদের লড়াই আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বরে থাকা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নদের এবারের আসরে এটিই প্রথম ম্যাচ।
ইংলিশদের শক্তিমত্তা ও সামর্থ্য সম্পর্কে সচেতন বাংলাদেশ। তাই বলে মনোবল হারাতে চায় না তারা। ম্যাচের আগের দিন বিসিবির ভিডিওবার্তায় সর্বোচ্চ লড়াইয়ের চেষ্টার কথা বলেছেন সোবহানা।
“ইংল্যান্ড বরাবরই ভালো দল। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে সবসময় সেরা তিনে থাকে। আমাদের খুব বেশি খেলা হয়নি ইংল্যান্ডের সঙ্গে। তবে আশাবাদী আমরা। সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে আমরা অনেক ভালো খেলেছি তাদের সঙ্গে, বিশেষ করে বোলিং বিভাগ অনেক ভালো করেছে। আমরা আশাবাদী কালকেও সর্বোচ্চ দেওয়ার ব্যাপারে। তারপর ফলই বলে দেবে কী হয়।”
স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে যাত্রা শুরু করতে বড় অবদান রাখেন সোবহানা। তিন নম্বরে নেমে ৩৮ বলে দলের সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন ২২ বছর বয়সী ব্যাটার। তার বিশ্বাস, প্রথম ম্যাচ থেকে পাওয়া প্রেরণা পরের ম্যাচগুলোতে তাদের কাজে লাগবে।
“প্রথম ম্যাচ আমরা জিতেছি। এরপর থেকে দলের একতা, আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি। দীর্ঘ দিন পর আমরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছি। গতবছর ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছি একটা ম্যাচ। আর আগামীকাল ম্যাচ। আশা করি, আমরা শতভাগ উজাড় করে দেব। যেখানে যেখানে ভালো করার, ব্যাটিং-বোলিং বা ফিল্ডিংয়ে, আমরা শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করব।”
সোবহানার ৩৬ রানের সঙ্গে সাথি রানি ২৯ ও নিগার সুলতানার ১৮ রানের সৌজন্যে ১১৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়ায় একপর্যায়ে ভালো অবস্থানেই ছিল স্কটল্যান্ড। তখন বল হাতে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের পক্ষে আনেন রিতু।
কোনো বাউন্ডারি না দিয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রানে ২ উইকেট নেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। স্কটল্যান্ডের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও আগে ব্যাট করে লড়াইয়ের পুঁজি দাঁড় করিয়ে জেতার চেষ্টা করতে চান রিতু।
“প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ড সেরা দল। তারপরও আশা করছি, আমাদের দিক থেকে কোনো ছাড় দেব না। আমরা যদি একটা লক্ষ্য দিতে পারি, আশা করি জয়টা আমাদের কাছেই আসবে।”
পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে সেমি-ফাইনালের টিকেট পাবে মাত্র ২টি দল। সেরা চারের টিকেটের জন্য তাই অন্তত তিনটি জয় প্রয়োজন হতে পারে। এই কাজটি যে কঠিন, তা মেনে নিচ্ছেন সোবহানা-রিতুরা।
তবে ধাপে ধাপে এগোনোর প্রত্যয়ে আগে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমি-ফাইনাল খেলার স্বপ্ন আরও জোরাল করতে চান সোবহানা।
“আমাদের যে ৩ ম্যাচ বাকি আছে... ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেমি-ফাইনালে যাওয়ার জন্য... আমাদের আগামীকাল যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ, অবশ্যই চেষ্টা করব যেন জিততে পারি। এরপর বাকি যে ম্যাচগুলো আছে, সেগুলোও আমরা ধরার চেষ্টা করব।”