ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেললেন ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিচিত মুখ অলক কাপালি, আব্দুল মজিদ ও অমিত মজুমদার।
Published : 07 Apr 2025, 07:09 PM
শুরুতেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন দারুণ ছন্দে থাকা এনামুল হক। অধিনায়কের ব্যর্থতা ঢেকে দিতে পারলেন না দলের বাকিরা। অল্প রানেই গুটিয়ে গেল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। রান তাড়ায় দুই ওপেনারের ফিফটিতে সহজ জয় পেল রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার ম্যাচে জয় দিয়ে শুরু করলেন নাসির হোসেন।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সোমবারের আরেক ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখান তাইবুর রহমান। দুই ম্যাচ পর জয়ে ফেরে ইমরুল কায়েসের অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
নাসিরের ফেরার দিনে অমিত-মজিদের ফিফটি
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গাজী গ্রুপকে ৮ উইকেটে হারায় রূপগঞ্জ টাইগার্স। ১৬০ রানের লক্ষ্য ৯৯ বল বাকি রেখে ছুঁয়ে ফেলে তারা।
৯ ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সের এটি দ্বিতীয় জয়। ৫ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নম্বরে উঠে এসেছে তারা। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পাওয়া গাজী গ্রুপের অবস্থান তৃতীয়।
এই ম্যাচ দিয়ে দেড় বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরেন নাসির হোসেন। ফেরার ম্যাচে বল হাতে ৩১ রানে ১ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাটিংয়ে ৯ রান করেন ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত উইকেট হারায় গাজী গ্রুপ। দলটির ৯ ব্যাটসম্যন দুই অঙ্ক স্পর্শ করেন। কিন্তু কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ছয় নম্বরে নেমে দলের সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন গাজী তাহজিবুল ইসলাম।
শেষ উইকেটের ৩০ রানের জুটিতে কোনোমতে দেড়শ পেরোয় এনামুলের নেতৃত্বাধীন দল।
দারুণ বোলিংয়ে মহিউদ্দিন তারেক নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ফয়সাল আহমেদ ও একেএম হুসনা হাবিবের শিকার ২টি করে উইকেট।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ১৩৮ রান করে ফেলেন অমিত মজুমদার ও আব্দুল মজিদ। পঞ্চাশ ছুঁয়ে পেশিতে টান লাগায় মাঠ ছেড়ে যান মজিদ (৭৯ বলে ৫৩)। তিন নম্বরে নেমে বেশি কিছু করতে পারেননি নাসির।
শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ১০ চারে ৯৮ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন অমিত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৪২.১ ওভারে ১৫৯ (সাদিকুর ১, এনামুল ১০, সাব্বির ১২, আমিনুল ১৪, শামীম ২৪, তাহজিবুল ৩১, তোফায়েল ১৪, পারভেজ ১৭, সাকলাইন ১, হাশিম ১৫*, মুকিদুল ১৫; নাসির ১০-০-৩১-১, মহিউদ্দিন ৫-০-২৮-৩, হুসনা হাবিব ৯-০-২৮-২, আল আমিন ৪-০-১৮-০, সানদিদ ৭-০-৩২-১, আওলাদ ৩.১-০-১০-১, ফয়সাল ৪-০-৯-২)
রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৩৩.৩ ওভারে ১৬৩/২ (মজিদ ৫৩ আহত অবসর, অমিত ৭৬, নাসির ৯, গালিব ১৩*, আল আমিন ২*; পারভেজ ৯-১-৩২-০, মুকিদুল ৬-০-৩১-০, হাশিম ৪-০-২০-০, তোফায়েল ৭.৩-০-৪২-১, শামিম ৪-০-২৯-০, সাকলাইন ৩-১-৯-১)
ফল: রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: অমিত মজুমদার
জয়ে ফিরলেন ইমরুল-শুভাগতরা
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৪ উইকেটে হারায় অগ্রণী ব্যাংক। ২৩৯ রানের লক্ষ্যে ৮ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে প্রথম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ার লিগে ফেরা ক্লাবটি।
৯ ম্যাচে অগ্রণী ব্যাংকের একটি ষষ্ঠ জয়। সুপার লিগে খেলার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন দল। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দশ নম্বরে ব্রাদার্স।
টানা চার জয়ের পর দুই ম্যাচ হেরেছিল অগ্রণী ব্যাংক। জয়ে ফেরার ম্যাচে নায়ক তাইবুর। বাঁহাতি স্পিনে ৪ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ৩৫ রান করেন ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
রান তাড়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কেউই পঞ্চাশ করতে পারেননি। সম্মিলিত অবদান জয়ের বন্দরে পৌঁছায় তারা। সাত নম্বরে নেমে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৩৫ বলে ৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন শুভাগত।
এছাড়া বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম ৪৪ ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মার্শাল আইয়ুবের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। এর সঙ্গে তাইবুর, অমিত হাসান, ইমরানউজ্জামানের ছোট ইনিংসে নিশ্চিত হয় অগ্রণী ব্যাংকের জয়।
ম্যাচের প্রথমভাগে ব্রাদার্সের পুঁজি আড়াইশর কাছাকাছি নিয়ে যান অলক কাপালি। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন ৪১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রায় দুই বছর পর পঞ্চাশের দেখা পেলেন তিনি।
তাইবুরের ৪ উইকেট ছাড়াও রুয়েল মিয়া ও আরিফ আহমেদ নেন ২টি করে উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ২৩৮/৯ (বিশাল ২১, জাহিদুজ্জামান ৬, মিজানুর ৪৪, আইচ ৩৩, রাহাতুল ২, মাইশুকুর ২, সোহাগ ৩৪, কাপালি ৫৮, সুমন ১৫, আল আমিন ৭*, জায়েদ ৩*; রবিউল ১০-১-৪৪-১, রুয়েল ৮-০-৫৪-২, আরিফ ১০-০-৩৪-২, তাইবুর ১০-০-৪১-৪, জাহিদ ১০-০-৪৮-০, শুভাগত ২-০-১৩-০)
অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৮.৪ ওভারে ২৩৯/৬ (ইমরানউজ্জামান ২১, সাদমান ৪৪, অমিত ২৫, মার্শাল ৪১, ইমরুল ১৪, তাইবুর ৩৫, শুভাগত ৪৫*, জাহিদ ৬*; আল আমিন ৮-০-৪২-১, সোহাগ ১০-০-৪৭-১, সুমন ৯-০-৩৯-০, জায়েদ ১০-১-৪১-২, রাহাতুল ৬.৪-০-২৯-১, কাপালি ৩-০-২০-০, মাইশুকুর ২-০-১৬-১)
ফল: অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: তাইবুর রহমান