আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কঠিন চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে সব সিরিজেই গুরুত্ব দেওয়ার কথা বললেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
Published : 06 Apr 2025, 07:33 PM
তুলনামূলক কম শক্তির দলের বিপক্ষে যে কোনো সিরিজে নিয়মিতদের বিশ্রাম দিয়ে তরুণ ও সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়ার ঘটনা বিশ্ব ক্রিকেটে প্রায়ই দেখা যায়। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের বাস্তবতা ভিন্ন। চোটজনিত সমস্যা না হলে প্রায় সব সিরিজে পূর্ণশক্তির দল নিয়েই খেলে বাংলাদেশ। সেটির যৌক্তিকতা তুলে ধরে মেহেদী হাসান মিরাজ বললেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব প্রতিপক্ষই কঠিন।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আসবে জিম্বাবুয়ে। সাম্প্রতিক ফর্ম, শক্তি-সামর্থ্য, দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান, সবকিছুতেই এগিয়ে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ আট টেস্টে মাত্র একটি হেরেছে বাংলাদেশ। সবশেষ তিন টেস্টেই বিশাল ব্যবধানে জিতেছে তারা। গত বছর পাকিস্তানে গিয়ে তারা হোয়াইটওয়াশ করেছে স্বাগতিকদের।
বছরের শেষ দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটি থেকেও তারা জিতে এসেছে একটি টেস্ট। চোটের কারণে ক্যারিবিয়ান সফরে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম। দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মিরাজ।
সব ঠিক থাকলে সামনের সিরিজে ফিরবেন শান্ত ও মুশফিক। তবে পাকিস্তান সুপার লিগের কারণে আবার এই সিরিজ খেলা হবে না লিটন কুমার দাসের। ব্যাটিং অর্ডারে তাই পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।
নিয়মিত ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিয়ে তরুণ ও সম্ভাবনাময় ক্রিকেটারদের বাজিয়ে দেখার উপযুক্ত মঞ্চ হতে পারে এই সিরিজ। তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রোববারের ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাস্তবতা তুলে ধরলেন মিরাজ।
“আন্তর্জাতিক ম্যাচ সবসময়ই কঠিন, খেলা যে দলের সঙ্গেই হোক না কেন। বড় দল, ছোট দল- এরকম না। পারফর্ম করলে কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবেই বিবেচনা করা হবে। হ্যাঁ, অনেক তরুণ ক্রিকেটার আছে, তাদের সুযোগটা থাকবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আমরা যে টেস্ট জিতেছিলাম, সেখানে অনেক নিয়মিত ক্রিকেটার ছিলেন না। তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ হয়েছে।”
“এই সিরিজেও অনেক তরুণের সুযোগ হতে পারে। তাদের পারফর্ম করাটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার অবসরে চলে গেছেন। ধীরে ধীরে দায়িত্বটা আমাদের নিতে হবে। পারফর্ম করা জরুরি। কারণ বাংলাদেশকে পরবর্তী আরেক ধাপে নিয়ে যেতে হবে। এই দায়িত্ব সবার। কীভাবে আমাদের ভালো করতে হবে? এইসব সিরিজগুলোতে ভালো খেলে খেলে উন্নতি করতে হবে।”
এই সিরিজের প্রস্তুতির জন্য সময় খুব বেশি পাবে না বাংলাদেশ। মঙ্গলবার দেশে আসার কথা প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ও কোচিং স্টাফের অন্যদের। পরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী শনিবার শুরু হবে অনুশীলন ক্যাম্প।
তবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বের খেলা বাকি থাকায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের আরও দুই দিন রাখতে চেয়ে বিসিবিতে আবেদন করেছে আবাহনী লিমিটেড, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মতো দলগুলো। সেই অনুরোধ রাখা হলে সোমবারের আগে পুরো দমে অনুশীলন শুরুর সম্ভাবনা কম।
সেক্ষেত্রে লাল বলে ছয় দিনের বেশি অনুশীলনের সুযোগ পাবেন না স্কোয়াডের বেশিরভাগ ক্রিকেটার। তবে খেলার মধ্যেই থাকায় প্রস্তুতির ঘাটতি তেমন অনুভূত হবে না, মনে করেন মিরাজ।
“আমরা কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছি। অনেক দিন ধরে ডিপিএলের ভেতর আছি। প্রায় একই। এটা টি-টোয়েন্টি না যে (ক্রিজে) গিয়েই মারতে হবে। তবে টেস্টের আগে সময় আছে। আমরা ১০ দিন সময় পাব। ওই সময়ে আমরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করে নিতে পারব।”
“এছাড়া সিলেটে হয়তো দুই দিনের একটা প্রস্তুতি ম্যাচও খেলতে পারি। আমি জানি না। টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করবে। ম্যাচ সিনারিও খেলতে পারি। তবে আমার মনে হয় ১০ দিন যথেষ্ট সময়, টেস্ট ক্রিকেটের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিতে পারব।”
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী ২০ এপ্রিল শুরু হবে প্রথম টেস্ট।