আইপিএল
Published : 06 May 2025, 08:12 PM
২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরের সময় ভিরাট কোহলির বয়স ১৮। পেশাদার ক্রিকেটে তখন তার পথচলা কেবল শুরু। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে সেবার খেলতে এসে তখনকার সম্ভাবনাময় কোহলিকে মনে ধরে মার্ক বাউচারের। নিজে থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি, তাকে নেটে নিয়ে অনুশীলনও করান দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা।
সাবেক প্রোটিয়া উইকেটরক্ষকের সঙ্গে কাটানো সেই সময়ের কথা এখনও মনে পড়ে কোহলির। ভারতের ব্যাটিং গ্রেট বললেন, ওই বয়সে তার ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিলেন বাউচার। ‘তরুণ কোহলিকে’ সঠিক পথ দেখিয়েছিলেন তিনি।
আইপিএলের শুরু থেকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে খেলছেন কোহলি। আর বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম আসরে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে খেলতে আসেন বাউচার। তখনই তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে সুসম্পর্ক। বলা যায়, কোহলির ‘মেন্টর’ হয়ে যান বাউচার।
বেঙ্গালুরুর ড্রেসিং রুমে সেবার ছিলেন রাহুল দ্রাবিড় ও আনিল কুম্বলের মতো ভারতীয় গ্রেটরাও। কিন্তু কোহলিকে পরামর্শ দিতে নিজে থেকেই এগিয়ে যান বাউচার।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর পডকাস্ট ‘বোল্ড অ্যান্ড বিয়ন্ড’-এ নানা বিষয়ে আলোচনার ফাঁকে সেই সময়ের গল্প শোনান কোহলি। বলেন, বাউচারকে সেদিন কিছুই জিজ্ঞাসা করেননি তিনি। বরং তার দুর্বলতাগুলো ঠিক করতে নিজে থেকেই এগিয়ে এসেছিলেন বাউচার।
“শুরুর দিকে যেসব ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলেছি, তাদের মধ্যে অল্প বয়সে আমার ওপর মার্ক বাউচারের প্রভাব সবচেয়ে বেশি ছিল। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন, যার মানসিকতা ছিল এমন যে, ‘ঠিক আছে, আমি এখানে কয়েকজন তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটারকে সহায়তা করব’।”
“তিনি আমাকে খেলতে দেখে আমার মাঝে সম্ভাবনা দেখেছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, আমার দুর্বলতাগুলো কী হতে পারে। যেমন, আমি যদি পরের ধাপে যেতে চাই, তবে আমাকে এটা করতে হবে। আমি তাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করতেই তিনি এগিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাকে এভাবে খেলতে দেখেছি এবং আমাদের এটা, ওটা এবং আরও কয়েকটি দিক নিয়ে কাজ করা দরকার।’ এরপর আমাকে নেটে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘শর্ট বল নিয়ে কাজ করতে হবে। তুমি যদি পুল শট খেলতে না পারো, তাহলে কেউ তোমাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ দেবে না।”
শুধু মুখে পরামর্শ দেওয়া নয়, কোহলির সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে কাজও করেছিলেন বাউচার। তাতে একটু একটু করে সমস্যা কাটিয়ে ওঠেন আজকের ব্যাটিং গ্রেট।
“তিনি আমার দিকে টেনিস বল এত জোরে ছুড়তে লাগলেন যে, মনে হচ্ছিল, এভাবে চলতে থাকলে পরের পর্যায়ে মনে হয় না আর যেতে পারব। কিন্তু তিনি থামলেন না, ওভাবে বল মারতেই থাকলেন। একটা সময় আমি ভালো করতে শুরু করলাম।”
কোহলি ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলুক, খুব করে চাইতেন বাউচার। ভারতের ব্যাটিং জিনিয়াস বললেন, এ নিয়ে তাকে বার্তাও দিয়েছিলেন বাউচার।
“একটা ম্যাচের কথা মনে আছে, আমরা চেন্নাই অথবা কলকাতায় খেলছিলাম এবং তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘চার বছর পর আমি ভারতে ধারাভাষ্য দিতে আসব, তখন যদি তোমাকে ভারতের হয়ে খেলতে না দেখি, বুঝব তুমি নিজেই নিজের ক্ষতি করেছ।’ ওই আলোচনায় তিনি আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কীভাবে আরও ভালো হয়ে উঠতে পারি, সেই লক্ষ্যে কাজ করতে যা আমাকে তাড়িত করেছিল।”
২০০৮ সালেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন কোহলি। সময়ের সঙ্গে বেড়ে উঠে এখন তিনি ভারতের ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন।