গালিবের দুত্যিময় বোলিংয়ে জয়ের দুয়ারে ঢাকা মেট্রো

প্রথম স্তরে উন্নীত হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়েছে সাদমান ইসলামের দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2022, 03:01 PM
Updated : 16 Nov 2022, 03:02 PM

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামা আসাদুল্লাহ গালিব উপহার দিলেন দুর্দান্ত বোলিং। বরিশাল বিভাগকে দ্বিতীয় ইনিংসে অল্পতে থামিয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখতে তরুণ এই পেসার রাখলেন বড় অবদান। রান তাড়ায় অধিনায়ক সাদমান ইসলামের ফিফটিতে জয়ের সুবাস পাচ্ছে ঢাকা মেট্রো।

জাতীয় ক্রিকেট লিগে ষষ্ঠ রাউন্ডের খেলায় শেষ দিনে জয়ের জন্য ৩৬ রান প্রয়োজন মেট্রোর। হাতে আছে ৭ উইকেট। বরিশালের দেওয়া ১৯০ রানের লক্ষ্যে ৩ উইকেটে ১৫৪ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা।

প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে অলআউট হয় বরিশাল। জবাবে ২২২ রান করে ১১ রানের লিড নেয় মেট্রো। দ্বিতীয়ভাগে বরিশালকে ২০০ রানে গুটিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন গালিব।

এবারের জাতীয় লিগ দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া ডানহাতি এই পেসার ৬৬ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ২০ বছর বয়সী গালিবের শিকার ছিল দুটি। আর আগের দুই ম্যাচ মিলিয়ে নিতে পেরেছিলেন ৫ উইকেট। 

প্রথম ইনিংসে ২৫ রান করা সাদমান রান তাড়ায় ৮ চারে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে গড়ে দেন মেট্রোর জয়ের ভিত।

ম্যাচটি ড্র করলেই প্রথম স্তরে উন্নীত হতো ঢাকা মেট্রো। কিন্তু দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তারা এখন জয়ের পথে। উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়েছে দ্বিতীয় স্তরের সেরা হওয়ার।

পঞ্চম রাউন্ড শেষে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্তরের টেবিলে শীর্ষেই রয়েছে মেট্রো। বরিশাল ১৯ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে সবার নিচে। তবে শেষ দিনে অবিশ্বাস্য কিছু করে মেট্রোকে হারিয়ে দিলে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম স্তরে উঠে যাবে তারা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২ উইকেটে ১০৩ রান নিয়ে বুধবার খেলা শুরু করে বরিশাল। গালিবের ছোবলে এদিন আর ৯৭ রান যোগ করতেই বাকি ৮ উইকেট হারায় তারা। যেখানে ৬ উইকেটই এই পেসারের শিকার।

দলটির হয়ে অধিনায়ক ফজলে মাহমুদ করেন ৪৪ রান। এরপর লড়াই চালান মোহাম্মদ আশরাফুল। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৫৩ রান করেন তিনি। চলতি লিগে এটি তার দ্বিতীয় ফিফটি। তিনি দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেছিলেন ৫৫ রানের ইনিংস। 

রান তাড়া করতে নেমে ইতিবাচক শুরু করেন মেট্রোর দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও সাদমান। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৬৭ রান। নাঈম ৪ চার ও ২ ছয়ের ৪১ রান করে আউট হন।

ফিফটি করা সাদমানের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাহিদুজ্জামানও। পরে দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি শামসুর রহমান ও আইচ মোল্লা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে) 

বরিশাল ১ম ইনিংস: ২১১

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ২২২

বরিশাল দ্বিতীয় ইনিংস: ৬৮.৪ ওভারে ২০০ (আগের দিন ১০৩/২) (ফজলে রাব্বি ৪৪, ইসলামুল ৬, সালমান ৫, আশরাফুল ৫৩, মইন ৯, সোহাগ ০, রাব্বি ০, তানভির ৩*, রুয়েল ০; স্বাধীন ৩-১-১৩-০, গালিব ১৭.৪-২-৬৬-৬, রাকিবুল ১৪-৩-২৯-১, কাজী অনিক ২০-৫-৪৮-৩, শরিফউল্লাহ ১২-৩-২৯-০, আমিনুল ২-০-১০-০)

ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১৯০) ৩৮ ওভারে ১৫৪/৩ (নাঈম শেখ ৪১, সাদমান ৬৪, জাহিদুজ্জামান ১৯, শামসুর ১৫*, আইচ ১১*; রাব্বি ২-০-২৩-০, রুয়েল ৮-০-৪৭-০, সালমান ৭-৩-১৭-১, মইন ৭-০-২৬-০, তানভির ১০-০-৩১-১, ইসলামুল ৪-১-৭-১)

বিকেএসপিতে রোমাঞ্চকর সমাপ্তির আভাস

এরই মধ্যে হয়ে গেছে এবারের জাতীয় লিগের শিরোপার নিষ্পত্তি। নিশ্চিত হয়ে গেছে চট্টগ্রাম বিভাগের অবনমনও। তবে রোমাঞ্চের আভাস মিলছে ঢাকা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যকার শেষ ম্যাচের শেষ দিনে। 

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শেষ দিন জয়ের জন্য ৮৭ রান প্রয়োজন ঢাকার। অবনমন নিশ্চিত হওয়া চট্টগ্রামের দরকার ৫ উইকেট। চট্টগ্রামের দেওয়া ২৫৫ রানের লক্ষ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেছে ঢাকা। 

ম্যাচের প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রাম গুটিয়ে যায় ২০৩ রানে। জবাবে ঢাকার ইনিংস থামে ১৯৮ রানে। ৫ রানের লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৯ রান করে ইরফান শুক্কুরের দল।

দ্বিতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৮৭ রান করেছিল চট্টগ্রাম। বুধবার আশানুরূপ খেলতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যান। মুমিনুল হক ৫৫ রানের ইনিংস খেলে রানআউট হন। এরপর বাকিরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে।

ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট পেয়েছেন সালাউদ্দিন শাকিল। ডানহাতি পেসার সুমন খানের শিকার ৩ উইকেট। চলতি লিগে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় শীর্ষে উঠে গেছেন ২২ বছর বয়সী এ পেসার।

রান তাড়া করতে নেমে ১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে ঢাকা। চতুর্থ উইকেটে ৭৪ রানের জুটি গড়ে চাপ সামাল দেন ওপেনার জয়রাজ শেখ ও অধিনায়ক তাইবুর পারভেজ। ৪টি চারে ৪১ রান করে আউট হন জয়রাজ। 

শুভাগত হোম ভালো শুরুর পরও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। নাদিফ চৌধুরী সঙ্গে ৪৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করেন তাইবুর। তিনি ৭১ রানে অপরাজিত। নাদিফ খেলতে নামবে ২২ রান নিয়ে।

চট্টগ্রামের পক্ষে ৪ উইকেট পেয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন শেষে) 

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ২০৩

ঢাকা ১ম ইনিংস: ১৯৮

চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৮৭.৫ ওভারে ২৪৯ (আগের দিন ১৮৭/৩) (মুমিনুল ৫৫, দীপু ১৪, তাসামুল ১৪, ইরফান ৮, নাঈম হাসান ১০, মুরাদ ১*, মিশু ০, মেহেদি ০; সুমন খান ১৭.৫-২-৪৩-৩, সালাউদ্দিন শাকিল ২০-৩-৫৫-৪, রিপন ১১-২-২০-১, শুভাগত ২৪-৫-৬৬-১, শাহবাজ ৫-০-৮-০, তাইবুল ৭-০-৩৪-০, সানি ৩-০-১১-০)

ঢাকা ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৫৫) ৫৫ ওভারে ১৬৮/৫ (জয়রাজ ৪১, মাহিদুল ০, মজিদ ১, সানি ০, তাইবুর ৭১*, শুভাগত ২৩, নাদিফ ২২*; মিশু ১০-০-৩৬-১, মুরাদ ২৪-৮-৬৪-৪, মেহেদি ৬-০-২৫-০, নাঈম ১৫-৪-৩৪-০)