বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে প্রায় দুই বছর পর লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে তিন অঙ্কের দেখা পেলেন তানজিদ হাসান।
Published : 07 Apr 2025, 03:03 PM
তানজিদ হাসানের ব্যাট উত্তাল আসরের শুরু থেকেই। তবে সেই তরঙ্গ স্পর্শ করতে পারছিল না শতরানের তীর। ঈদ উৎসবের ছুটির পর প্রথম ম্যাচেই সে আক্ষেপ দূর করলেন লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ওপেনার। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সোমবার পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের বোলারদের নিয়ে যেন ছেলেখেলায় মেতে ওঠেন তানজিদ। ১০ চার ও ৭ ছক্কায় মাত্র ৫৯ বলে করেন সেঞ্চুরি।
বিকেএসপিতে জয়ের জন্য তাদের লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৩০ রানের, সেখানে একাই খেলেন ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস।
লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। প্রায় দুই বছর ও ৪৬ ইনিংস পর তিন অঙ্কের দেখা পেলেন ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ২০২৩ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে ১০৬ রান করেছিলেন তিনি।
চলতি লিগে আগের সাত ইনিংসের প্রতিটিতেই সম্ভাবনাময় শুরু করেছেন তানজিদ। তবে ফিফটি করতে পেরেছেন তিনটিতে। সেই তিন ইনিংসের কোনোটিতেই ছুঁতে পারেননি ৭০। ইনিংস বড় করতে না পারায় রোববার সংবাদমাধ্যমে আক্ষেপের কথা বলেন তিনি। পরদিনই খেললেন ঘুচিয়ে দিলেন তা।
লিগে এখনও পর্যন্ত ৮ ইনিংসে ৭৬.৮০ গড়ে তানজিদের সংগ্রহ ৩৮৪ রান। ধারাবাহিকভাবে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৪৩.২৮ স্ট্রাইক রেটে এই রান করেছেন। লিগে অন্তত আড়াইশ রান করা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার স্ট্রাইক রেটই সবচেয়ে বেশি।
তানজিদের তাণ্ডবে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৮৯ বল বাকি থাকতেই জিতে গেছে রূপগঞ্জ। ৯ ম্যাচে তাদের এটি পঞ্চম জয়। এর মধ্যে তিনটিই তারা জিতেছে ১০ উইকেটে।
১১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকায় রূপগঞ্জের অবস্থান চতুর্থ। সমান ম্যাচে দুই জয়ে দশ নম্বরে পারটেক্স।
ছোট লক্ষ্যে প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি মারেন তানজিদ। চতুর্থ ওভারে তৌফিক আহমেদের বল দুটি চারের পর ওড়ান দুই ছক্কায়। দুই ওভার পর আলাউদ্দিন বাবুর বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে লং অফ দিয়ে মারা ছক্কায় ২৬ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন বাঁহাতি ওপেনার।
ফিফটি ছুঁয়ে এদিন আর ভুল করেননি ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। একই ছন্দে এগিয়ে ৩৩ বলে করেন পরের পঞ্চাশ রান। মোহাম্মদ রাকিবের বলে বাউন্ডারি মেরে নিজের সেঞ্চুরি ও দলের জয় নিশ্চিত করেন তানজিদ।
আরেক ওপেনার সাইফ হাসান ৫৩ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
ম্যাচের প্রথমভাগে পারটেক্সকে অল্পে আটকে রাখার বড় কারিগর শেখ মেহেদি হাসান। ১০ ওভারে এক মেডেনসহ ৩৪ রানে ৪ উইকেট নেন অভিজ্ঞ অফ স্পিনার। দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও রেজাউর রহমান রাজার শিকার ২টি করে উইকেট।
পারটেক্সের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন তিন নম্বরে নামা রুবেল মিয়া। আর কেউ ২৫ রানও করতে পারেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব: ৩৪.৪ ওভারে ১২৯ (জয়রাজ ১৬, জসিম ৬, রুবেল ৪১, রাকিব ০, আহরার ২৪, সালেহিন ৩, আলাউদ্দিন ১৪, শহিদুল ১৯, তানভির ০, তৌফিক ০, আশরাফুল ২*; শরিফুল ৬-০-২০-২, তানভির ৮-০-৩০-০, রাতুল ৪-০-১৪-১, রাজা ৬-০-২৭-২, মেহেদি ১০-১-৩৪-৪, সাইফ ০.৪-০-৩-১)
লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ১৮.৩ ওভারে ১৩২/০ (সাইফ ২৬*, তানজিদ ১০৩*; আশরাফুল ৩-০-১৯-০, তৌফিক ২-০-২৭-০, আলাউদ্দিন ২-০-১৩-০, তানভির ৩-০-১০-০, শহিদুল ১-০-১২-০, জয়রাজ ৩-০-১৮-০, আহরার ৩-০-১৮-০, রাকিব ১.৩-০-১৫-০)
ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: তানজিদ হাসান।