টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠার ম্যাচে রেকর্ড বইয়ের পাতাও ওলটপালট করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
Published : 27 Jun 2024, 10:15 AM
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে উজ্জীবিত আফগানিস্তানকে লড়াই করতেই দিল না দক্ষিণ আফ্রিকা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে আফগানদের অল্পেই গুটিয়ে দেওয়ার পর অনায়াসেই ম্যাচ জিতে প্রথমবার শিরোপা লড়াইয়ের মঞ্চে জায়গা করে নিল প্রোটিয়ারা।
ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা ক্রিকেট একাডেমিতে বিশ্বকাপের প্রথম সেমি-ফাইনালে বড় জয়ের ম্যাচে একগাদা রেকর্ডও গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেসব রেকর্ড ও পরিসংখ্যান
১
নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এর আগে সাতবার সেমি-ফাইনাল থেকে বিদায় নেয় তারা।
১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭, ২০১৫ ও ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিতে থামে প্রোটিয়াদের যাত্রা। আর টি-টোয়েন্টিতে ২০০৯ ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে সেরা চারে খেলেছিল তারা।
৮
চলতি আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার টানা অষ্টম জয়। বিশ্বকাপে টানা জয়ের রেকর্ডে অস্ট্রেলিয়ার পাশে বসল তারা। ২০২২ ও ২০২৪ মিলে টানা ৮ ম্যাচ জেতে ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়নরা। আফগানিস্তানের কাছে হেরে থামে তাদের জয়যাত্রা।
ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ছাড়িয়ে রেকর্ডটি এককভাবে নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ থাকছে দক্ষিণ আফ্রিকার।
এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটিই দক্ষিণ আফ্রিকার টানা জয়ের রেকর্ড। ২০০৯ ও ২০২১ সালে টানা ৭ ম্যাচ জিতেছিল তারা।
৫৬
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়েই নক আউট পর্বে সর্বনিম্ন স্কোর।
সাদা বলের ক্রিকেটের বিশ্ব আসরের নক আউট ম্যাচে একশ রানের নিচে অল আউটের ঘটনা আছে আর একটি। ১৯৭৫ সালে প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ৯৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
৫৬
আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৫ রানে অল আউট হয়েছিল ইংল্যান্ড।
এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে এটিই আফগানিস্তানের সর্বনিম্ন স্কোর। ২০১৪ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা। এই সংস্করণে তাদের চারটি সর্বনিম্ন স্কোরের সবগুলোই বিশ্বকাপে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কোনো দলের সর্বনিম্ন স্কোরও এটি। চলতি বিশ্বকাপেই শ্রীলঙ্কাকে ৭৭ রানে অল আউট করেছিল প্রোটিয়ারা।
৬৭
৫৭ রানের লক্ষ্যে ৬৭ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বলের হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। ২০০৭ সালে পাকিস্তানকের বিপক্ষে ৫১ বল বাকি থাকতে জিতেছিল তারা।
এছাড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বলের হিসেবে এটিই আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় পরাজয়।
১২৪
দুই ইনিংস মিলে খেলা হয়েছে মাত্র ২০.৪ ওভার বা ১২৪ বল। বিশ্বকাপের নক আউটে বলের হিসেবে এটিই সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ম্যাচ। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেমি-ফাইনালের নিষ্পত্তি হয়েছিল ২০৩ বলে।
১৭
দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র উইকেটটি নেন ফাজালহাক ফারুকি। এর সৌজন্যে ৮ ইনিংসে ১৭ উইকেট নিয়ে শেষ হলো তার এবারের যাত্রা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড এটি।
২০২১ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমে ৮ ইনিংসে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তার সমান ইনিংসেই রেকর্ডটি নিজের করে নিয়েছেন ফারুকি।
এর আগে রেকর্ডটি ছিল অজান্থা মেন্ডিসের। ২০১২ সালে ৬ ইনিংসে ১৫ উইকেট নেন শ্রীলঙ্কার রহস্য স্পিনার। পরে ২০২২ সালে হাসারাঙ্গাও নেন ১৫ উইকেট।
এছাড়া চলতি আসরে ৬ ইনিংসে আর্শদিপ সিংয়ের উইকেটও ১৫টি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে ফারুকিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ভারতের তরুণ বাঁহাতি পেসার।
১৩
সেমি-ফাইনালের দুটিসহ এবারের আসরে আনরিক নরকিয়ার উইকেট ১৩টি। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড এটি। ২০১৪ সালে ১২ উইকেট নিয়েছিলেন ইমরান তাহির। চলতি আসরে কাগিসো রাবাদার উইকেটও ১২টি।
১৩
আফগানিস্তানের ৫৬ রানের মধ্যে অতিরিক্ত থেকে আসে সর্বোচ্চ ১৩ রান। দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন শুধু আজমতউল্লাহ ওমারজাই (১০ বলে ১২)।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পূর্ণাঙ্গ ইনিংসে অতিরিক্ত থেকে সর্বোচ্চ রানের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। ২০১০ সালের আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬৮ রানে অল আউট হয়েছিল আয়ারল্যান্ড। সেদিন অতিরিক্ত থেকে আসে ১৯ রান। আর ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭ রান করেন গ্যারি উইলসন।