‘হলুদ সাংবাদিকতার' বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি: ঢাবি উপাচার্য

নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা হচ্ছে বলে হুঁশিয়ার করেছেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2023, 01:38 PM
Updated : 6 April 2023, 01:38 PM

জনগণকে যারা অপ-তথ্য দিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত হানে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “সভ্য বিশ্বে যে কোনো ধরনের সাংবাদিকতার জন্য কিছু মূলনীতি থাকে৷ কিন্তু যখন কেউ হলুদ সাংবাদিকতা করেন ও অপ-তথ্য দেন এবং বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত হানেন তখন সেটা দেশের সার্বভৌমত্বের উপরেরই এক ধরনের আঘাত আসে। এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”

এদিন শহীদ মিনারে ‘স্বাধীনতা-সচেতন নাগরিক সমাজ’ ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন হয়। এতে স্বাধীনতা দিবসে প্রচারিত সংবাদের জেরে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার নিবন্ধন বাতিলসহ সম্পাদক মতিউর রহমানকে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।

এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ শেষে নির্বাচন যখন সামনে নানা ধরনের অপপ্রয়াস ও অপকৌশল শুরু হয়েছে। সেটির জন্য যারা এই সকল কাজে মদদ দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া সাংস্কৃতিক শক্তিসমূহের মৌলিক দায়িত্ব।

“একটি বিশেষ পটভূমি তৈরির উদ্দেশেই আমাদের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। যাতে নানা ধরনের উসকানি ও সাম্প্রদায়িক মদদ দেওয়ার জন্য নানা ধরনের অপকৌশল থাকে। যেসকল পত্রিকা, যে সকল শক্তি অপকর্মে লিপ্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে সকলের  সম্মিলিত সোচ্চার হওয়া সময়ের দাবি।”

মানবন্ধনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, “স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর প্রচারিত সংবাদকে শুধু অপসাংবাদিকতা বা হলুদ সাংবাদিকতা বলা যাবে না। এটির মাধ্যমে আঘাত এসেছে আমাদের স্বাধীনতার মর্যাদার উপরে।”

মানববন্ধনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার বাদী বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল মালেক বক্তব্য দেন।

এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

অধ্যাপক ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ছাত্রলীগের স্মারকলিপি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের লেখা ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ‘ইতিহাস বিকৃতির’ অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে এ স্মারকলিপি দেন।

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে একটি মতামত কলাম লেখেন। ওই লেখায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজের লেখা বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলা হয়। ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিল বইটি।

তবে ১৪ বছর আগে লেখা ওই বই নিয়ে তোলা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ। এ ধরনের অভিযোগে বিস্ময় প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেছেন, তার বইটি ভুলভাবে পড়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি- এর পরিচালক অধ্যাপক ফকরুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটিও করেছে বিশ্ববিদ্যালয কর্তৃপক্ষ।=

স্মারকলিপিতে ১৫ দিনের মধ্যে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কার্যকারণ উদঘাটন ও প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানানো হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও আছে স্মারকলিপিতে।