‘প্রলয় চক্র’কে চিহ্নিতে ঢাবির তদন্ত কমিটি, ২ জন বহিষ্কৃত

এই ‘গ্যাং কার্যক্রম’ কোনোক্রমেই কাম্য হতে পারে না, বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2023, 01:25 PM
Updated : 28 March 2023, 01:25 PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় ‘প্রলয়’ চক্রের গ্রেপ্তার দুই সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পাশাপাশি আলোচিত এই চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করতে গঠন করা হয়েছে একটি আন্তঃহল তদন্ত কমিট।

বহিষ্কৃত দুজন হলেন- নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. নাইমুর রহমান দুর্জয় এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাকিব ফেরদৌস। দুজনই ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সাময়িক বহিষ্কারের এই অনুমোদন দেন। দুজনকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সাত দিনের মধ্যে তাদের তার লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্‌দীন হলের সামনে অপরাধ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধর করেন তারই একদল সহপাঠী।

তখনই ‘প্রলয়’ নামে ক্যাম্পাসভিত্তিক সংঘবদ্ধ চক্র থাকার খবরটি আলোচনায় আসে। বিভিন্ন হলের একদল শিক্ষার্থী এমন ফেইসবুক গ্রুপ খুলে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে বলে খবর বের হয়। বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রকে তারা আড্ডাস্থলে পরিণত করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Also Read: ঢাবি শিক্ষার্থীকে মারধর: ‘প্রলয়’ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা, আটক ২

Also Read: ঢাবি শিক্ষার্থীকে মারধর: ‘প্রলয়’ চক্রের ২ সদস্য কারাগারে

এ ঘটনায় রোববার জোবায়ের মা ওই চক্রের ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে দায়ী করে শাহবাগ থানায় অভিযোগ করেন। তার মামলার ভিত্তিতে এই দুই জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখন তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত হলেন।

এদিকে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভায় আন্তঃহল কমিটি গঠনের কথা জানানো হয় আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ইকবাল রউফ মামুনকে আহ্বায়ক এবং সহকারী প্রক্টর এম এল পলাশকে সদস্য সচিব করা হয়েছে কমিটিকে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, স্যার এ এফ রহমান হল, কবি জসীম উদদীন হল, জগন্নাথ হল, হাজী মুহম্মদ মহসিন হল, বিজয় একাত্তর হল, জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ।

কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে উপাচার্যকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত ‘প্রলয় গ্যাং’ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর উত্থানের কথা জানা যায়। কথিত এই গ্যাং-এর সদস্যদের আচরণে বখাটেপনা ও উচ্ছৃঙ্খলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী এই ‘গ্যাং কার্যক্রম’ কোনোক্রমেই কাম্য হতে পারে না।

যেসব শিক্ষার্থী এই ‘গ্যাং অপকর্মে’ জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।