একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ’অতি দ্রুত’ এ নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, বলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
Published : 22 Apr 2025, 08:19 PM
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-কুয়েটের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় এ অনুরোধ জানিয়েছেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি সম্পর্কে সরকার সচেতন রয়েছে এবং একটি প্রতিনিধি দল আলোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে বলে উপদেষ্টা আন্দোলনরদের আশ্বস্ত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা কুয়েটের আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গরমে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বেন, তাই তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন।
মন্ত্রণালয় বলছে, একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ’অতি দ্রুত’ খুলনা যাবে কুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে। তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে চলতি সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
কুয়েট উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল
কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি: এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
কুয়েটের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অপসারণের দাবিতে সোমবার বিকাল থেকে ক্যাম্পাসের ‘স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের’ বারান্দায় আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন ৩২ জন ছাত্র।
এর আগে সোমবার বেলা সাড়ে ৩টায় কুয়েটের ড. এম এ রশিদ হলের সামনে প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী জড়ো হন। কিছুক্ষণ পর তারা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় যান। বিকাল ৪টা থেকে সেখানে আমরণ অনশন শুরু করেন ৩২ জন শিক্ষার্থী। বাকিরা সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে চলে যান।
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবি, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতরা হামলা করলেও কুয়েট প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হামলাকারীদের নাম না দিয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে দায়সারা একটি মামলা করেছে প্রশাসন। হামলার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
তাদের দাবি, কিছুদিন আগে বহিরাগত একজন বাদী হয়ে ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কুয়েট কর্তৃপক্ষ ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এর মধ্যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীও রয়েছে। উপাচার্যের কাছে বারবার দাবি জানালেও তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করেননি।
কুয়েটে সংঘর্ষ: ৩৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার, হল খুলবে ২ মে
৩৭ শিক্ষার্থী বহিষ্কার: কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে ঢাবিতে বিক্ষোভ
শিক্ষার্থীরা গত ১৩ এপ্রিল ক্যাম্পাসে ঢুকে হল খুলে দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। পরে ১৫ এপ্রিল তারা তালা ভেঙে হলে ঢোকেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলে তাদের খাবার, পানি ও ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ তাদের দাবি পূরণের উদ্যোগও নেয়নি। এ কারণে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনে বাধ্য হয়েছেন।
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় নাম না দিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।