“রাজউকের বোর্ডে কেবল আমলা থাকলে চলবে না। বোর্ডে শহর পরিকল্পনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে,” বলেন তিনি।
Published : 23 Apr 2025, 08:44 PM
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউককে জনবান্ধব করতে নতুন করে আইন প্রণয়ন করার কথা বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এ ছাড়া মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের (এমপি) জন্য আবাসনের যৌক্তিকতা দেখছেন না তিনি।
বুধবার বিকালে রাজউক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জনবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট ও বিল্ডিং কন্সট্রাকশন অ্যাক্ট নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। অল্প পরিবর্তনে কাজ হবে না। সময় ও বাস্তবতার চাহিদায় প্রয়োজনীয় কিছু রেখে নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে।
“রাজউকের বোর্ডে কেবল আমলা থাকলে চলবে না। বোর্ডে শহর পরিকল্পনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে। ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে কাজ করতে হবে।”
রাজউককে রাজনৈতিক চাপে মুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “গোটা এলাকাভিত্তিক মহাপরিকল্পনা করতে হবে। বেসরকারি হাউজিং নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস আগে ছিল না, এখন তা জরুরি।
“মন্ত্রী-এমপিদের জন্য হাউজিং করার যৌক্তিকতা নেই। রাজউককে জাতীয় ও নির্মিত ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করতে হবে। নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন রাজউকের দায়িত্ব। রাজউকের ভবনটিও আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত।”
রাজউক ও এস্টেট ডিপার্টমেন্টকে জনসেবামুখী করার গুরুত্ব তুলে ধরে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সেবা ডিজিটালাইজ করতে হবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।
রাজউক চেয়ারম্যানের আবাসিক ভবনকে বাণিজ্যিক করার ক্ষমতা রহিত হওয়া উচিত বলে মনে করে তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, “মহাপরিকল্পনার বাইরে না গিয়েই বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ঢাকা শহরের জন্য একটি নতুন ভিশন দরকার। সেই ভিশনে সিভিল সোসাইটি, রাজউক ও সাধারণ মানুষের মতামত প্রতিফলিত হওয়া উচিত। জনগণের সেবা বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, যাতে ঢাকার ওপর চাপ কমে।
“রাজউক কি ডেভেলপার না রেগুলেটর- তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে। রাজউককে আর হাউজিং করতে দেওয়া যাবে না। গৃহহীনদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা হতে পারে, ধনীদের জন্য নয়।”
বাইরের বিশেষজ্ঞ দিয়ে নিরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “তোতাইল বিলের মত জলাশয় পুনঃখনন করতে হবে। হাউজিং প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মনিটরিং চালু রাখতে হবে। রাস্তার পাশে গাছ লাগাতে হবে। এলাকা না বাড়িয়ে সুপারভিশন বাড়াতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে তাদের কাজ করতে দিতে হবে।”
রাজউক মিলনায়তনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউকের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।