পূজার সময় পুরো হল সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে বলে জানান প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল।
Published : 09 Oct 2024, 06:33 PM
দুর্গাপূজা উদযাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি অতিথি ও জগন্নাথ হলের আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল দুর্গাপূজা উদযাপনের বিষয়ে সার্বিক বিষয় ও নির্দেশনা উপস্থাপন করেন।
পূজা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক হলের আবাসিক শিক্ষক কালিদাস ভক্তসহ অন্যান্য শিক্ষকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দেবাশীষ পাল লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমরা পূজা আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, সমগ্র জগন্নাথ হল সিসি ক্যামেরার আওতাধীন থাকবে। প্রবেশমুখে মেটাল ডিটেক্টরসহ অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহার থাকবে; ছোট শিশুদের দুগ্ধ সেবনের জন্য বিশেষ নিরাপদ একটি কর্নার স্থাপন করা হয়েছে।
“কোনো ধরনের পটকা বা আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ স্টিকার সরবরাহ করা হয়েছে। পলাশী ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আমরা হলের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে একটি অগ্নি নির্বাপন মহড়ার সফল আয়োজন করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে পূজা উপলক্ষে বেশকিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হয়।
অতিথিদের জন্য নির্দেশনা
১. দুর্গাপূজার ভাবগাম্ভীর্য ও পবিত্রতা সর্বদা বজায় রাখতে হবে।
২. বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিরেকে উপাসনালয়ের মূল বেদীতে ওঠা যাবে না।
৩. উপাসনালয়ে সকল ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশার দর্শনার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করতে হবে।
৪. উপাসনালয় বা হল প্রাঙ্গণে রাষ্ট্র বা ধর্মবিরোধী কোনো বক্তব্য/মন্তব্য করা যাবে না।
৫. হল প্রশাসনের যথাযথ অনুমতি ব্যতিত শিক্ষার্থীদের ভবনে/রুমে প্রবেশ করা যাবে না।
৬. হল প্রাঙ্গণে কোনো যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।
৭. নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও তল্লাশির প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে সহযোগিতা করতে হবে।
৮. দর্শনার্থীদের অবশ্যই হল গেটের নির্দিষ্ট পথ দিয়ে প্রবেশ করতে ও বের হতে হবে।
৯. গেস্ট রুমে স্থাপিত ব্রেস্ট ফিডিং কর্নারে মায়েরা প্রয়োজনে দুগ্ধপান করাতে পারবেন।
১০. পূজা প্রাঙ্গণে সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
১১. হলের মধ্যে পার্টি স্প্রে, গ্যাস বেলুন, আতশবাজি ইত্যাদি বহন ও ব্যবহার করা যাবে না।
১২. হলের নির্দিষ্ট স্থানে বা লাল রঙের বিনে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে হবে।
১৩. উপাসনালয়ের নির্দিষ্ট প্রণামী বাক্সে বা তথ্যকেন্দ্রে প্রণামী/অনুদান প্রদান করতে পারবেন।
১৪. হলের অভ্যন্তরে কোন প্রকার ধূমপান বা এলকোহলজাতীয় পণ্য সেবন করা যাবে না।
১৫. হলের অভ্যন্তরে অপ্রয়োজনীয় অবস্থান না করে দ্রুততম সময়ে হল ত্যাগ করতে হবে।
এর বাইরে ছাত্রদের জন্য কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো-
১. হলের আবাসিক/অনাবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে সার্বক্ষণিক পরিচয়পত্র সাথে রাখতে হবে।
২. জগন্নাথ হল প্রশাসন প্রদত্ত স্টিকার ছাড়া কোনো মোটরসাইকেল হলে প্রবেশ করতে পারবে না।
৩. শারদীয় দুর্গাপূজার ভাবগাম্ভীর্য ও পবিত্রতা সর্বদা বজায় রাখতে হবে।
৪. বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিরেকে উপাসনালয়ের মূল বেদীতে ওঠা যাবে না।
৫. উপাসনালয়ে সকল ধর্ম-বর্ণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করতে হবে এবং কোনো ধর্মের প্রতি বিরূপ মন্তব্য করা হতে বিরত থাকতে হবে।
৬. উপাসনালয়ে দেশ ও রাষ্ট্র বিরোধী কোনো বক্তব্য/মন্তব্য করা যাবে না।
৭. হল প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত ভবনে/রুমে কোনো অতিথি নেয়া যাবে না।
৮. সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
৯. পার্টি স্প্রে, গ্যাস বেলুন, আতশবাজি ইত্যাদির হলের মধ্যে অবস্থান নিষিদ্ধ।
১০. যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না।
ঢাবির ৬ প্রবেশমুখে চেকপোস্ট
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ৬টি প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
প্রবেশমুখগুলো হলো নীলক্ষেত, পলাশী, শাহবাগ, বার্ন ইউনিট, দোয়েল চত্বর এবং শহীদ মিনার এলাকা।
গত ৭ অক্টোবর দুপুর থেকে এসব চেকপোস্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং ১৪ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত এটি চলমান থাকবে।
এসময় নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।