চাকরিপ্রত্যাশীদের অবরোধে গুলিস্তান-সদরঘাট ও গুলিস্তান-ধোলাইখাল সড়কে যানজট তৈরি হয়।
Published : 04 Jul 2024, 06:02 PM
চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালের দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলা থেকে মিছিল মূল ফটকের সামনে আধা ঘণ্টা সড়ক আটকে রাখেন তারা। এরপর মিছিল নিয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়ে ফের সড়ক অবরোধ করেন।
চাকরিপ্রত্যাশীদের অবরোধে গুলিস্তান-সদরঘাট ও গুলিস্তান-ধোলাইখাল সড়কে যানজট তৈরি হয়।
আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জসীম উদ্দিন বলেন, “আমাদের এই আন্দোলন ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ কেন্দ্রীয় সংসদ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের সকলের সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে আন্দোলন তীব্র হচ্ছে। দাবি না মানলে সামনে আরও পরিসরে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেওয়া আরেক শিক্ষার্থী বাংলা বিভাগের দশম ব্যাচের সাজ্জাদ হোসেন মুন্না বলেন, “আমাদের এ কোটা বাতিল আন্দোলন যৌক্তিক আন্দোলন। যৌক্তিক এ দাবির বাস্তবায়ন না হলে আমরা থেমে থাকব না। আমাদের আন্দোলনের রূপরেখা পরিবর্তিত হবে। আন্দোলন আরও বেগবান হবে।”
রায়সাহেব বাজার মোড়ে ২০ মিনিট সড়ক অবরোধের পর ব্যানার হাতে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেসময় কিছু শিক্ষার্থী সেখানে অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন। পরে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা তাদের বুঝিয়ে মিছিল নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক ঘুরে ক্যাম্পাসে চলে আসেন।
সেসময় সাজ্জাদ হোসেন মুন্না শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “যারা নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী, তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমরা কথা বলেন সমন্বয়ের মাধ্যমে আন্দোলন আরও জোরদার করব।”
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। ফলে আপাতত হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে।
এর প্রতিবাদে সকালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল ও ক্যাম্পাস সংলগ্ন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীদের ৪ দাবি
• ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
• ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
• সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।
• দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন-
মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় আপাতত বহাল
কোটার রায় বহাল: জাবি শিক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক
কোটা বিরোধী আন্দোলন: ঢাবির হলে ছাত্রলীগের বাধার অভিযোগ