কোটা বাতিলের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলের পরপরই মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার অভিযোগে মানববন্ধন করেছে ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড’।
Published : 02 Jul 2024, 09:54 PM
চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে মিছিলের পরপরই মুক্তিযোদ্ধাদের ‘অবমাননা ও কটূক্তির’ অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীদের আরেকটি দল।
মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শুরুতে কলা ভবনের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
মূল ফটকের সামনে কিছু সময় সড়ক অবরোধ করে রায়সাহেব বাজার মোড় ও বাহাদুর শাহ পার্ক ঘুরে ক্যাম্পাসের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সামনে তারা সমাবেশ করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘মুখপাত্র’ বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসাইন মুন্না বলেন, “আমাদের দাবি, ২০১৮ সালের কোটার পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ গ্রেডে কোটা প্রয়োগের আমূল সংস্কার করতে হবে। একই কোটা বারবার প্রয়োগের বিষয়টি বাতিল করতে হবে।
“স্বাধীনতার এত বছর পর যে দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ কর্মহীন, সেখানে এই ধরনের কোটা প্রথা রীতিমত বৈষম্য।”
অপরদিকে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার নিয়ে ‘অবমাননা ও কটূক্তি’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ডের’ সভাপতি রাকিবুল হাফিজ অন্তর।
ওই অভিযোগে তারা দুপুরে ক্যাম্পাসের ভাষা শহিদ রফিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন।
রাকিবুল বলেন, “সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, কটুক্তি করা হচ্ছে। কোটা বাতিল নাকি সংস্কার, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এ দেশে বাগস্বাধীনতা আছে, সবাই নিজেদের দাবি জানাতে পারে।
“আমাদের বাপ-দাদারা মুক্তিযুদ্ধ করেই আপনাদের বাগস্বাধীনতা এনে দিয়েছে৷ আর সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হচ্ছে, কটূক্তি করা হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে এসব শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের দাবি ও বিচার দাবি করছি।”
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার।
ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্ট।
এরপরই কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফের বিক্ষোভ মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা।
পুরনো খবর-
মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ: হাই কোর্টের রায়