এই ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ১২ হাজার; প্রতি আসনের বিপরীতে লড়ছেন ১৪ জন।
Published : 28 Apr 2024, 02:30 AM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
শনিবার এক ঘণ্টার এই ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয় দুপুর ১২টায়।
এবার মোট ২৩টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর 'এ' ইউনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের অধীনে পরীক্ষা দিচ্ছেন ৫৩ হাজার ৮১৫ জন শিক্ষার্থী। এই ইউনিটে মোট আসন সংখ্যা ১২ হাজার; প্রতি আসনের বিপরীতে লড়ছেন ১৪ জন।
গুচ্ছভুক্ত ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটে মোট পরীক্ষার্থী ৩ লাখ ৫ হাজার ৩৪৬ জন। বিজ্ঞান শাখার ‘এ’ ইউনিটে এবার আবেদন করেন ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৯৯ জন পরীক্ষার্থী। ‘বি’ ইউনিটে এই সংখ্যা ৯৪ হাজার ৬৩১ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৪০ হাজার ১১৬ জন আবেদন করেছেন।
এবার ভর্তিচ্ছু যেসব পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্ধারণ করেছিল, তাদের আসন বিন্যাস ক্যাম্পাস ও এর আওতায় থাকা পাঁচটি উপ-কেন্দ্রে সাজানো হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উপকেন্দ্রগুলো হল-, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, সরকারী বাংলা কলেজ, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যে কোনো ধরনের জালিয়াতি রোধে আমাদের সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে। আমাদের এখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোভার স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। প্রক্টরিয়াল বডিও সর্বোচ্চ নজরদারি করছে।
“তাছাড়া তীব্র গরমে আমরা অভিভাবকদের জন্য ভিক্টোরিয়া পার্কে মোট ৪০০ আসনের ব্যবস্থা রেখেছি। তাছাড়া কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে সুপেয় পানির সরবরাহ রয়েছে।”
আগামী ৩ মে মানবিক বিভাগ অর্থাৎ ‘বি’ ইউনিটে এবং ১০ মে বানিজ্য বিভাগ অর্থাৎ ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা সারা দেশে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। এ দুটি পরীক্ষা ১ ঘন্টা এগিয়ে দুপুর ১১টায় শুরু হয়ে ১২ টায় শেষ হবে।
গরম ও যানজটে ভোগান্তি
এদিকে দেশজুড়ে চলা তীব্র গরমে ভোগান্তিতে পড়েছেন পরীক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা। পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা অভিভাবকদের বেশিরভাগই বসেছেন ভিক্টোরিয়া পার্কে। এ সময় তাদের হাতে পাখা দেখা গেছে।
পার্কে অভিভাবকদের বসার জন্য ৪০০ চেয়ারের ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাখা হয়েছে তিন হাজার লিটার সুপেয় পানি এবং ১০ হাজার ওয়ান টাইম গ্লাস।
এছাড়া ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিমেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে, যে টিমে চিকিৎসক আছেন দুজন। ঢাকা ওয়াসা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবারের মত এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এদিকে পরীক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন। রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে সদরঘাট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় তীব্র যানজট দেখা গেছে। গুলিস্তান হয়ে আসা বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই যানজটের কারণে ক্যাম্পাস পর্যন্ত হেঁটে আসতে হয়েছে।
পরীক্ষা দিতে আসা দুলন গৌড় নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, “মহাখালী থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত আসতে আমার প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। রাস্তায় অনেক জ্যাম। গুলিস্তান আসার পর দেখি রাস্তা পুরোটা ব্লক। গুলিস্তান থেকে হেঁটে হেঁটে কেন্দ্রে আসলাম। এই তীব্র গরমে এভাবে কেন্দ্রে পৌঁছানো অনেক কষ্টসাধ্য।”
রাজধানীর রামপুরা থেকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা আরেক শিক্ষার্থী ফারিহা আক্তার বলেন, “রাস্তায় এখন অনেক যানজট। উত্তরা থেকে পুরান ঢাকা আসতে আসতেই গরমে আর যানজটে প্রায় অসুস্থ হয়ে গেছি। গরমের মধ্যে এতটা সময় তীব্র যানজটে বাসে আসা অনেক কষ্টকর। যানজট নিরসনে ব্যবস্থা নিলে ভোগান্তি কম হত।”
মেয়েকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে কেন্দ্রে এসেছেন জায়েদা বেগম।
তিনি বলেন, “গরমে বাসে চড়ে মেয়েকে নিয়ে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। ভোরে বের হয়েও গুলিস্তান পৌঁছেছি সকাল ১১ টায়। গুলিস্তান থেকে আর বাস চলছেই না, থেমে আছে। পরে হেঁটেই আসতে হয়েছে। মেয়েকে কেন্দ্রে ঢুকিয়েছি।”
ট্রাফিক পুলিশ সদস্য শরিফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল থেকে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যেন গেইট সামনের রাস্তা সবসময় ফাঁকা থাকে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের যেন ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করেছি।”
যানজট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “সকাল ১১ টার পর ক্যাম্পাসের সামনে দিয়ে গাড়ি চলার বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেক দূরে নামিয়ে দিলে তাদের কেন্দ্রে আসতে অসুবিধা হচ্ছে দেখে ট্রাফিক পুলিশ নির্দেশনা কিছুটা শিথিল করে৷ এখন অবশ্য জ্যাম অনেকটা কমে গেছে।”