“আমরা আজ তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করছি,” বলেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক জাকির হোসেন।
Published : 17 Mar 2024, 06:26 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তের গতি কোন পথে এগোবে তা বুঝতে আরো তিন-চারটি বৈঠক করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটি।
সংশ্লিষ্ট সবাইকে এক এক করে ডেকে কথাও বলবে কমিটি। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে।
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটি রোববার প্রথম সভায় বসে।
বিকালে সভা শেষে কথা বলেন কমিটির আহ্বায়ক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা আজ তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেছি। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করছি। শুরু থেকেই এই ঘটনায় যারা যারা সংশ্লিষ্ট ছিলেন সবাইকে আমরা ধারাবাহিকভাবে ডাকার চেষ্টা করব।”
তদন্ত কমিটির পরবর্তী সভা সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
প্রথম সভায় আলোচনার বিষয়ে কমিটির সদস্য সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, “আজকে প্রথম সভায় ঘটনা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করছি, সেগুলো দেখছি। আর নিজেদের মধ্যে একটু আলোচনা করলাম। এখনও জানানোর মতো কিছু হয় নাই। আরও তিন চারটা সভার পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব যে, তদন্ত কোনদিকে আগাবে।”
তদন্ত কমিটির কাজ শুরুর কথা এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাদেকা হালিম সাংবাদিকদের জানান। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার আশাও প্রকাশ করেন তিনি।
অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাসকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যের এই কমিটি করা হয়েছে।
কমিটির বাকি ৩ সদস্য হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবুল হোসেন এবং সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ঝুমুর আহমেদ।
অবন্তিকার আত্মহত্যা: সভায় বসেছে তদন্ত কমিটি
তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। এর আগে নিজের ফেইসবুক আইডিতে তার এমন মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন দুইজনকে। তারা হলেন-সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।
আম্মান তাকে অনলাইন ও অফলাইনে হুমকির ওপর রাখতেন এবং সহকারী প্রক্টরকে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনিও হুমকি ধমকি দিয়েছেন- আত্মহত্যার আগে এমন অভিযোগের কথা লিখে গেছেন তিনি।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাত থেকে বিক্ষোভ শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবন্তিকার সহপাঠী ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সকালে রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন দ্বীন।
এদিন রাতে আম্মান ও দ্বীনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এতে দুইজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাতেই আম্মান ও দ্বীনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান। পরে তাদেরকে ঘটনাস্থল কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।