চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর করের চাপ না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানোর আহ্বান সংগঠনের সভাপতি নাসের এজাজ বিজয়ের।
Published : 14 Jun 2023, 11:22 PM
কর সংস্কৃতিতে স্বচ্ছতা আনতে সম্পদ করের হার না বাড়িয়ে জমির মৌজা রেট বাজারদরের সঙ্গে সমন্বয়ের প্রস্তাব দিয়েছে দেশে ব্যবসারত বিদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ফিকি।
এছাড়া প্রস্তাবিত নতুন আইকর আইনে কার্বোনেটেড পানীয় শিল্পের (বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রি) ন্যূনতম টার্নওভার কর আট গুণের বেশি বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
বুধবার ফরেন ইনভেসটরস চেম্বার অব কমার্স আন্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) নেতারা ঢাকার বনানীতে হোটেল শেরাটনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী নাসের এজাজ বিজয় চলমান সংকটময় পরিস্থিতিতে একক কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর করের চাপ না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। নতুন আয়কর আইন অনুমোদন ও কার্যকরের সময় এ বিষয়টি বিবেচনার কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে জমি রেজিস্ট্রেশনে উৎসে কর ৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ক্রেতা জমির মূল্য কম দেখিয়ে উল্টো আগের চেয়ে কম কর পরিশোধ করবে।
“বর্তমানে ঢাকাসহ সারা দেশের সরকারি মৌজা রেটের চেয়ে অনেক বেশি দাম জমি বিক্রি হয়। কিন্তু কর কম দেওয়ার জন্য তারা জমির দাম কম দেখায়। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।”
বিক্রেতার ওই টাকা শেষ পর্যন্ত ‘কালো’ হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, টাকা পাচার হওয়ার এটি একটি কারণ।
“সরকার যদি এলাকাভিত্তিক যথাযথ দাম নির্ধারণ করে মৌজা রেট করে তাহলে একদিকে সরকার বেশি রাজস্ব পাবে, অন্যদিকে সাধারণ মানুষ স্বচ্ছ থাকতে পারতেন,” যোগ করেন তিনি।
বেভারেজ বা কোমল পানীয় কোম্পানিগুলো সংকটে রয়েছে দাবি করে ফিকি সভাপতি কোমলপানীয়তে ন্যূনতম টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করা হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার শঙ্কা তুলে ধরেন। তিনি এ হার সর্বোচ্চ ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
নতুন আয়কর আইনে প্রণোদনা বোনাস ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের ওপর কর প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, “এটি কোম্পানির ওপর আরও করের বোঝা চাপিয়ে দেবে এবং পরবর্তীতে কর্মচারীদের উপার্জনের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।”
তার মতে, “ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সরকারের শক্তি অনেক বেশি। সংকটময় এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আগলে রাখতে পারলে দেশের ও ব্যবসার পরিবেশের লাভ হবে। সরকারও তুলনামূলক বেশি রাজস্ব পাবে।”
এ বিষয়ে ফিকি একটি গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে, যা শেষ হলে সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
এসময় সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি দীপাল আবেইউক্রেমা, পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রশীদ, ট্যারিফ-ট্যাক্সেশন ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটির কো-অর্ডিনেটর সাজ্জাদ রহিম চৌধুরী এবং ট্যারিফ-ট্যাক্সেশন ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য দেবব্রত রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।