ডিমের বাজারে অস্থিরতা নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ভাষ্য, “কারসাজির একটি নীল নকশা করা হয়েছে।”
Published : 16 Oct 2023, 04:23 PM
ফার্মের ডিমের ঊর্ধমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢাকায় ট্রাকসেলের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত দরে ডিম বিক্রি শুরু করেছে একদল খামারি।
ডিম-মুরগির ব্যবসায় কর্পোরেট আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানানো প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) সোমবার কারওয়ান বাজার টিসিবি ভবনের সামনে থেকে এই বিপণন কাজ শুরু করে।
ধীরে ধীরে ঢাকা শহরের ১৬টি স্থানে এ ধরনের বিপণন কাজ বিস্তৃত করা হবে বলে জানান বিপিএর সভাপতি সুমন হাওলাদার।
সরকার খামার পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫০ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় গত মাসে। কিন্তু দুই মাসেও তা কার্যকর করা যায়নি।
উল্টো গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিটি ডিমের দাম নতুন করে ১ টাকা করে বেড়েছে। খুচরায় এক হালি ডিম ৪৮ টাকা করে বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকায়।
ডিম বিপণন উদ্বোধন করতে এসে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, প্রান্তিক খামারির ৮০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করলেও এ খাত নিয়ন্ত্রণ করে ৫/৬টি করপোরেট কোম্পানি।
“তারা চুক্তিভিত্তিক ফার্মিংয়ের মাধ্যমে সারাদেশের দাম নিয়ন্ত্রণ করে।”
গত বছরও যে এ সময়ে ডিমের বাজার অস্থির হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নেওয়ার পর আমাদের ধারণা হয়েছিল এই বছর হয়ত সবকিছু সিস্টেমে চলে আসবে। কিন্তু এবারও একই ধরনের পরিস্থিতি হচ্ছে।
“কারসাজির একটি নীল নকশা করা হয়েছে। প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় খোলা বাজারে প্রতিটি ডিম সর্বোচ্চ ১২ টাকা এবং খামারে ১০ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছিল। আমারা অভিযান চালিয়ে সেটা সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ টাকায় নামাতে পেরেছিলাম।”
ডিমের দাম কমাতে না পারার কারণ ব্যাখ্যা করে মহাপরিচালক বলেন, খামার পর্যায়ে যেখানে ১০ টাকা ৫০ পয়সা করে ডিম বিক্রি করার কথা, সেখানে ১১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে শুরু করে ১১ টাকা ৫০ পয়সায় খামার থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।
“তারা বেশি উৎপাদন মূল্য দেখিয়ে এমনটি করেছে। অনেক সময় তারা পশুখাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলে থাকে। এখন খুচরা পর্যায়ে ১৩ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। গত ৭ দিন ধরে এই পরিস্থিতি। এর কারণ হচ্ছে খামার পর্যায়ে ১১ টাকা ৯০ পয়সা করে বিক্রি হচ্ছে।
“সে কারণে আজকে খামারিদের পক্ষ থেকে ১২ টাকা করে ডিম বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। আমি তাদের প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথে গ্রহণ করেছি। তারা খুদ্র খামারিদের কাছ থেকে ডিম এনে ঢাকার ১৬টি স্থানে বিক্রি করবে।”
বিশেষ পরিস্থিতিতে বাজার মনিটরিংয়ে ‘ভালো ফল দিচ্ছে না’ মন্তব্য করে মহাপরিচালক বলেন, “এ ধরনের ট্রাক সেলের ভালো প্রভাব রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা ডিমও বিক্রি শুরু হবে ন্যায্যমূল্যে।”
অন্যদের মধ্যে টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।