বিটপী গ্রুপের কর্ণধার প্রবীণ এই ব্যবসায়ী ২০০৮ সালে নৌকা প্রতীকে ময়মনসিংহ ৭ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
Published : 13 Feb 2023, 05:41 PM
সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী রেজা আলী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
সোমবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে বিটপী গ্রুপের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিটপী গ্রুপের কর্ণধার এই প্রবীণ ব্যবসায়ী বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ময়মনসিংহ ৭ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মরহুমের প্রথম জানাজা মঙ্গলবার বাদ জোহর সিঙ্গাপুরের মসজিদ আল-ফালাহ’য় অনুষ্ঠিত হবে।
এরপর বুধবার রেজা আলীর মরদেহ ঢাকায় আনার পর সেদিন বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে দ্বিতীয় এবং বাদ আসর বসুন্ধরার কেন্দ্রীয় মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
পরদিন বৃহস্পতিবার বাদ জোহর ময়মনসিংহের ত্রিশালের নজরুল একাডেমিতে ও বাদ আসর ত্রিশালের ধনিখোলায় নামাজা জানাজা হবে। এরপর ওই দিন বিকালে ত্রিশালে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
মৃত্যুকালে রেজা আলী স্ত্রী, তিন সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
ব্যবসা ও রাজনীতিসহ বহুমুখী কর্মময় জীবনে রেজা আলী সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও যুক্ত ছিলেন।
১৯৬৮ সালে তিনি বিটপী অ্যাডভার্টাইজিং প্রতিষ্ঠান করেন। এ কোম্পানির মায়া বড়ি, রাজা কনডম ও ওরস্যালাইন এর ক্যাস্পেইন সদ্য জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্য খাতে সুদূর প্রসারী প্রভাব রাখে।
এছাড়া বাটা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, কোকাকোলা, রেকিট বেনকিজার, গ্রামীণ ফোনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে সাংস্কৃতিক লোকগাঁথা যুক্ত করার কাজে গভীরভাবে তিনি জড়িত ছিলেন বলে বিটপীর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বাংলাদেশের অ্যাডভার্টাইজিং শিল্পের অগ্রদূতদের একজন রেজা আলী পরে পোশাক শিল্পের সঙ্গেও যুক্ত হন। মিসামি গার্মেন্টস দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়, যেটিকে পরে বিশ্বমানের সবুজ কারখানা হিসেবে গড়ে তোলা হয়।
জাহাজ ভাঙা শিল্পের সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বিটপী গ্রুপ। বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা এই সভাপতি এ খাতের শুরুর দিকে গুরুত্বপর্ণ অবদান রাখেন।
রেজা আলীর জন্ম কুমিল্লায় ১৯৪০ সালের ১০ এপ্রিল। তার বাবা তোফাজ্জল আলী ও মা সারাহ আলীর বড় ছেলে তিনি। টি আলী নামে পরিচিত তার বাবা পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী, মিশরের রাষ্ট্রদূত ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে পড়ালেখা করেন রেজা আলী। ১৯৬০ সালে আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক বছর কারাবাস করেন তিনি।
প্রাদেশিক সম্মেলনে গঠিত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।