“বিভিন্ন সংস্থা, জেলা প্রশাসক যদি আবেদন করে তাহলে ছয় মাসের ভিতরে সব হয়ে যেতে পারে,” বলেন পেটেন্ট ডিজাইন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
Published : 09 Jul 2024, 12:54 AM
বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য বা জিআই সনদ পাওয়ার মত প্রায় পাঁচশ পণ্যের তালিকা করেছে সরকার, যেগুলোর স্বীকৃতির জন্য এখন আবেদন ও যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর জানিয়েছে, জিআই স্বীকৃতির জন্য ইতোমধ্যে শখানেক আবেদন জমা পড়েছে। অন্যগুলোরও আবেদনের প্রক্রিয়া চলছে। সবমিলিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ হবে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ৪৯৬টি পণ্যের তালিকা করেছি। ইতোমধ্যে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে বলা হয়েছে। তারা আবেদন করলেও ছয় মাসের ভেতরে সব হয়ে যেতে পারে।”
পুরনো খবর
সব জিআই পণ্যের তালিকা করার নির্দেশ হাই কোর্টের
টাঙ্গাইল শাড়িকে নিজেদের দাবি করে জিআই পণ্য হিসেবে ভারতের স্বীকৃতির পর ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয় বাংলাদেশে। এর প্রেক্ষাপটে জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনে বাংলাদেশের সব জিআই পণ্যের তালিকা তৈরিতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। এরপরই দ্রুত তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয় পেটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর।
দেশে এক দশকে মাত্র ৩১টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন মাঠ পর্যায় থেকে আবেদনগুলো এলে ছয় মাসের মধ্যে সব প্রক্রিয়া শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক জেলায় কমপক্ষে একটি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্দেশনাও রয়েছে।
পেটেন্ট ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুনিম বলেন, “এ পর্যন্ত ৩১টি পণ্য জিআই বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। আরও চারটি পণ্যের জার্নাল হয়ে গেছে। ১৪টি জার্নাল প্রকাশের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, “এ পর্যন্ত আমাদের কাছে মোট আবেদন এসেছে ৮৭টি। আর আমাদের কাছে এখন পেন্ডিং আছে ২৪টি। কোনো কাগজপত্র কম আছে কিনা সেসব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এসব মিলিয়ে ৭৫টি আবেদন রাখা হয়েছে। আর ১২ টি বাদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো আইনগতভাবে হয়নি।”
গত ২৬ জুন বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এক সংবাদ সম্মেলনে জিআই পণ্য হিসেবে সুন্দরবনের মধু হাতছাড়া হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ তোলে।
পুরনো খবর
জামদানিতে অধিকার এখন স্বীকৃত: মন্ত্রী
সুন্দরবনের মধুর জিআই স্বীকৃতি বিষয়ে পেটেন্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, “আমরা জার্নালে পাঠিয়েছি। আশা করি এই সপ্তাহের ভেতরে এটা জার্নালে প্রকাশ হবে। আসলে আমাদের আবেদনটা আগে করা হয়েছে। সেই হিসেবে জার্নাল প্রকাশের দুই মাস পর কোনো ঝামেলা না থাকলে আমরা ২০১৭ সালের আবেদন হিসেবে বেশি প্রাধান্য পাব।
“ভারতের আগে বিবেচিত হবে আমাদের দাবি। আর এখন জিআই পণ্য হিসেবে আমাদেরটা আমাদের হয়ে যাবে, আর তাদেরটা তাদের হয়ে যাবে।”
স্বীকৃতি পাওয়া জিআই পণ্য
জামদানি শাড়ি, ইলিশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম, বিজয়পুরের সাদা মাটি, দিনাজপুর কাটারিভোগ, বাংলাদেশ কালিজিরা, রংপুরের শতরঞ্জি, রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম, বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি, বাংলাদেশের শীতল পাটি, বগুড়ার দই, শেরপুরের তুলশীমালা ধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেঁজুরের গুড়, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, রাজশাহীর মিষ্টি পান, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, জামালপুরের নকশিকাঁথা, টাঙ্গাইল শাড়ি।
পুরনো খবর
টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব পেতে আবেদন
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ৩ পণ্যের জিআই সনদ প্রধানমন্ত্রীর হাতে
নীতিনির্ধারকদের অবহেলায় সুন্দরবনের মধু ভারতের জিআই পণ্য: সিপিডি