“আমাদের বিষয়টা হচ্ছে যে যখন হয়ে যায়, তখন আমাদের ঘুম ভাঙে।”
Published : 26 Jun 2024, 04:02 PM
নীতিনির্ধারকেরা ‘গুরুত্ব দেননি’ বলেই সুন্দরবনের মধু ভারতের ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)
সম্প্রতি বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার (ডব্লিউআইপিও) এক সম্মেলনে সুন্দরবনের মধুকে ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বুধবার ধানমণ্ডির সিপিডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জিআই পণ্য হিসেবে সুন্দরবনের মধু হাতছাড়া হওয়া প্রসঙ্গে কথা বলছিলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, “সুন্দরবনের মধুর মুখ্য অংশই বাংলাদেশের সীমানায় অবস্থিত বনাঞ্চল থেকে সংগৃহীত হয়। কিন্তু এই পণ্যকে ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যা নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।”
ফাহমিদা খাতুন বলেন, “এর আগে ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল শাড়িকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেছিল। আমরা ২০১৩-১৪ সাল থেকেই এই টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি এগুলোর ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। আমাদের প্রকাশনাও ছিল। তাছাড়া বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে আমরা একটা পথনির্দেশিকা এবং নীতিমালাও তৈরি করেছিলাম।
“কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখেছি যে, নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এ ব্যাপারে তেমন একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর ফলে, তারা টাঙ্গাইল শাড়িকে তারা তাদের নিজস্ব ভৌগলিক পণ্য হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করেছে। এখন আবার সুন্দরবনের মধুকে করেছে।”
সংস্থাটি নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা মনে করেন, বাংলাদশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য যদি জিআইয়ের আওতায় এনে রেজিস্ট্রেশন করা হয়, তাহলে সেসব নিজেদের বলে দাবি করা যাবে না। আমাদের বিষয়টা হচ্ছে যে, যখন হয়ে যায়, তখন আমাদের ঘুম ভাঙে।”
বাংলাদেশ মধুর মূল উৎপাদনকারী হলে, ভারত একক হয় কীভাবে?
সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “সুন্দরবনের মধু ভারতের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। আমরা যদি মূল উৎপাদনকারী হই, তাহলে ভারত কীভাবে একক
“২০১৭ সালের ৭ অগাস্ট বাগেরহাটের ডিসি সুন্দরবনের মধুকে বাংলাদেশের জিআই পণ্য হিসেবে রেজিস্ট্রেশনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো তা রেজিস্ট্রেশন হয়নি। এই দায় আমরা কাকে দেব? অথচ ভারত আমাদের চার বছর পর ২০২১ সালে আবেদন করে তারা জিআই স্বত্ব পেয়ে গেছে।”
মধুর বাজারে আগামীতে প্রতিযোগিতা কঠিন হবে জানিয়ে দেবপ্রিয় আরও বলেন, “জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও বাজারে আমাদের প্রতিযোগিতা করতে কষ্ট হবে। কারণ তাদের বাজার অনেক বড়। তাই, তাদের অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচও অনেক কম হয়।”
স্বীকৃতির জন্য তৈরি করা জিআই পণ্যের তালিকা ‘পূর্ণাঙ্গ নয়’ জানিয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “সার্ভে করে আমাদের পণ্য যেগুলো আছে, সেগুলোকে জিআইয়ের অধীনে আনার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।”
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।