কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দারাজের

“যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে কেবল তাকেই জানিয়ে দেওয়া হবে। ক্যারিয়ার ও অন্যান্য বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হবে না,” বলেন দারাজ বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2024, 05:42 PM
Updated : 27 Feb 2024, 05:42 PM

ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটতে গিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস দারাজ কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

বুধবার ই-কমার্স জায়ান্টটি কর্মীদের উদ্দেশ্যে দেওয়া অভ্যন্তরীণ এক বার্তায় বিষয়টি জানিয়েছে। দারাজ বাংলাদেশের কর্মীদেরকেও তা পাঠানো হয়েছে।

দারাজ গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সিইও জেমস ডং এর পাঠানো ‘মেসেজ ফ্রম দারাজ লিডারশিপ’ শিরোনামের ওই বার্তায় বলা হয়, “প্রিয় দারাজিয়ান। অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে দারাজের ব্যবস্থাপনা দল ও আমি আপনাদেরকে এক কঠিন খবর দিচ্ছি।

“অনেক বিচার বিবেচনার পর আমরা আরও কার্যকর ও সাবলীল একটি কর্মী কাঠামো দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদেরকে দারাজ পরিবারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে বিদায় জানাতে হচ্ছে।“

তবে কতজন ছাঁটাইয়ের মধ্যে পড়বেন এবং কত সময়ের মধ্যে তাদেরকে বাদ দেওয়া হবে তা অভ্যন্তরীণ ওই বার্তায় বলা হয়নি। তবে বাংলাদেশে ছাঁটাইয়ের এ সংখ্যা বড় হতে পারে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। দারাজ বাংলাদেশের কর্মী সংখ্যা সাতশ এর আশপাশে।

বাংলাদেশে দারাজের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ছাঁটাইয়ের বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি। মূল কোম্পানির বার্তাটিই দারাজ বাংলাদেশের বার্তা বলে জানিয়ে দেন তারা।

বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন পণ্যের এই মার্কেটপ্লেস দেশজুড়ে তাদের কার্যক্রমের বিস্তার ঘটিয়েছে। এরমধ্যেই কর্মী কমানো ও ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটার ঘোষণা এল।

দারাজ বাংলাদেশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও পরিষ্কার নই। তবে দারাজ বাংলাদেশের শ্রম আইন মেনে যাকে যেভাবে বিদায় করা যায় সেভাবেই করবে।

“যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে কেবল তাকেই জানিয়ে দেওয়া হবে। ক্যারিয়ার ও অন্যান্য কারণ প্রকাশ্যে আনা হবে না। কত সময়ের মধ্যে কতজনকে বিদায় করা হবে সেটি পরিষ্কার নয়।”

মূল বার্তায় বলা হয়, “গত কয়েক বছর ধরে আমরা ব্যয় কমিয়ে পরিচালন দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। বিকল্প সমাধানের চেষ্টা করেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছিল। বাজারে এই ধরনের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে গিয়ে কোম্পানির টেকসই ভবিষ্যত ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আমাদেরকে ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।“

২০১২ সালে পাকিস্তানে একটি ছোটখাটো অনলাইন ফ্যাশন আউটলেট হিসেবে যাত্রা শুরু করে দারাজ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে তারা ব্যবসা সম্প্রসারণ করে। পরের বছর আরেক অনলাইন মার্কেটপ্লেস কিইমু অধীগ্রহণের মাধ্যমে নেপাল ও শ্রীলংকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ ঘটায় কোম্পানিটি।

২০১৮ সালে চীনের আন্তর্জাতিক ই-কমার্স মার্কেট প্লেস আলিবাবার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর দারাজের সম্প্রসারণ আরও বেড়ে যায়। ধীরে ধীরে দারাজ লাজিস্টিকস ব্যবসার দিকেও এগোয়।

২০২১ সালে কোভিড মহামারীকালে লকডাউন চলার সময়ে বাংলাদেশে তৈরি করা খাবার বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কোম্পানি হাংরিনাকিকেও কিনে নেয় দারাজ।