৫০০০ কোটি টাকা ধার নিচ্ছে ইসলামি ধারার সাত ব্যাংক

কেন্দ্রীয় ব্যাংক তারল্য সহায়তা চাওয়া সব ব্যাংককেই চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2022, 03:11 PM
Updated : 7 Dec 2022, 03:11 PM

বিশেষ তারল্য সহায়তা চালুর পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ধার নেওয়া শুরু করেছে শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো; দুই দিনে সাত ব্যাংক নিয়েছে ৫ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।

বুধবারও এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা নিতে আবেদন করে এসব ব্যাংক, যার পুরোটাই অনুমোদনের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, গত মঙ্গলবার চার হাজার কোটি টাকা চেয়েছিল ব্যাংকগুলো।

গত সোমবার শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকের জন্য ‘ইসলামিক ব্যাংকস লিক্যুডিটি ফ্যাসিলিটি (আইবিএলএফ)’ এর আওতায় সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর জন্য তারল্য সহায়তা দেওয়ার সুযোগ চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওইদিন থেকেই তা কার্যকর বলে জানানো হয়।

এর পরদিন মঙ্গলবার পাঁচটি ব্যাংক ধার চেয়ে আবেদন করে। যেগুলোর পুরোটাই বরাদ্দ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ব্যাংকগুলো নিয়েছিল দুই হাজার কোটি টাকা বলে জানিয়েছেন মেজবাউল হক।

বরাদ্দ অনুমোদনের পর ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনমত ধাপে ধাপে অর্থ নেওয়ার সুযোগ রাখায় বুধবার সন্ধ্যাতেও কয়েকটি ব্যাংক টাকা চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে।

Also Read: ইসলামি ধারার ব্যাংককে ধার দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

মুখপাত্র মেজবাউল বলেন, ‘‘ধার চাওয়ার বিপরীতে মঞ্জুরের অংশটুকু ব্যাংকগুলো তাদের প্রয়োজন মাফিক তুলে নিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে থাকা ব্যাংকের হিসাবের মাধ্যমে।”

এতদিন শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে প্রচলিত ব্যাংকগুলো তারল্যের সুবিধা নিতে পারত রেপো, বিশেষ রেপো ও লিক্যুইডিটি সার্পোট ফ্যাসিলিটিজ সুবিধার (এলএসএফ) আওতায়।

ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর জন্য তারল্য সহায়তা দেওয়ার বা ব্যাংকগুলোর নেওয়ার সুযোগ ছিল না।

আইবিএলএফ এর সুবিধা নিতে পারবে ১০টি পূর্ণাঙ্গ শরীয়াহ ধারার ব্যাংক ও ইসলামিক ব্যাংকিং সুবিধা প্রদানকারী ব্যাংকগুলো। প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামিক ব্যাংকিং শাখা পরিচালনা করছে ৯টি ও ইসলামিক উইন্ডো পরিচালনা করছে ১৪টি ব্যাংক।

ইসলামি ব্যাংকগুলোকে তারল্য সুবিধা দেওয়ার এ ঘোষণা এমন সময়ে আসল, যখন এ ধারার কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির কথা সংবাদ মাধ্যমে আসছে।

আইবিএলএফ এর নীতিমালায় বলা হয়েছে, সপ্তাহের যেকোনো কার্যদিবসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সুবিধা চেয়ে আবেদন করতে পারবে ইসলামি ধারার ব্যাংক। এর মুনাফার হার হবে ব্যাংকগুলোর ৩ মাসের জন্য ‘মুদারাবা মেয়াদী আমানতের’ বিপরীতে ঘোষিত মুনাফা।

এই মুনাফার হার সাময়ীক। বছর শেষে সংশ্লিষ্ঠ ব্যাংকের ঘোষিত চূড়ান্ত মুনাফা অনুযায়ী তারল্য সুবিধার মুনাফা সমন্বয় করা হবে। সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত মুনাফা কম বা বেশি হলে তাও মেনে নিবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তারল্য সুবিধাটি নিতে ‘বাংলাদেশ সরকারের ‘ইসলামিক সুকুক বন্ডের (বিজিআইএস)’ বিনিয়োগকে জামানত হিসেবে রাখতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। কমপক্ষে এক কোটি টাকা নেওয়ার জন্য এই আবেদন করতে পারবে ব্যাংকগুলো।